শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
কাজের অগ্রগতি ২২ শতাংশ

উড়াল সড়ক: প্রথম অংশ চালু হতে আরও এক বছর

প্রায় নয় হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১১ সালে। কিন্তু অর্থ সংকটসহ নানা জটিলতার মাঝে দীর্ঘদিন কাজ আটকে থাকায় আট বছরে নির্মাণের অগ্রগতি মাত্র ২২ শতাংশ।
নতুনধারা
  ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০
ঢাকা উড়াল সড়ক (্‌এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) প্রকল্পের বিমানবন্দর থেকে বনানী আগের কাজ এগুচ্ছে -বিডিনিউজ

যাযাদি রিপোর্ট

আর্থিক সঙ্কট 'কেটে যাওয়ায়' গতি ফিরেছে ঢাকা উড়াল সড়ক (্‌এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) প্রকল্পের কাজে।

এক বছরের মধ্যে বিমানবন্দর থেকে বনানী অংশ চলাচলের জন্য খুলে দিয়ে আড়াই বছরের মধ্যে কুতুবখালী পর্যন্ত পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।

বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার সড়কের জন্য ২৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৩১টির্ যাম্পসহ এই উড়াল সড়কের (্‌এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের) মোট দৈর্ঘ্য হবে ৪৬ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার।

প্রায় নয় হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১১ সালে। কিন্তু অর্থ সঙ্কটসহ নানা জটিলতার মাঝে দীর্ঘদিন কাজ আটকে থাকায় আট বছরে নির্মাণের অগ্রগতি মাত্র ২২ শতাংশ।

অর্থ সঙ্কট কেটে যাওয়ায় এখন দ্রম্নত কাজ চলছে জানিয়ে ঢাকা উড়াল সড়ক (্‌এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) প্রকল্পের পরিচালক এএইচএমএস আক্তার বলেন, বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত প্রকল্পের প্রথম অংশের কাজের ৫০ শতাংশ শেষ হয়েছে।

"আগামী বছরের সেপ্টেম্বর নাগাদ ওই অংশ যান চলাচলের জন্য খুলে দেয়া যাবে। আর ২০২২ সালের মার্চের মধ্যে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আমরা আশা করছি।"

সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, কয়েক দফা সময় বাড়লেও এ প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের ব্যয় আর বাড়বে না।

দীর্ঘ জটিলতা:

ঢাকা উড়াল সড়ক (্‌এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) নির্মাণে ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি ইতাল-থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির চুক্তি করে সেতু বিভাগ। ওই বছর ৩০ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

কিন্তু এরপর ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে জটিলতায় কাজ আটকে থাকে দুই বছর। নকশা পরিবর্তন ও মূল্যস্ফীতির কারণে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় ২০১৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নতুন করে চুক্তি করতে হয়।

চুক্তি সংশোধনের পর ওই বছরই শুরু হয় ভূমি জরিপ। ২০১৪ সালের ৩০ অক্টোবর এবং ২০১৫ সালের ১৬ আগস্ট দুই দফা এ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। নির্মাতা প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় করতে না পারায় নির্মাণ কাজ চলতে থাকে ঢিমেতালে।

প্রকল্প পরিচালক জানান, ইতাল-থাই এ প্রকল্পে দুটি প্রতিষ্ঠানকে অংশীদার হিসেবে নেয়ার পর তাদের অর্থসংকট কেটেছে।

এখন এ প্রকল্পের ৫১ শতাংশের মালিকানা রয়েছে ইতাল থাইয়ের হাতে। চায়না শেনডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কোম্পানি গ্রম্নপ লিমিটেড ৩৫ শতাংশ এবং সিনো হাইড্রোর ১৪ শতাংশ অংশদারিত্ব নিয়েছে। প্রতিষ্ঠান দুটি ইতোমধ্যে টাকা ছাড় করাও শুরু করেছে বলে এএইচএমএস আক্তার জানান।

তিনি বলেন, চায়না শেনডং গত ৩১ জুলাই ১১ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন ডলার এবং সিনো হাইড্রো ৫ দশমিক ১৮ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে। এ মাসে এ দুটি প্রতিষ্ঠান ৪০ মিলিয়ন ডলার এবং আগামী মাসে ৭০ মিলিয়ন অর্থ দেবে। এর সঙ্গে ইতাল-থাইও তাদের অংশ দিচ্ছে।

অগ্রগতি:

প্রকল্প পরিচালক বলেন, প্রথম ধাপের কাজ ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ শেষ করে বনানী পর্যন্ত অংশ যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।

দ্বিতীয় ধাপের প্রকল্প এলাকার জন্য জমি অধিগ্রহণ শেষ। বনানী থেকে মগবাজার পর্যন্ত বিভিন্ন স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার কাজও হয়েছে। নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে তাদের অ্যালাইনমেন্ট বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এ অংশে এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ শুরু হবে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে।

আর তৃতীয় ধাপের জন্য জমি অধিগ্রহণ শেষে আগামী ছয় মাসের মধ্যে জায়গা খালি করে দেয়া হবে। তারপর সেখানে নির্মাণ কাজ শুরু হবে।

প্রকল্প কর্তৃপক্ষ জানায়, এখন পর্যন্ত এক হাজার ৩৩৩টি পাইল, ৩০৭টি পাইল ক্যাপ, ৯৩টি ক্রস-বিম, ৪১৮টি কলামের মধ্যে ২০১টি সম্পূর্ণ ও ১৩১টি আংশিক, ১৮৬টি আই গার্ডার এবং ১৪টি স্প্যান নির্মাণ শেষ হয়েছে।

বিমানবন্দর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, উড়াল সড়কের (্‌এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) ১ থেকে ১৫ নম্বর পিয়ার পর্যন্ত ১৪৭টি গার্ডার বসানো হয়েছে। এই গার্ডারের ওপরেই বসবে যানবাহন চলাচলের মূল কাঠামো ডেক স্স্ন্যাব।

প্রকল্পের পরিচালক এএইচএমএস আক্তার বলেন, "কিছুটা দেরি হয়েছে জমি অধিগ্রহণে, আর কিছুটা অর্থ সংকটে। এখন তারা ২০২২-এর মার্চের মধ্যে পুরো কাজ সম্পন্ন করবে।"

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<65688 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1