শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চিড়িয়াখানায় নজর কাড়ছে দ্রম্নতগতির চিতা

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০
জাতীয় চিড়িয়াখানায় আনা চিতা

জাতীয় চিড়িয়াখানার সি-০৯ খাঁচার সামনে অগুনিত দর্শনার্থী। খাঁচার পাশ থেকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সবাই। কাছে গিয়ে দেখা গেল, ভেতরে রয়েছে একজোড়া চিতা। অনেকে এতদিন ডিসকভারি চ্যানেলে দ্রম্নতগতির চিতা দেখেছেন। সেই চিতা এখন দেখা যাচ্ছে জাতীয় চিড়িয়াখানায়।

১৯৭৪ সালে স্বল্প পরিসরে পথচলা শুরু করে জাতীয় চিড়িয়াখানা। কিন্তু কখনো চিতা আসেনি এই চিড়িয়াখানায়। চলতি বছরের ৩ আগস্ট দ্রম্নতগতির চিতা আনা হয় চিড়িয়াখানায়। এতে নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে চিড়িয়াখানা। দর্শনার্থীরাও আগ্রহ নিয়ে দেখছেন চিতাগুলো।

ঢাকার মধুবাগ থেকে মিরপুর চিড়িয়াখানায় এসেছেন সাহিনুল ইসলাম ও মেরিনা ইসলাম দম্পতি। সঙ্গে নিয়ে এসেছেন চার বছরের শিশু সাফিন ইসলামকে। মূলত সাহিনুল ইসলাম একজন ব্যবসায়ী। যশোর মনিরামপুরে ব্যবসা করেন। মুধবাগে বড় ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে এসে ঢুঁ মেরে গেলেন চিড়িয়াখানায়।

সাহিনুল ইসলাম বলেন, 'চিড়িয়াখানায় একা একা একাধিকবার এসেছি। তবে এবারই প্রথম পরিবার নিয়ে আসলাম। চিড়িয়াখানায় এসে দ্রম্নতগতির চিতা দেখতে পাব ভাবিনি। এটা বাড়তি আনন্দ মনে করতে পারেন। আমার মনে হয় আরও বেশি প্রাণী চিড়িয়াখানায় আনা দরকার।'

চিড়িয়াখানার কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, এবারই প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা হয়েছে দ্রম্নতগতির চিতা। পুরুষ ও নারী চিতা জোড়া রাখা হয়েছে সি-০৯ শেডে। চিতা জোড়া এখন চিড়িয়াখানার প্রধান আকর্ষণ। তাদের বয়স আড়াই বছর। চলতি মাসের ৩ তারিখে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে তাদের কেনা হয়েছে ৬০ লাখ টাকায়। তাদের মাধ্যমে চিতার সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে। তবে চিতা জোড়া এখনো প্রাপ্তবয়স্ক নয়। প্রাপ্তবয়স্ক হতে আরও ৬ মাস সময় লাগবে।

এ প্রসঙ্গে মিরপুর চিড়িয়াখানার ভেটেরিনারি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নাজমুল হুদা বলেন, প্রথমে কয়েক দিন তাপমাত্রায় সমস্যা হচ্ছিল চিতা দুটির। তারা দক্ষিণ আফ্রিকার ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা থেকে বাংলাদেশে ৩২ ডিগ্রি তাপমাত্রায় প্রবেশ করে। তবে ধীরে ধীরে বাংলাদেশের তাপমাত্রা মানিয়ে নিয়েছে তারা। এখন তাদের গরুর মাংসের পাশাপাশি মুরগিও খেতে দেয়া হচ্ছে।

'এর আগে চিড়িয়াখানায় চিতাবাঘ আনা হয়েছিল। চিতাবাঘ সাধারণত ঘণ্টায় ৪৫-৫০ কিলোমিটার গতিতে দৌঁড়াতে পারে। তবে চিতা ৭০-৮০ কিলোমিটার বেগে দৌঁড়াতে পারে। চিতা জোড়া আসায় চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের মধ্যে ভিন্ন আনন্দের মাত্রা যোগ হয়েছে। এটাই বিশ্বে সব থেকে দ্রতগতির প্রাণী।'

চিতা বিড়াল গোষ্ঠীর প্রাণী। এটি দেখতে অনেকটা লেপার্ডের মতো। তবে আকৃতিতে ছোট। দ্রম্নতগতিতে দৌঁড়ানোর সময় এর শরীর ঘুরে যায় না বা নিয়ন্ত্রণ হারায় না লেজের কারণে। দ্রম্নত দৌঁড়াতে পারলেও চিতা খুব বেশিক্ষণ ছুটতে পারে না। সর্বোচ্চ গতিতে এটি প্রায় ৩০ সেকেন্ডের মতো দৌঁড়াতে পারে। এরপর এর শরীর এতটাই গরম এবং ক্লান্ত হয়ে যায় যে, এটিকে কিছুক্ষণ বিশ্রাম করতে হয় আগের অবস্থায় ফিরে আসার জন্য।

চিড়িয়াখানা সূত্র জানায়, এক কোটি ৮১ লাখ টাকা খরচ করে মোট ১১টি নতুন প্রাণী কেনা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চারটি বাঘ, একজোড়া চিতা, দুটি হরিণ গোত্রীয় ইম্পালা এবং তিনটি ক্যাঙ্গারু। এর মধ্যে চারটি বাঘ আনতে খরচ হয়েছে ৮০ লাখ টাকা, একজোড়া চিতা ৬০ লাখ, তিনটি ক্যাঙ্গারু ৩৩ লাখ এবং একজোড়া ইম্পালা আট লাখ টাকা। চিড়িয়াখানার নতুন এই অতিথিদের রাখা হয়েছে নতুন শেডে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<65144 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1