শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
দুর্গন্ধ ও ময়লাযুক্ত লেকের পানি

ক্ষতিকর পলিথিনে ভরে যাচ্ছে গুলশান-বারিধারা লেক

মানুষ পানিতে ময়লা-আবর্জনা ফেলে সুন্দর পরিবেশ নষ্ট করছে। যদি মানুষকে সচেতন করা না যায়, তবে দূষণ হবে পরিবেশ, জরাজীর্ণ হয়ে পড়বে লেক।
নতুনধারা
  ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০
গুলশান-বারিধারা লেকে যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে পলিথিন, চিপসের প্যাকেটসহ নানা আবর্জনা -বাংলা নিউজ

যাযাদি রিপোর্ট

রাজধানীর কূটনৈতিক এলাকা গুলশান-বারিধারা। অভিজাত এ এলাকায় যত্রতত্রই ফেলা হচ্ছে নিষিদ্ধ পলিথিন। এমনকী গুলশান-বারিধারা লেকও পলিথিনমুক্ত নয়। ফলে নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। মৃদু হিমেল বাতাস উপভোগ করতে লেকের পাড়ে ছুটে যান নাগরিকেরা। কিন্তু সেই লেক যদি দূষিত হয় তাহলে মুক্ত বাতাসের বদলে উল্টো শরীরে ঢুকবে বিষ!

নাগরিকরা বলছেন, মূলত সচেতনতার অভাবেই যত্রতত্র পলিথিন ফেলা হচ্ছে। চিপসের প্যাকেট ও পলিথিন ব্যাগসহ এ জাতীয় অপচনশীল দ্রব্য মাটিতে ফেলা হচ্ছে। এতে প্রকৃতিতে পড়ছে এর বিরূপ প্রভাব।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পলিথিন এমন একটি পদার্থ, যা মাটির সঙ্গে মিশতে শত শত বছর সময় লাগে। এটি মাটির অভ্যন্তরে গেলেও ক্ষয় হয় না বা মিশে যায় না। পলিথিনের রাসায়নিক পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর। তাছাড়া এই পলিথিন সু্যয়ারেজ লাইনে আটকে গিয়ে পানির প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়।

সরেজমিনে গুলশান এলাকা দেখা যায়, সড়কের পাশে যত্রতত্র পলিথিন, চিপসের প্যাকেট ও আবর্জনা ফেলা। ডাস্টবিন থাকলেও সেখানে ফেলা হচ্ছে না। রাজধানীর গুলশান-বারিধারা লেকও পলিথিনমুক্ত নয়। অভিজাত এলাকার এ লেকের পানিতে নিয়মিত ফেলা হচ্ছে পলিথিন ও ময়লা-আবর্জনা। পানিতে পলিথিন ও ময়লা ফেলায় নষ্ট হচ্ছে প্রকৃতি।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, লেকের কোথাও কোথাও ময়লার স্তূপে পরিণত হয়েছে লেকের পাড়। ফলে একসময়ের স্বচ্ছ গুলশান লেকের পানি এখন দুর্গন্ধ ও ময়লাযুক্ত।

২০০২ সালের ৮ এপ্রিল পরিবেশ অধিদপ্তর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পলিথিনের সব ধরনের শপিং ব্যাগ উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রি ও বিক্রির জন্য প্রদর্শন, মজুত ও বিতরণ নিষিদ্ধ করে। কিন্তু তারপরও থেমে নেই এ পণ্যের উৎপাদন ও ব্যবহার।

শাহজাদপুর লেকপাড়ের ব্যবসায়ী মো. জিয়াউর রহমান বলেন, মানুষ পানিতে ময়লা-আবর্জনা ফেলে সুন্দর পরিবেশ নষ্ট করছে। যদি মানুষকে সচেতন করা না যায়, তাহলে এলাকার পরিবেশসহ ধ্বংস হবে লেক।

আরেক বাসিন্দা আব্দুল হক বলেন, একটু প্রাণভরে নিশ্বাস নিতে লেকের পাশেই ছুটে যায় মানুষ। কিন্তু সেই লেকেও যত্রতত্র পলিথিন ও ময়লা ফেলায় এখানেও ফ্রেশ বাতাস নেই।

রাজউক (তৎকালীন ডিআইটি) ১৯৬১ সালে 'গুলশান মডেল টাউন প্রকল্প' গ্রহণ করে। একই সময়ে গ্রহণ করে 'বনানী-বারিধারা প্রকল্প'। এ প্রকল্প দুটিতে দুটি লেক রয়েছে। একটি হচ্ছে বনানী মডেল টাউন ও গুলশান মডেল টাউনের মধ্যে, অপরটি গুলশান মডেল টাউন ও বারিধারা মডেল টাউনের মধ্যে এবং লেক দুটির আয়তন ২০০ একর। এর ৬০ শতাংশ হচ্ছে গুলশান-বারিধারা লেক এবং ৪০ শতাংশ হচ্ছে গুলশান-বনানী লেক।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. মঞ্জুর হোসেন বলেন, গুলশান-বারিধারা লেকের দায়িত্ব রাজউকের। এ ছাড়াও গুলশান সোসাইটিও দায়িত্বে রয়েছে। তাই পলিথিন ও ময়লা আবর্জনা ফেলা বন্ধ করাও তাদের দায়িত্ব।

তিনি বলেন, এখন যেহেতু সিটি করপোরেশন ডেঙ্গুর চিরুনি অভিযানে ব্যস্ত রয়েছে তাই আপাতত আমরা লেক নিয়ে ভাবছি না। তারপরও এ অভিযান শেষ হলে আমরা রাজউক ও গুলশান সোসাইটির সঙ্গে বসব। বসে লেক পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে পরিকল্পনা নেয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<64916 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1