কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ধানের দাম অস্বাভাবিকভাবে কম হলেও দ্রম্নত এর সমাধান কঠিন। এ সংকট নিরসনে সীমিত পর্যায়ে চাল রপ্তানির চিন্তাভাবনা করছে সরকার।
তিনি বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে কৃষিখাত। তবে নানা সমস্যা থাকার পরও বাংলাদেশে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হচ্ছে।
শনিবার রাজধানীর আইইডিবি সম্মেলন কক্ষে 'জলবায়ু পরিবর্তন : কৃষি খাতের চ্যালেঞ্জ' শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ইনস্টিটিউট অব ডিপেস্নামা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইইডিবি), কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) এবং বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরামের (বিসিজেএফ) যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।
আইডিইবির সাধারণ সম্পাদক শামসুর রহমানের সভাপতিত্বে ও বিসিজেএফ সভাপতি কাওসার রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পলস্নী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) চেয়ারম্যান ড. খলীকুজ্জমান আহমদ।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, সারাদেশ থেকে চাষিদের নির্বাচন করা কঠিন বলেই সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান বা চাল কেনা সম্ভব হচ্ছে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কৃষি খাতে বিপস্নব হয়েছে। এটা খারাপ দিক না। এটা নিয়ে হতাশারও কিছু নেই। ফ্রান্সের মতো বাংলাদেশেও চাষিরা ড্রাম ভর্তি দুধ রাস্তায় ফেলে দেয়, ট্রাক ভর্তি টমেটো নিয়ে হাইওয়েতে ফেলে দেয়। কৃষি একটা স্পর্শকাতর সেক্টর। আমরা তো সব সময় চাই খাবারের দাম কম থাকুক, চালের দাম কম থাকুক। বাংলাদেশে অধিক ধান উৎপাদন এখন বিড়ম্বনা হয়ে দেখা দিয়েছে। ধান চাষ উদ্বৃত্ত হয়েছে।
ধানের দাম কম হওয়ায় ধান ক্ষেতে আগুন দেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দু-একজন ভাবাবেগ হয়ে ধান ক্ষেতে আগুন দিয়েছে। সারাদেশে ওইভাবে আগুন দিচ্ছে না। আমি মনে করি মানুষ দায়িত্বশীল, তারা নিজের ক্ষেতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলবে, এটা কোনোদিনও হতে পারে না।
তিনি বলেন, আমরা অবশ্যই কৃষিকে আধুনিকীকরণ, বাণিজ্যিকীকরণ ও যান্ত্রিকীকরণ- এ তিনটির মাধ্যমে এখন যে সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে সে সমস্যার সমাধান অবশ্যই করবো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃষকদের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার জন্য করণীয় সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ-খবর রাখছেন ও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
সেমিনারে উৎপাদনশীলতার পাশাপাশি গুদাম বাড়ানো এবং ধানের দাম নিয়ে সংকট সমাধানে স্থায়ী কমিশন গঠনের পরামর্শ দেন ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ। কৃষিকে আধুনিকীকরণ, বাণিজ্যিকীকরণ ও যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে সম্প্রতি দেশব্যাপী ধানের মূল্য হ্রাসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার।