শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ডিম-মাংসের দাম আরও বেড়েছে

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৩ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

রাজধানীর বাজারগুলোতে সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে সব ধরনের মুরগির দাম। সেই সঙ্গে বেড়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। বেড়েছে ডিমের দামও। কয়েক সপ্তাহ ধরে চড়া দামে বিক্রি হওয়া সবজি ও মাছের দাম এখনো চড়াই রয়েছে।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, রামপুরা, শান্তিনগর, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, বয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ থেকে ১৭৫ টাকা, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। সে হিসাবে বয়লার মুরগির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা।

বয়লার মুরগির পাশাপাশি দাম বেড়েছে লাল লেয়ার মুরগি ও পাকিস্তানি কক মুরগির। লাল লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২১০ থেকে ২২০ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে লাল লেয়ার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা।

পাকিস্তানি কক মুরগির দাম অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে কেজি ৩০০ টাকায় পৌঁছে গেছে। এখন বাজারভেদে পাকিস্তানি কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা। এক সপ্তাহে পাকিস্তানি কক মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে প্রায় ৩০ টাকা।

মুরগির দামের পাশাপাশি অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। রাজধানীর কোনো বাজারে এখন গরুর মাংস ৫২০ টাকা কেজি দরের নিচে পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারভেদে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫২০ থেকে ৫৩০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০০ থেকে ৫২০ টাকা কেজি। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি।

মাংসের দামের পাশাপাশি স্বস্তি দিচ্ছে না ডিমের দামও। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম ডজনে বেড়েছে প্রায় ১০ টাকা। গত সপ্তাহে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা ডজন বিক্রি হওয়া ডিমের দাম এখন বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়।

এদিকে দুই সপ্তাহ ধরে চড়া দামে বিক্রি হওয়া সবজির দাম এখনো চড়াই রয়েছে। তবে নতুন আসা সবজির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে। গত সপ্তাহে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম কমে ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পটলের দাম কমে ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বরবটি, পটলের মতো স্বস্তি মিলছে না ঢেঁড়স, কচুর লতি, লাউ, করলা, ফুলকপি, শিম, ধুন্দুলের দামেও। ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কচুর লতি ও করলা। শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা পিস, ধুন্দুল ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, বেগুন ৪০ থেকে ৬০ টাকা কেজি, মুলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি।

চড়া দামের এমন বাজারে গত দুই সপ্তাহের মতো তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যাচ্ছে পেঁপে, পাকা টমেটো, শশা ও গাজর। পেঁপে আগের মতোই ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে, পাকা টমেটো ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, গাজর পাওয়া যাচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি, শসা ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

দাম অপরিবর্তিত থাকার তালিকায় রয়েছে দেশি পেঁয়াজ। বাজারভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ আগের মতোই ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ২০ টাকা।

মাছ বাজারে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের মতো সব থেকে কম দামে বিক্রি হচ্ছে তেলাপিয়া মাছ, দাম ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি। পাঙ্গাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি, রুই ৩৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি, পাবদা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি, টেংরা কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি, বোয়াল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি, চিতল ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

হাজীপাড়া বউবাজারে বাজার করতে আসা ফাতেমা বেগম বলেন, আমাদের মতো গরিব মানুষের জন্য মাংস খাওয়া এখন হারাম হয়ে গেছে। গরুর মাংস খাওয়া অনেক আগেই ছেড়ে দিয়েছি। এখন সপ্তাহে একদিন বয়লার মুরগি খাব তারও উপায় নেই। প্রতি সপ্তাহেই দেখছি বয়লার মুরগি দাম বাড়ছে।

এ গৃহিণী বলেন, শুধু মাংসের নয়, এখন সব ধরনের সবজি ও মাছের দাম খুব বেশি। মাছের যে দাম তাতে নলা মাছ ছাড়া অন্য মাছ আমাদের পক্ষে কেনা সম্ভব না। আর সবজি বলতে এখন আমাদের কাছে আলু ও টমেটো।

মুরগির দাম বাড়ার বিষয়ে রামপুরা বাজারের ব্যবসায়ী রহিম আলী বলেন, প্রতিবছরই এমন সময় মুরগির দাম বাড়ে। তবে এবার অন্যবারের তুলনায় দাম অনেক বেশি বেড়েছে। বাজারে চাহিদার তুলনায় মুরগি সরবরাহ কম থাকায় দামে এমন বাড়ছে। আমাদের ধারণা, শবে বরাতের পর মুরগির দাম কিছুটা কমতে পারে।

গরুর মাংস ব্যবসায়ী সাইদুল বলেন, এখন গরু কিনতে যে খরচ হচ্ছে তাতে সাড়ে ৫০০ টাকার নিচে বিক্রি করলে খুব একটা লাভ হয় না। তার পরও আমরা ৫২০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। এমন অবস্থা অব্যাহত থাকলে কয়দিন পর সাড়ে ৫০০ টাকার নিচে মাংস বিক্রি করা সম্ভব হবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<42198 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1