শান্তিকামী জাতি হলেও আত্মরক্ষা এবং স্বাধীনতা ও সাবের্ভৗমত্ব অক্ষুণœ রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ আপসহীন বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
রোববার বাংলাদেশ নেভাল একাডেমিতে শীতকালীন রাষ্ট্রপতির কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
এদিন মিডশিপম্যান-২০১৬ এবং ডিইও (ডিরেক্ট এন্ট্রি অফিসার) ২০১৮/বি ব্যাচের কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে মো. আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রনীতি সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়।
আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ চাই না। আমরা শান্তিকামী জাতি। আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। কিন্তু আত্মরক্ষাথের্ এবং দেশের স্বাধীনতা ও সাবের্ভৗমত্ব অক্ষুণœ রাখতে আমরা আপসহীন। দেশের সাবের্ভৗমত্ব রক্ষায় নৌবাহিনীর প্রতিটি সদস্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে কখনো পিছপা হবে না।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য একটি যুগোপযোগী নেভাল একাডেমি প্রতিষ্ঠা ছিল বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্ন।
‘জাতির পিতার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা-সংবলিত ‘বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স’ নিমার্ণ করা হয়েছে। ফলে অধিকসংখ্যক দেশি-বিদেশি প্রশিক্ষণাথীের্ক আন্তজাির্তক মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান এবং অপার সম্ভাবনাময় ‘বøু-ইকোনমি’ বা সুনীল অথর্নীতির পূণার্ঙ্গ সুবিধা আহরণের ক্ষেত্রেও সুযোগ সৃষ্টি হবে।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, সমুদ্র অঞ্চলের সাবের্ভৗমত্ব রক্ষার পাশাপাশি ক্রমবধর্মান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে এবং সমুদ্র সম্পদ রক্ষাথের্ একটি দক্ষ ও চৌকস নৌবাহিনীর বিকল্প নেই।
এ লক্ষ্যে জাতির পিতার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতা প্রণীত প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে গৃহীত হয়েছে ‘ফোসের্স গোল ২০৩০’।
এই মহাপরিকল্পনার আলোকে বতর্মান সরকারের উদ্যোগে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে অত্যাধুনিক ফ্রিগেট ও করভেটসহ মোট ২৭টি যুদ্ধজাহাজ সংযোজিত হয়েছে।
‘২০১১ সালে সংযোজিত নেভাল এভিয়েশন, স্পেশাল ওয়ার ফেয়ার ডাইভিং এবং স্যালভেজ কমান্ড বা ‘কমসোয়াডস’ এই বাহিনীর সক্ষমতাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সবোর্পরি ২০১৭ সালে নৌবহরে যুক্ত হওয়া দুটি সাবমেরিন আমাদের প্রিয় নৌবাহিনীকে সত্যিকারের একটি পূণার্ঙ্গ ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।’
তিনি বলেন, নৌবাহিনী শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে দেশের সমুদ্র জলসীমার সাবের্ভৗমত্ব রক্ষার পাশাপাশি আন্তজাির্তক পরিমÐলে নিজেদের ভাবমূতির্ আরও সমুন্নত রাখতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।
এই কুচকাওয়াজের মধ্য দিয়ে নৌবাহিনীর ২০১৬ ব্যাচের ৫৯ জন মিডশিপম্যান এবং ২০১৮ ব্যাচের সাতজনসহ ৬৬ জন নবীন অফিসার কমিশন লাভ করেন।
তাদের মধ্যে চারজন নারী, একজন মালদ্বীপ এবং একজন শ্রীলংকার নাগরিক রয়েছেন।