একুশের আগস্ট গ্রেনেড হামলার মামলার রায়কে ‘ফরমায়েশি’ বলায় বিএনপি মহাসচিব মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে অনেকগুলো প্রশ্ন রেখে তার জবাব চেয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত মামলাটির রায়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যাবজ্জীবন সাজা হওয়ায় তা প্রত্যাখ্যান করে ফখরুল বলেছিলেন, এই রায় সরকারের ‘ফরমায়েশে’ হয়েছে।
একদিন পর বৃহস্পতিবার তার কথার প্রসঙ্গ টেনে কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ১৪ বছর পর রায় হয়েছে। ফখরুল সাহেব যা ইচ্ছে তাই বলছেন। সাংবাদিক বন্ধুরা আপনারাই বলুন, এই রায় কি ফরমায়েশি রায়? বাংলাদেশে বিবেক আছে, এমন একজন মানুষ কি বলবে এই রায় ফরমায়েশি?
‘একটা ভবঘুরে ছেলেকে রাস্তা থেকে ধরে এনে জজ মিয়া নাটক সাজানো হলো। ইতিহাস কি বলে এটা ফরমায়েশি রায়?
‘২৪ জনের প্রাণ চলে গেছে। এটা ফরমায়েশি রায়?’
‘প্রধান টাগের্ট শেখ হাসিনা একটা কানের শ্রবণশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। এটা কি ফরমায়েশি রায়?’
‘মুফতি হান্নান নিজেই বলেছে, তারেক রহমানের নিদের্শ নিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। এটা কি ফরমায়েশি রায়?’ ‘খুনি তাজউদ্দিনকে নিরাপদে বিদেশে পাঠানো হলো। এটা কি ফরমায়েশি রায়?’
‘তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী (খালেদা জিয়া) নিজে, তিনি কি দায় এড়াতে পারেন? এটা কি ফরমায়েশি রায়?’
‘যে গ্রেনেডগুলো অবিস্ফোরিত ছিল, সেগুলো কেন ধ্বংস করা হলো? কে ক্ষমতায় ছিল? এটা কি ফরমায়েশি রায়?’
‘ক্ষমতায় আপনারা, আলামত নষ্ট হলো কেমন করে। হামলাকারীরা প্রকাশ্যে দিবালোকে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেল কেমন করে? বলুন? জবাব দেন’, তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী ফখরুলের উদ্দেশে বলেন কাদের।
এই হামলা নিয়ে তখন বিচারপতি জয়নাল অবেদীনের তদন্ত প্রতিবেদন নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত এবং কয়েকশ আহত হন। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করেই হয়েছিল ওই হামলা।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে ওই হামলার পর তদন্ত ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা চালানো হয়েছিল।
রায়ে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও প্রতিমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদÐ হয়েছে। খালেদার জিয়ার ছেলে তারেকসহ ১৯ জনের হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদÐ।
রায়ে আদালত বলেছে, রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগের ওপর এই হামলা চালানো হয়েছিল।
ওই হামলায় আহত কাদের বলেন, ‘আমি এখনো নামাজের সেজদা দিতে পারি না। অনেকে আছে যারা হুইল চেয়ার ছাড়া চলতে পারে না।’
একুশে আগস্টের খুনি হিসেবে দÐিতদের দলের সঙ্গে কামাল হোসেন ও এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর জোট বঁাধার বিষয়টি তুলে তাদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন করেন কাদের।
‘যারা কথায় কথায় নৈতিকতার কথা বলেন, খুনিদের সঙ্গে জাতীয় ঐক্য করবেন! এই জাতীয় ঐক্যে জনগণ কোনো দিনও বিশ্বাস করবে না, সমথর্ন করবে না।’