শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দোকান খোলা রেখে হতাশ বিক্রেতারা, খরচই উঠছে না

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৪ মে ২০২০, ০০:০০
ক্রেতাশূন্য রাজধানীর একটি বিপণিবিতান -বাংলানিউজ

স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাজধানীতে সীমিত পরিসরে ১০ মে থেকে বিপণিবিতানগুলো খুলেছে। খোলার চতুর্থ দিন অতিবাহিত হলেও বেচাকেনা একেবারে নেই বললেই চলে। চরম ক্রেতা সংকটে প্রতিদিনের দোকান খরচও তুলতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।

বুধবার রাজধানীর মিরপুর-১, ২, ১০, শেওড়াপাড়া ও কাজীপাড়া এলাকা ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।

ব্যবসায়ীরা বলেন, সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে অল্প পরিসরে ১০ মে থেকে মার্কেট খুলেছি। আজ বুধবার চতুর্থ দিন চললেও বেচাকেনা জমে ওঠেনি। মার্কেটে দর্শনার্থী এলেও ক্রেতা নেই বললেই চলে। দিন শেষে বেচাকেনা হতাশ করছে আমাদের। করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা মার্কেটমুখী হচ্ছেন না।

এ ব্যাপারে মিরপুর শেওড়াপাড়ার এক্সপোর্ট কালেকশনের স্বত্বাধিকারী মো. রোমান বলেন, সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আজ চারদিন দোকান খুলছি। বেচাকেনা আমাদের হতাশ করছে।

তিনি বলেন, প্রতি বছর এ সময়ে দোকানের ৮০ শতাংশ কাপড় বিক্রি হয়ে যেত। এবছর দিনে দু-তিন পিস করে কাপড় বিক্রি হচ্ছে। এতে দোকানের খরচও উঠছে না।

'আমাদের ব্যবসাটা ঈদনির্ভর। ঈদে ব্যবসা করে ডাল সিজেনগুলো ভর্তুকি দিই। তবে এ বছর কী করব জানি না

প্রতিদিন সকালেই আউটলেট খুলে বসে আছি। ক্রেতার দেখা নেই। সামনের দিনগুলোতেও বেচাকেনার অবস্থা ভালো হবে না বলে মনে করছেন মিরপুরে তৈরি পোশাক বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান কালারসের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার হিমেল।

তিনি বলেন, আমাদের এখানে অনেক ভালো ভালো কালেকশন রয়েছে। ঈদ টার্গেট করে আগে থেকেই আমরা প্রস্তুতি নিয়ে থাকি। এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। তবে করোনার প্রভাবে সব ভেস্তে গেছে।

তিনি আরও বলেন, এ মুহূর্তে যে দু'চারজন ক্রেতা মার্কেটে আসছেন তারা শুধু বাচ্চাদের পোশাক কিনতে আসছেন। অন্য পোশাক বিক্রি নেই বললেই চলে।

এদিকে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন সাইফুল ইসলাম। তিনি সস্ত্রীক এসেছেন মার্কেটে। তিনি বলেন, আমার একটি মেয়ে। ওর জন্য ঈদের জামা কিনতে এসেছি। এবছর আমাদের জন্য কিছুই কিনব না। শুধু মেয়ের জন্য কিনছি। যত দ্রম্নত সম্ভব কিনে বাড়ি ফিরব।

মার্কেটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যবস্থা থাকলেও নিজে হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিয়ে এসেছেন বলেও তিনি উলেস্নখ করেন।

রাজধানীর প্রতিটি মার্কেটের প্রবেশমুখেই হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা দেখা গেছে। শুধু তাই নয়, প্রত্যেক দোকানিই হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রেখেছেন। কাস্টমার যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিতে উৎসাহিত করছেন বিক্রেতারা।

এছাড়া ক্রেতারা মার্কেটের প্রবেশমুখ থেকেই হাত পরিষ্কার করেই মার্কেটে প্রবেশ করছেন। দোকানগুলোর ভেতরেও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বারবার সতর্ক করছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা জানান, সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আমরা সেটি মেনে চলব এবং ক্রেতা সাধারণকেও সেটি মেনে চলার অনুরোধ জানাব।

এদিকে সরকার অনুমতি দিলেও শপিংমল থেকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকায় বসুন্ধরা সিটি শপিংমল ও যমুনা ফিউচার পার্ক খোলেনি। একই সঙ্গে ঢাকাসহ সারাদেশে প্রায় ৯৫ শতাংশ শপিংমলও বন্ধ রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঈদের বাজার করার জন্য শপিংমলে ভিড় বাড়বে। আর এই ভিড় থেকেই বিপুলসংখ্যক মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে।

গত ৪ মে সরকারের এক নির্দেশনায় বলা হয়, সারাদেশের দোকানপাট, শপিংমলগুলো আগামী ১০ মে থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। এর আগে বিকাল ৫টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা ছিল। পরের নির্দেশনায় একঘণ্টা কমানো হয়।

সেক্ষেত্রে প্রতিটি শপিংমলে প্রবেশের ক্ষেত্রে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহারসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ঘোষিত সতর্কতা প্রয়োগ করতে হবে।

এতে আরও বলা হয়, রমজান ও ঈদুল ফিতর সামনে রেখে সীমিত পরিসরে ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখার স্বার্থে দোকানপাট খোলা রাখা যাবে। তবে ক্রয়-বিক্রয়কালে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্য স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে।

বড় শপিংমলের প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। শপিংমলে আসা যানবাহন অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<99443 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1