বিশ্বব্যাপী ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। এরই মধ্যে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে দুই লাখ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতেও করোনাভাইরাস ছড়াচ্ছে দ্রম্নত। বাংলাদেশেও আক্রান্ত প্রায় ছয় হাজার। করোনা মোকাবিলায় তাই জরুরিভিত্তিতে ১৪শ' কোটি ব্যয়ে ভেন্টিলেটর ও সিসিইউ স্থাপন, আইসোলেশন সেন্টারসহ বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
'কোভিড-১৯ রেসপন্স অ্যান্ড ইমার্জেন্সি অ্যাসিসট্যান্স প্রকল্পে'র আওতায় এসব উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে। জরুরি হওয়ায় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা ছাড়াই প্রকল্পটি অনুমোদন পেতে যাচ্ছে।
প্রকল্পের আওতায় কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সাড়ে তিন হাজার ডাক্তার ও নার্সকে আধুনিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণের তালিকায় আছেন স্টাফরাও। পাশাপাশি প্রয়োজনীয়সংখ্যক ভেন্টিলেটর স্থাপন করা হবে যেসব হাসপাতালে করোনার চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ১৭টি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ১৭টি আইসোলেশন সেন্টার ও ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটসহ ১৯টি ল্যাবরেটরি আপগ্রেড করা হবে।
প্রকল্পের মোট ব্যয় ১ হাজার ৪শ' কোটি টাকা। এর মধ্যে ১০ কোটি ডলার দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। প্রতি ডলার সমান ৮৬ টাকা ধরে বাংলাদেশীয় মুদ্রায় ৮৬০ কোটি টাকা। বাকি অর্থ সরকারি
কোষাগার থেকে দেওয়া হবে। প্রকল্পটি জরুরিভিত্তিতে প্রস্তুত করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ইতোমধ্যেই প্রকল্পের সারসংক্ষেপ বিশেষ ব্যবস্থা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়েছে। বুধবার (২৯ এপ্রিল) পরিকল্পনা কমিশনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকল্পটির ওপর পিইসি (প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি) সভা অনুষ্ঠিত হবে। পিইসি সভার ওপর পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান স্বাক্ষরিত প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রজেক্ট প্রস্তাব) পাঠানো হবে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতির জন্য।
দেশের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতিতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা ছাড়াই প্রকল্পটি অনুমোদন পেতে যাচ্ছে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রকল্পের মাধ্যমে হাসপাতালের জন্য প্রয়োজনীয় পিপিই (পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইকু্যইপমেন্ট), সার্জিক্যাল ব্যাগ, করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য অক্সিজেন দেওয়ার সরঞ্জাম কেনা হবে। জরুরি সহায়তায় সরকার বিভিন্ন সুরক্ষা সামগ্রী কিনতে পারবে। যার মধ্যে রয়েছে বিশেষ সুরক্ষা পোশাক, এন-৯৫ মাস্ক, সুরক্ষা চশমা, অ্যাপ্রোন, থার্মোমিটার, বায়োহ্যাজার্ড (সংক্রামক বর্জ্য ফেলার) ব্যাগ ইত্যাদি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এই তালিকা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তৈরি করেছে। এই ইকু্যইপমেন্ট করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সরকারের প্রচেষ্টাকে আরও শক্তিশালী করবে।
\হ
পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য (সচিব) আবুল কালাম আজাদ এ বিষয়ে বলেন, বিশেষ ব্যবস্থায় জরুরিভিত্তিতে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পটি প্রস্তুত করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বুধবার জরুরি পিইসি সভার পরেই পরিকল্পনামন্ত্রী হয়ে প্রকল্পের ডিপিপি প্রধানমন্ত্রীর অফিসে পাঠানো হবে। হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয়সংখ্যক আইসোলেশন ও ভেন্টিলেটর স্থাপন করা হবে প্রকল্পের আওতায়।