শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সেইসব বাহারি ফুল এখন পশুখাদ্য

ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত হচ্ছে ফুলের ভরা মৌসুম কিন্তু গত ২৪ মার্চ থেকে গদখালী ফুলের বাজার বন্ধ রয়েছে
যাযাদি ডেস্ক
  ০৯ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

যশোরের গদখালী অঞ্চলের চাষিরা ভরা মৌসুমে ফুল বেচতে না পেরে লোকসানের মুখে পড়েছেন। জানিয়েছেন হতাশার কথা।

সারাবিশ্বে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের প্রায় সবকিছু বন্ধ করে সরকার সবাইকে ঘরে থাকতে বলেছে। ফলে অনেক জিনিসের কেনাবেচা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে।

ঝিকরগাছার নন্দী ডুমুরিয়া গ্রামের গোলাম রসুল বলেন, তিনি এ বছর ১০ বিঘা জমিতে গোলাপ, জবা, রজনীগন্ধা, গস্ন্যাডিওলাসের পাশাপাশি জারবেরা চাষ করেছেন।

পরিবহণ ও দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। ফুলের বাজার বসছে না। কেনাবেচা নেই। এদিকে ফুল না কাটলে নতুন করে আর কুঁড়ি আসে না। তাই গোলাপ ফুল কেটে ছাগল-গরু দিয়ে খাওয়াতে হচ্ছে।

প্রতিদিন সূর্য ওঠার আগেই চাষি, পাইকার, মজুরের হাঁকডাকে মুখর হয়ে উঠত যশোর শহর থেকে ২০ কিলোমিটার পশ্চিমে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে ফুলের স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত গদখালী বাজার।

দূর-দূরান্ত থেকে ফুল কিনতে পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা আসতেন। সকাল থেকেই বিভিন্ন রুটের বাসের ছাদে স্তূপ করে সাজানো হতো ফুল। পাঠানো হতো দেশের বিভিন্ন এলাকায়। ঢাকা-চট্টগ্রামের মতো বড় বড় শহরে ট্রাক-পিকআপ ও ভ্যান ভরে ফুল যেত।

হাঁড়িয়া নিমতলা গ্রামের আসলাম হোসেন বলেন, এখন এগুলো শুধুই স্বপ্ন। করোনাভাইরাস ফুল চাষিদের স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছে। আজ তারা দিশেহারা।

ফুলের বাজার ১৫ দিন ধরে ক্রেতাশূন্য। ক্রেতা-বিক্রেতা নেই। ফুল বেচাকেনা বন্ধ। ক্ষেতেই পচে নষ্ট হচ্ছে। চাষিরা বাগান থেকে ফুল কেটে ছাগল-গরু দিয়ে খাওয়াচ্ছে। তাদের চোখে-মুখে বিষণ্নতার ছাপ।

গত ২৪ মার্চ থেকে গদখালী ফুলের বাজার বন্ধ রয়েছে। ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত হচ্ছে ফুলের ভরা মৌসুম।

বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম বলেন, স্বাধীনতা দিবস ও বাংলা বর্ষবরণে ফুল বিক্রি করতে না পারায় এ অঞ্চলের ফুল চাষি ও ব্যবসায়ীদের অন্তত ১০০ কোটি টাকার ক্ষতি হবে। বেচাকেনা বন্ধ থাকায় চাষিরা বাগান থেকে ফুল কেটে তা পশুকে খাওয়াচ্ছেন।

ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ জানান, এ বছর তার উপজেলায় ২৭২ হেক্টর জমিতে গস্ন্যাডিওলাস, ১৬৫ হেক্টর জমিতে রজনীগন্ধা, ১০৫ হেক্টর জমিতে গোলাপ, ৫৫ হেক্টর জমিতে গাঁদা, ২২ হেক্টর জমিতে জারবেরা ও অন্যান্য ফুল চাষ করা হয়েছে প্রায় ৬ হেক্টর জমিতে।

কৃষি কর্মকর্তা বলেন, চাষিরা ফুল বিক্রি করতে পারছেন না। আবার ক্ষেতে ফুল রাখতেও পারছেন না। উভয় সংকটে পড়েছেন তারা।

গদখালী ফুলচাষি কল্যাণ সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক রনি আহম্মদও জানালেন তাদের বিপদের কথা।

তিনি বলেন, হাজারো ফুলচাষি এখন মহাবিপাকে পড়েছেন। তাদের বাগানের গোলাপ, রজনীগন্ধা, গস্ন্যাডিওলাস, জারবেরা ফুল কেটে গরু দিয়ে খাওয়ানো হচ্ছে।

কবে নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে সেই চিন্তায় আমাদের মাথা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই ক্ষতি কোন জায়গায় গিয়ে ঠেকবে সেই ভাবনায় শঙ্কিত আমরা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<95791 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1