শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
২১ মার্চ থেকে লকডাউন এলাকাটি

টোলারবাগে লকডাউন না মানার অভিযোগ

দিন দিন পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলেও নানা অজুহাতে ঘর থেকে বের হচ্ছেন টোলারবাগের মানুষ। যাচ্ছেন বাজার, ব্যাংক ও ওষুধের দোকানে
যাযাদি রিপোর্ট
  ০৯ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

করোনা পরিস্থিতিতে সর্বপ্রথম লকডাউন করা হয় রাজধানীর মিরপুরের টোলারবাগ এলাকাটি। দেশে করোনা সংক্রমণের শুরুর দিকেই এই এলাকায় করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হয়। এরপরই ২১ মার্চ থেকে লকডাউন করা হয় এই এলাকা। কিন্তু বর্তমানে ওই এলাকার মানুষ লকডাউন পরিস্থিতি মানতে চাইছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। নানা অজুহাতে ঘর থেকে বের হচ্ছেন তারা। যাচ্ছেন বাজার, ব্যাংক ও ওষুধের দোকানে। অথচ দিন দিন করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। এরই মাঝে দেশের বিভিন্ন এলাকাসহ রাজধানীর ৫২টি এলাকা লকডাউন করা হয়েছে।

বুধবার সরেজমিন রাজধানীর আনসার ক্যাম্প এলাকার টোলারবাগ এক নম্বর গেটের সামনে গিয়ে দেখা যায়, প্রশাসনের কথা শুনতে চাইছেন না এলাকাবাসী। বেশ কয়েকজনকে ওষুধ ও বাজারের অজুহাতে গেট দিয়ে বেরোতে ও ঢুকতে দেখা যায়। এক বাসিন্দাকে গেট দিয়ে প্রবেশ করতে না দিতে চাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে বাক্‌বিতন্ডায় জড়াতেও দেখা যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টোলারবাগের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, এলাকায় করোনো রোগী পাওয়ার খবরটি আসার পর থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে লকডাউন করা হয়েছিল। মানুষকে ঘরে থাকার জন্য বারবার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু এরপর দীর্ঘদিন চলে যাওয়ায় মানুষ আর ঘরবন্দি থাকতে চাইছে না। কোনো না কোনো অজুহাতে বাইরে বের হচ্ছে তারা।

এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সোলায়মান বলেন, বন্দি হয়ে আছি আজ প্রায় ১০-১৫ দিন। কতক্ষণ বাসায় থাকা যায়। ব্যাংক থেকে টাকা তুলে আনসার ক্যাম্প এলাকায় বাজার করতে গিয়েছিলাম। বাসায় খাওয়ার মতো তেমন কিছুই ছিল না, তাই বের হয়েছি।

মুদি দোকানি আসমা খান বলেন, আমি আমার দোকানের পাইকারি জিনিসপত্র কেনার জন্য বের হয়েছি। আমার দোকান খোলা থাকে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত। করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়ার পর থেকে এলাকার মানুষজন আতঙ্কিত হয়ে আছে। প্রয়োজন ছাড়া তেমন কেউ বাসা থেকে বের হয় না।

এখানকার নিরাপত্তায় নিয়োজিত আনসার সদস্য মো. মিজান বলেন, এলাকার অবস্থা তেমন সুবিধার না। বারবার নিষেধ করার পরও এলাকার বাসিন্দারা কথা শুনছেন না। বাসায় থাকতে চাইছেন না। বেশি নিষেধ করলে ফ্ল্যাট মালিকরা চড়-থাপ্পড় মারতে আসেন। বলেন- প্রয়োজন পড়লে বাইরে যাব না তো কী করব? গেটে রিকশা আটকালেও লোকজন আমাদের ধমক দেয়। মারধর করতে চায়।

এখানে দায়িত্বরত দারুস সালাম থানার সাব-ইন্সপেক্টর মো. আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, যুক্তিযুক্ত কারণ ছাড়া অন্য কাউকে ঢুকতে ও বের হতে দিচ্ছি না। প্রয়োজনে যাতায়াত বন্ধ করে দিচ্ছি। অপরিচিত ও বহিরাগতদের কাউকে প্রবেশ করতে দিচ্ছি না। এলাকার বাড়ি মালিক সমিতির কর্মকর্তাদের বলে রাখা হয়েছে, কেউ যেন একান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বের না হয়। যদি কেউ কথা মানতে না চায়, বাসা থেকে শুধু শুধু বের হয়, যেন সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জানানো হয়। আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

দারুস সালাম সার্কেলের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মিজানুর রহমান বলেন, টোলারবাগ এলাকা থেকে কোনো কিছু বের হবে না এবং কোনো কিছু ঢুকবে না। নির্দেশনার কোনো প্রকার ব্যত্যয় ঘটলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

টোলারবাগ এলাকার বাসিন্দারা লকডাউন মানছেন না, এই অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মানুষ কথা না শুনলে আমাদের কী করার আছে? আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি, সবাইকে বোঝানোর।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<95783 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1