নভেল করোনাভাইরাসের বিরূপ প্রভাব থেকে অর্থনীতি রক্ষায় আগামী বাজেটে কর্পোরেট কর কিস্তিতে পরিশোধ ও কর মওকুফের সুযোগ রাখাসহ একগুচ্ছ সুপারিশ করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)।
২০২০-২১ অর্থবছরের আসন্ন বাজেট সামনে রেখে রোববার লিখিত প্রস্তাবনা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের কাছে পাঠানো হয় বলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির সংলাপ ও যোগাযোগ বিভাগের যুগ্ম পরিচালক অভ্র ভট্টাচার্য্য জানিয়েছেন।
অভ্র বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে 'ডেডলক' থাকায় এবারের বাজেট প্রস্তাবনার সফট কপি ইমেইলে ও হার্ড কপি এনবিআরে পাঠাতে হয়েছে।
তিনি বলেন, বাজেট প্রস্তাবনায় দেশের অর্থনীতিকে করোনাভাইরাসের প্রভাব থেকে বাঁচাতে রপ্তানি ও অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণে উৎপাদিত পণ্যের কর্পোরেট কর আগামী ২০২১ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত কিস্তিতে পরিশোধের সুবিধা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
ওই প্রস্তাবনায় দেখা যায়, বিশেষ করে ৫০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকার মধ্যে যাদের বার্ষিক লেনদেন, সেসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, ?কুটির শিল্প, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তার (এসএমই) কর মওকুফ এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য সুদহারে ছাড় দিয়ে ঋণের ব্যবস্থার সুপারিশ করেছে সিপিডি।
ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি, হাসপাতাল, রোগ নির্ণয় ও প্রতিষেধক তৈরির কোম্পানিকেও চলতি বছরের মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিশেষ কর সুবিধার আওতায় আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, 'যেসব ডাক্তার, নার্স এবং হাসপাতালের স্টাফ করোনা রোগীর চিকিৎসা দিচ্ছেন, তাদের জন্য একটি বিশেষ বোনাস প্যাকেজ অথবা তাদের আয়করে আগামী অর্থবছরে বিশেষ ছাড়ের সুবিধা দিতে পারে।'
এছাড়া করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে বা রোগীর সাহায্যে যারা অর্থ অনুদান বা দান করবেন সেই অর্থও আগামী অর্থবছরে করমুক্ত রাখার সুপারিশ করেছে সিপিডি।
সিপিডির সুপারিশের মধ্যে আরও রয়েছে, আগামী অর্থবছরের বাজেটে করমুক্ত আয় সীমা আড়াই লাখ থেকে সাড়ে তিন লাখে উন্নীত করা; আয়করের প্রথম তিন ধাপ ১০, ১৫ ও ২০ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ কমিয়ে ৫, ১০ ও ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা।
পরবর্তী দুই বাজেটে এই সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব করেছে সিপিডি। তার সঙ্গে এ বছরের আয়কর দেওয়ার সময় ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত (সাধারণত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় থাকে) বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে।
খাদ্য নিরপত্তায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আমদানিনির্ভর খাদ্য যেমন পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও তেল আমদানির শুল্ক কমানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিলেও তাতে উলেস্নখযোগ্য ফল না আসায় চলতি অর্থবছরের বাজেটে এই সুযোগ রাখা বাদ দেওয়ার সপারিশ করেছে সিপিডি। তা না হলে সৎ করদাতারা নিরুৎসাহিত হবে।