বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিক্রি হচ্ছে না দুধ বিপাকে খামারিরা

নতুনধারা
  ০৫ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক

করোনাভাইরাসের কারণে ব্র্যাকের চিলিং সেন্টারগুলো কম পরিমাণে দুধ কিনছে। হোটেল, রেস্তোরাঁ ও হাটগুলো বন্ধ থাকায় দুধ বিক্রি হচ্ছে আগের মতো। ফলে বিপাকে পড়েছেন দিনাজপুরের হিলির খামারিরা। অনেকে বাধ্য হয়ে বাছুরকে দুধ খাওয়াচ্ছেন। আবার কেউ কেউ ছানা করে রাখছেন। এমন অবস্থা চলতে থাকলে খামারগুলো বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা করছেন খামারিরা।

হিলিতে ছোট বড় সবমিলিয়ে ১৫টির মতো দুগ্ধ খামার রয়েছে। এসব খামার থেকে দুধ বিরামপুরে ব্র্যাকের চিলিং সেন্টারে সরবরাহ করা হতো। এছাড়া আশেপাশের হোটেল ও মিষ্টির দোকানগুলোতেও সরবরাহ করা হতো। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে চিলিং সেন্টার দুধ কম কিনছে। হাট-বাজার এবং অন্যান্য যেসব স্থানে দুধ বিক্রি বা সরবরাহ করা হতো সেগুলো বন্ধ রয়েছে।

হিলির ছাতনি চারামাথা মোড়ের খামারি মাহফুজার রহমান বাবু বলেন, 'করোনার কারণে সবকিছু বন্ধ থাকায় আমরা দুধ বিক্রি করতে পারছি না। আমার খামারের অধিকাংশ দুধ ব্র্যাকের চিলিং সেন্টারে দিতাম। কিন্তু তারাও এখন অনেক কম পরিমাণে দুধ নিচ্ছে। হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও মিষ্টির

দোকানগুলোতে বিক্রি করতে পারছি না। আমার খামারে গড়ে প্রতিদিন ২০০-২৫০ লিটারের মতো দুধ বিক্রি করতে পারছি না। কিছু দুধ বাছুরকে খাওয়ানো হচ্ছে। আবার কিছু দুধ ছানা করে রাখা হচ্ছে। কিন্তু কতদিন এভাবে রাখব। প্রতিদিন প্রায় আমার ১২-১৩ হাজার টাকার মতো লোকসান গুনতে হচ্ছে। শুধু দুধ বিক্রি বন্ধ তাও নয়, হাটবাজার বন্ধ থাকায় গরুও বিক্রি করতে পারছি না। এমন অবস্থা চলতে থাকলে খামারের খরচ জোগানো ও শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া মুশকিল হয়ে যাবে। ফলে খামার বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।'

হিলির বিশাপাড়া গ্রামের আরেক খামারি মাহফুজুর রহমান বলেন, 'আমার খামারে চারটি গাভী থেকে গড়ে প্রতিদিন ৮০-৮৫ লিটার দুধ হতো। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে ক্রেতা না থাকায় দুধ বিক্রি করতে না পেরে সেই উৎপাদন খানিকটা কমিয়ে দিয়েছি। বর্তমানে ৪০ লিটারের মতো দুধ বিক্রি করা হচ্ছে। যেসব খাবার দিলে গাভীগুলোর বেশি দুধ দেয় তা কমিয়ে দিয়েছি। এর কারণে লোকসানে পড়তে হচ্ছে। আমরা গ্রামের অনেক মিষ্টি ব্যবসায়ীর কাছে দুধ বিক্রি করতাম। হাটবাজার বন্ধ থাকায় তাও করতে পারছি না। আমরা বিপাকের মধ্যে পড়েছি।'

খামারে কর্মরত শ্রমিক রুপলাল ও বাদল মাড্ডি বলেন, 'আমরা খামারে গাভীগুলোর পরিচর্যা থেকে শুরু করে দুধ বাজারে বিক্রির কাজ করে থাকি। কিন্তু এই ভাইরাসের কারণে দুধ বিক্রি হচ্ছে না। ফলে মহাজন আমাদের মজুরি দিতে পারছেন না। এতে করে আমরা বেশ বিপাকের মধ্যে পড়েছি। কতদিন এমন অবস্থা চলবে বুঝতেও পারছি না।'

ব্র্যাকের চিলিং সেন্টারের ল্যাব টেকনিশিয়ান চন্দ্রন রায় বলেন, 'করোনাভাইরাসের কারণে মার্কেটে দুধের বিক্রি অনেকটা কমে গেছে। যার কারণে আমরা খামারিদের কাছ থেকে দুধ কেনা কমিয়ে দিয়েছি। আগে আমাদের এই চিলিং সেন্টারে ৯০০ লিটারের মতো দুধ সংগ্রহ করতাম। এখন সেখানে ৫০০-৬০০ লিটারের মতো দুধ কালেকশন করছি। ফলে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ অবস্থায় আমরা তাদের অন্যত্র দুধ বিক্রির এবং বাছুরগুলোকে কিছু দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছি।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<95324 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1