শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

করোনার উপসর্গ নিয়ে ফোন করে লাপাত্তা

তানভীর হাসান
  ০৩ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০

করোনার উপসর্গ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং রোগতত্ত্ব বিভাগে ফোনকারীরা লাপাত্তা। তাদের সন্ধানে ফোনে দেয়া ঠিকানায় গিয়ে খুঁজে পাচ্ছে না অধিদপ্তরের কর্মীরা। ফোনকলে বেশিরভাগই ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করেছেন। আবার অনেকে নম্বর বন্ধ রেখেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ভয়ে তারা আত্মগোপন করেছেন। এমন পরিস্থিতিতে তাদের সন্ধানে পুলিশ মাঠে নামছে বলে জানা গেছে।

সূত্র মতে, জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন পথে ছয় লাখ ৬৫ হাজার ৯৫৪ জন দেশে প্রবেশ করেছেন। স্বস্থ্য অধিদপ্তর ও আইইডিসিআর'র হট নম্বরগুলোতে ফোন কল করেছেন ৯ লাখ ৫২ হাজার ৫৭৮ জন। এর মধ্যে আইইডিসিআর-এ ফোন করছে ৭৭ হাজার ১৬৯ জন। অথচ এ পর্যন্ত পরীক্ষা করা হয়েছে মাত্র এক হাজার ৭৬ জনের। বাকি সদস্যদের পরীক্ষার জন্য টেলিফোনে দেয়া ঠিকানা ও ফোন নম্বর ধরে বাড়ি বাড়ি গিয়েও তাদের অধিকাংশের খোঁজ পাচ্ছে না স্বাস্থকর্মীরা। বাধ্য হয়ে তারা এখন পুলিশের শরণাপন্ন হয়েছেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, সরকার সক্ষমতা অনুযায়ী দেশে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। এ ক্ষেত্রে জনসাধারণের সহযোগিতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পালিয়ে গেলে বা আত্মগোপনে থাকলে রোগী শনাক্ত করা যাবে না। সবার সমন্বিত প্রচেষ্টা ছাড়া এই মহামারির প্রতিরোধ অসম্ভব হয়ে পড়বে।

জানা গেছে, করোনাভাইরাস পরীক্ষা করতে সারাদেশে ২৯টি পিসিআর ল্যাব স্থাপন করা হচ্ছে। আগামী ১৫ এপ্রিলের মধ্যে সব কাজ শুরু হবে। তবে ঢাকা ও চট্টগ্রামে তিন ল্যাবে পরীক্ষা চলছে। প্রস্তুত রয়েছে আরও সাতটি ল্যাব।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ল্যাব বাড়ানোর পাশাপাশি দেশের সর্বস্তরের হাসপাতালগুলো ইতোমধ্যে তিন লাখ ২৫ হাজার পার্সোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট (পিপিই) পাঠানো হয়েছে। রাজধানীতে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের পাশাপাশি কুর্মিটোলা হাসপাতালকে সম্পূর্ণরূপে করোনা চিকিৎসায় প্রস্তুত করা হয়েছে। এ পর্যন্ত অনলাইনে ৯ হাজার ৬৯৫ জন চিকিৎসককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রত্যেকটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং জেলা হাসপাতালে করোনা ইউনিট করা হয়েছে। কুয়েত-মৈত্রী হাসপাতাল ও শেখ রাসেল ইন্সটিটিউট অব ডাইজেস্টিভ হাসপাতালে মোট ২৪টি ভেন্টিলেশন মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে আইসিইউ শয্যা।

৩৯তম বিসিএসে নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের মধ্য থেকে ১০ জন করে প্রতি জেলায় নিযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া সন্দেহজনক করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহে ৮০০ মাঠকর্মীকে কাজে লাগাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ গত সোমবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, এতদিন দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তকরণে যথেষ্ট পরীক্ষা করা সম্ভব হয়নি। তাই ল্যাবের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। এখন সন্দেহজনক রোগীদের যথাস্থানে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকের ফোনে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না, এমনকি বাড়িতে গিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, আগামী ৫ এপ্রিলের মধ্যে সব বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা শুরু হবে এবং আগামী ১৫ এপ্রিলের মধ্যে সারাদেশে ২৯টি পিসিআর ল্যাব পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত থাকব। ল্যাবের পাশাপাশি আমরা কর্মী সক্ষমতা বাড়িয়েছি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত সার্ভিলেন্স মেডিকেল অফিসাররা (এসএমও) সন্দেহজনক কেস শনাক্ত করে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেবেন। ২৯তম বিসিএসে নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের মধ্য থেকে ১০ জন করে ডাক্তার প্রতি জেলায় পদায়ন চলছে। যারা রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি এবং কন্ট্রাক ট্রেসিংয়ে কাজ করবেন। এ ছাড়া স্যাম্পল কালেকশনের জন্য ইপিআই কর্মী যুক্ত করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<95097 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1