বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ডিমের ডজন ৮০ টাকা ত্রিশে নেমেছে পেঁয়াজ

যাযাদি রিপোর্ট
  ০২ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০
বাজার দর

করোনাভাইরাস আতঙ্কে হঠাৎ অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পর রাজধানীর বাজারগুলোতে ধারাবাহিকভাবে কমছে পেঁয়াজ ও ডিমের দাম। বিভিন্ন বাজারে দেশি পেঁয়াজের কেজি ৩০ টাকা পর্যন্ত নেমেছে। আর ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। বুধবার রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া ও খিলগাঁও অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম কমার পাশাপাশি কমেছে বিক্রির পরিমাণ। করোনাভাইরাস আতঙ্কে আগেই ক্রেতারা বাড়তি দামে অধিক পরিমাণে কিনে রাখায়, এখন দাম কমলেও সেভাবে ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং মৃতু্যর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বিশ্বে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে আট লাখেরও বেশি মানুষ এই মহামারিতে আক্রান্ত হয়েছেন। আর মৃতু্য হয়েছে ৪২ হাজারেরও বেশি মানুষের।

বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায় গত ৮ মার্চ। এরপরই মানুষের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। নিত্যপণ্য কিনে মজুদ করতে থাকেন আতঙ্কিতরা।

এই সুযোগে করোনাভাইরাসের আতঙ্ককে পুঁজি করে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ৪০ টাকার পেঁয়াজের কেজি বাড়িয়ে ৮০ টাকায় নিয়ে যায়। আর ৯০ টাকা ডজনের ডিমের দাম এক লাফে হয়ে যায় ১২০ টাকা।

দাম বাড়ার এই লাগাম টেনে ধরতে মাঠে নামে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর এবংর্ যাব। জরিমানা করা হয় একাধিক ব্যবসায়ীকে। ফলে পেঁয়াজের বাড়তি দামের লাগাম কিছুটা হলেও টেনে ধরা সম্ভব হয়। অবশ্য করোনা অতঙ্কে বাড়তি কেনাকাটার পর কয়েকদিন ধরেই বাজারে ক্রেতার সংকট দেখা দিয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে দামেও। ফলে ধারাবাহিকভাবে কমেছে পেঁয়াজ ও ডিমের দাম।

এতে ৮০ টাকায় উঠে যাওয়া পেঁয়াজ এখন বিভিন্ন বাজারে ৩০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে। অবশ্য কেউ কেউ ৪০ টাকায় বিক্রি করছেন। আর ১২০ টাকা উঠে যাওয়া ডিমের ডজন নেমে এসেছে ৮০ টাকায়। তবে কোনো কোনো ব্যবসায়ী ৯০ টাকা ডজন বিক্রি করছেন।

ডিমের দামের বিষয়ে হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মো. সাবু বলেন, কিছুদিন আগে যে ডিমের ডজন ১২০ টাকা বিক্রি করেছি, এখন তা ৮০ টাকায় বিক্রি করছি। সরকার ছুটি ঘোষণা করার পর থেকেই ডিমের দাম কমছে। ১২০ টাকা থেকে প্রথমে ১০০ টাকা, এরপর ৯০ টাকা আর এখন ৮০ টাকায় নেমেছে।

এই ব্যবসায়ী বলেন, ডজনে ডিমের দাম ৪০ টাকা কমলেও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। স্বাভাবিক সময় দিনে যে ডিম বিক্রি হয়েছে, এখন তার দশ ভাগের একভাগও বিক্রি হচ্ছে না। ছুটির কারণে ঢাকার বেশিরভাগ মানুষ গ্রামে চলে গেছেন। যারা ঢাকায় আছেন, তারা করোনাভাইরাস আতঙ্কে ঘর থেকে কম বের হচ্ছেন। অবার অনেকে আগেই ডিম কিনে রেখেছেন। এসব কারণেই মনে হয় ক্রেতা কম।

পেঁয়াজের দামের বিষয়ে হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী মিলন বলেন, পেঁয়াজের দাম কমেই যাচ্ছে। কয়েকদিন আগে ৪০ টাকার পেঁয়াজ এক লাফে কেজি ৮০ টাকা হয়েছিল। তখন অনেক পেঁয়াজ বিক্রি করেছি। কিন্তু এরপর দফায় দফায় দাম কমলেও বিক্রি তেমন একটা হচ্ছে না। এখন ৩০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি করছি। এরপরও আগে যা বিক্রি করেছি, তার দশ ভাগের এক ভাগও বিক্রি হচ্ছে না।

এই ব্যবসায়ীর তথ্য অনুযায়ী, ৪০ টাকা থেকে পেঁয়াজের কেজি ৮০ টাকায় ওঠার পর কয়েক দফা দাম কমেছে। ৮০ টাকা থেকে প্রথমে ৭০ টাকা, এরপর ৬০, ৫০, ৪০ টাকা থেকে এখন ৩০ টাকায় নেমেছে।

হাজীপাড়ায় পেঁয়াজের কেজি ৩০ টাকায় বিক্রি হলেও খিলগাঁওয়ে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫ টাকা। পেঁয়াজের দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী ফরিদ বলেন, গত শুক্রবারও এক কেজি পেঁয়াজ ৪৫ টাকা বিক্রি করেছি। এখন তা ৪০ টাকা হয়েছে। তবে সামনে পেঁয়াজের দাম আর কমবে বলে মনে হয় না।

দামে পার্থক্য থাকলেও হাজীপাড়ার ব্যবসায়ীদের মতো এই ব্যবসায়ীও বলেন, পেঁয়াজের দাম কমে অর্ধেকে নামলেও আগের মতো ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। আগে যেখান দিনে ৫০ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে, এখন তা ৫-১০ কেজিতে নেমেছে।

ডিমের দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী খালেদ বলেন, দাম কমার পরও এখন মানুষ ডিম কিনছে না। করোনার ভয়ে মানুষ তো ঘর থেই বের হতে চাচ্ছে না। তবে আমাদের ধারণা ছুটি শেষে গ্রাম থেকে মানুষ ঢাকায় ফিরলে ডিমের দাম আবার বাড়বে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<94995 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1