বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রমা চৌধুরী আইসিইউতে

যাযাদি ডেস্ক
  ২৭ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে একাত্তরের বীরাঙ্গনা রমা চৌধুরী Ñযাযাদি

রক্তচাপ এই বাড়ছে, এই কমছে। শরীরের অনেক অংশ গেছে ফুলে। রয়েছে রক্তশূন্যতা। একাত্তরের বীরাঙ্গনা রমা চৌধুরীর অবস্থা এখন এমনই। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তিনি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) রয়েছেন নিবিড় পরিচযার্য়।

অবস্থার অবনতি হলে শনিবার সকালে রমা চৌধুরীকে চিকিৎসকেরা স্থানান্তর করেন আইসিইউতে।

২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর পড়ে গিয়ে কোমরে ফ্রাকচার হয় রমা চৌধুরীর। পরে ওই দিনই তাকে মেডিকেল সেন্টারে ভতির্ করা হয়। সেই থেকে একটানা অসুস্থ ছিলেন তিনি।

পরে গত ১৭ জানুয়ারি তাকে ভতির্ করা হয় চমেক হাসপাতালে। শারীরিক অবস্থার উন্নতি দেখে চিকিৎসকরা ছাড়পত্র দিলে গত ২৫ মাচর্ তাকে নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়ি বোয়ালখালীতে। কিছুদিন ভালো থাকার পর আবারও তার রক্তবমি হলে ফের ভতির্ করা হয় চমেক হাসপাতালে। সেই থেকে তিনি চতুথর্ তলার মুক্তিযোদ্ধা কেবিনে ছিলেন।

রোববার সকাল সাড়ে আটটায় চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে দেখা যায়, রমা চৌধুরীকে চিকিৎসকরা নিবিড় পরিচযার্য় রেখেছেন। কয়েকজন চিকিৎসক জানান, রমা চৌধুরীর রক্তচাপ উঠানামা করছে। শরীরের অনেকাংশে ফুলে গেছে। রক্তশূন্যতার পাশাপাশি ডায়াবেটিস সমস্যাও দেখা দিয়েছে।

সাহিত্যিক রমা চৌধুরীর বইয়ের প্রকাশক ও তার দেখাশোনায় নিয়োজিত আলাউদ্দিন খোকন বলেন, চিকিৎসকরা এখনো বসেননি। তবে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়েছেন। সেগুলোর রিপোটর্ পেলে আজ-কালকের মধ্যে চিকিৎসকরা তার শারীরিক অবস্থা জানতে পারবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আইসিইউতে নেয়ার আগেও রমা চৌধুরী কথা বলেছেন। তখন তিনি বাসায় ফিরে যাওয়ার ইচ্ছে পোষণ করেছিলেন।

ষাটের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী রমা চৌধুরীকে নিয়ে ২০১২ সালের ১৫ ডিসেম্বর সংবাদমাধ্যমে ‘যাদের ত্যাগে স্বাধীনতা: একাত্তরে সব হারিয়ে এখন বইয়ের ফেরিওয়ালা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর রমা চৌধুরীকে গণভবনে ডেকে নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি রমা চৌধুরীকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি দেখা করে রমা চৌধুরীর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করতে বলেন। পরে চিকিৎসকরা বোডর্ গঠন করে তার চিকিৎসা চালান।

পাশাপাশি রমা চৌধুরীর সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের থাকার জন্য হাসপাতালের ২৯ নম্বর ওয়াডের্র ১৮ নম্বর কেবিনটি বরাদ্দ করা হয়।

১৯৪১ সালে বোয়ালখালীর পোপাদিয়া গ্রামে রমা চৌধুরীর জন্ম। একাত্তরের ১৩ মে ভোরে নিজবাড়িতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দোসরদের হাতে নিযার্তনের শিকার হয়েছিলেন রমা চৌধুরী।

সম্ভ্রম হারানো রমা চৌধুরী সংগ্রাম করে জীবন কাটিয়েছেন বীর দপের্। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে হারিয়েছেন তিন ছেলে। সন্তান হারানোর তীব্র যন্ত্রণা আর সীমাহীন দারিদ্র্যকে সঙ্গী করে কেটেছে তার সংগ্রামী জীবন। দীঘর্ ১৬ বছর তিনি বিভিন্ন উচ্চবিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালন শেষে লেখালেখিকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন তিনি। প্রবন্ধ, উপন্যাস ও কবিতা মিলিয়ে এ পযর্ন্ত তিনি ১৯টি গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<9244 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1