বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

১০-১৫ টাকার সবজি এখন ৩০-৪০ টাকা

যাযাদি রিপোর্ট
  ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০
আপডেট  : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১১:১২
রাজধানীর রায় সাহেব বাজারে একটি দোকানে সাজানো নানা রকমের সবজি। ছবিটি শুক্রবার তোলা -ফোকাস বাংলা

শীতের প্রধান সবজি ফুলকপি-বাঁধাকপি আর শিম। শীতকালীন এই সবজিগুলো দিয়ে কাঁচাবাজার ভরপুর থাকে। দাম চলে আসে একেবারে হাতের নাগালে। দাম এতটাই কমে আসে যে মানুষ নিজেরা খাবার পাশাপাশি গরু-ছাগলকেও কেউ কেউ সেই খাবারগুলো খেতে দেয়। কারণ দাম থাকে একেবারে স্বাভাবিক। কিন্তু এ বছর দাম কমেনি এই শীতকালীন সবজিগুলোর। শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, আগারগাঁও, তালতলা, কল্যাণপুর ও কারওয়ান বাজার ঘুরে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। রাজধানীর কল্যাণপুর কাঁচাবাজারে প্রতি পিস ফুলকপি-বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। আর প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। অথচ প্রতিবছর এই সময় সিম বিক্রি ২০ থেকে ২৫ টাকায়। আর ফুলকপি-বাঁধাকপি পাওয়া যেত ১০ থেকে ১৫ টাকায়। বাজারে কথা হচ্ছিল বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিজীবী আবুল হাসানের সাথে। তিনি বলেন, শীত আসলেও এবার তেমন একটা কমেনি সব সবজির দাম। তিনি একটু দুঃখের সাথে গ্রামে থাকা তার মায়ের সাথে কথা বলার স্মৃতিচারণ করে বলেন, মাকে ফোন করে জিজ্ঞেস করলাম কি রান্না করেছ। মা বললেন, এ বছর আজকেই প্রথম বাঁধাকপি রান্না করলাম। তিনি উলেস্নখ করলেন, তার মা একটি ছোট সাইজের বাঁধাকপি গ্রামে ২৫ টাকা দিয়ে কিনেছেন। তার মা তাকে জানান, প্রতিবছর গ্রামে শীতকালীন সময়ে ফুলকপি-বাঁধাকপি দাম এতটাই কমে আসে যে ৫ থেকে ১০ টাকায় পাওয়া যায়। তাই কমদামে পাওয়ায় নিজেরা খাওয়ার পাশাপাশি বাঁধাকপি ও ফুলকপির কিছু অংশ গরু-ছাগলকেও কেউ খেতে দেওয়া হয়। কিন্তু এবার নিজেরাই খেতে পারছি না। এদিকে বাজারে প্রতিটি তরতাজা দেশি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। এছাড়া গাজর ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। নতুন আলু ২০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, শালগম ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা পেঁপে ৩০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা ও সিমের বিচি ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে অন্যান্য পণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকলেও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। আগে প্রতি কেজি চীনা পেঁয়াজ ৭০ টাকা এবং পাকিস্তান ও মিয়ানমারের পেঁয়াজ ১০০ টাকা ছিল। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়ে চীনা পেঁয়াজ ১০০ টাকা ও আমদানি করা অন্য পেঁয়াজ ১১০ টাকা হয়েছে। দেশি পেঁয়াজ মানভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে আদা ও রসুনের দাম যেমন ঊর্ধ্বগতি ছিল তা এখনো কমেনি। চায়না থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি রসুনের দাম ১৯০ টাকা, দেশি রসুন ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চায়না থকে আমদানিকৃত প্রতি কেজি আদা ১৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। তবে চায়নার আদা-রসুনের দাম বাড়তি রয়েছে। দেশি রসুন বাজারে আসতে শুরু করেছে। এতে রসুনের দাম কিছুটা কমতে পারে। বাজার করতে আসা আকবর আলী বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তি রাখতে ব্যবসায়ীদের অজুহাতের কমতি নেই। প্রতিদিন হু হু করে বাড়িয়ে তোলা হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার। এতে লাভবান হচ্ছে একশ্রেণির ব্যবসায়ীরা, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষজন। মাংসের বাজারে দেখা যায়, গত সপ্তাহের মতো মাংসের দাম একই রকম রয়েছে, বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৫০ টাকা, খাসির মাংস ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১২০ টাকা, কক মুরগি ১৮০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগি ২১০ টাকা, দেশি মুরগি ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি তেলাপিয়া মাছ ১৮০ টাকা, কৈ মাছ ২০০ টাকা, শিং মাছ ৫০০ টাকা, টেংরা মাছ ৬০০ টাকা, সরপুঁটি ২০০ টাকা, রুই মাছ ২৫০ টাকা, ছোট মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা মাছ ৫০০ টাকা, পাঙ্গাশ মাছ ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে