১৯৮৭ সালে রাঙ্গুনিয়ায় আব্দুস সাত্তার তালুকদারকে দিনেদুপুরে জবাই করে হত্যা করেন আইয়ুব বাহিনীর প্রধান মো. আইয়ুব। পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিতে ৩২ বছর ধরে চেষ্টা করে আসছিলেন নিহত আব্দুস সাত্তার তালুকদারের দুই ছেলে মহসিন এবং হাছান। ২০১৯ সালে এসে ভাড়াটে খুনি দিয়ে গুলি করে খুন করান পিতার হত্যাকারী আইয়ুব বাহিনীর প্রধান মো. আইয়ুবকে।
আইয়ুব হত্যার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের পর তাদের দেওয়া আদালতে স্বীকারোক্তিতে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
গ্রেপ্তার পাঁচজন হলো- আব্দুল আজিজ প্রকাশ মানিক (২৪), মো. আজিম (২৪), আব্দুল জলিল (২৯), মো. রুবেল (২৮) ও মো. মহিন উদ্দিন (২৭)। ১৫ ফেব্রম্নয়ারি থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রামের রাউজান, রাঙ্গুনিয়া ও রাঙ্গামাটির রাজস্থলী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ বু্যরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম জেলার টিম।
গ্রেপ্তার পাঁচজন সোমবার (১৭ ফেব্রম্নয়ারি) সন্ধ্যায় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শহিদুলস্নাহ কায়সারের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন বলে জানান পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম।
মো. রেজাউল করিম জানান, গ্রেপ্তার পাঁচজন হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল বলে স্বীকার করেছে। তারা ভাড়াটে খুনি হিসেবে কাজ করেছে। মহসিন এবং হাছান নামে দুইজন তাদেরকে ভাড়া করেছিলেন আইয়ুবকে হত্যা করার জন্য।
তিনি জানান, ১৯৮৭ সালে রাঙ্গুনিয়ায় আব্দুস সাত্তার তালুকদারকে দিনেদুপুরে জবাই করে হত্যা করেন আইয়ুব বাহিনীর প্রধান মো. আইয়ুব। আব্দুস সাত্তার তালুকদারের ছেলে মহসিন এবং হাছান। তারা দীর্ঘদিন ধরে পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিতে অপেক্ষায় ছিলেন।
মো. রেজাউল করিম বলেন, আইয়ুব হত্যার সঙ্গে জড়িত আরও কয়েকজন পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
গত বছরের ৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় রাঙ্গুনিয়ায় গুলি করে হত্যা করা হয় আইয়ুব বাহিনীর প্রধান মো. আইয়ুবকে। পরে আইয়ুবের স্ত্রী রাঙ্গুনিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। রাঙ্গুনিয়া থানা পুলিশ সাড়ে তিন মাস তদন্ত শেষেও এ হত্যার রহস্য উদঘাটন করতে না পারায় আদালত মামলাটির তদন্ত পিবিআইকে করার আদেশ দেন।
রাঙ্গুনিয়ার আইয়ুব বাহিনীর প্রধান মো. আইয়ুবের বিরুদ্ধে এক ডজনের উপর হত্যা মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। এসব হত্যাকান্ডের মধ্যে রয়েছে ১৯৮৫ সালে সাবেক মেজর ওয়াদুদকে হত্যা, ১৯৮৬ সালে মেহেরুজ্জামানকে হত্যা, ১৯৯১ সালে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহানকে হত্যা, একই সালে গফুরকে হত্যা, ১৯৯২ সালে নুরুল ইসলাম হত্যা। ১৯৯১ সালে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহান হত্যাকান্ডে আদালতে সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার সময় আব্দুস সোবহানের দুই ছেলে কবির ও সবুরকে পথে আটক করে খেজুর কাঁটা দিয়ে তাদের চোখ উপড়ে ফেলেন আইয়ুব।