শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মাটির নিচে পাইপলাইন স্থাপনে ভূমি ব্যবহার স্বত্ব আইন করছে সরকার

নতুনধারা
  ২৯ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট

মাটির নিচে পাইপলাইন স্থাপন বা অন্য কোনো অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে ভূমি ব্যবহারস্বত্ব আইন প্রণয়ন করছে সরকার। 'ভূমির ব্যবহারস্বত্ব গ্রহণ আইন-২০২০' এর খসড়া প্রণয়ন করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়।

মালিকানা বা দখল বজায় রেখে ক্ষতিপূরণের বিনিময়ে প্রত্যাশী ব্যক্তি বা সংস্থার অনুকূলে কোনো ভূমি ব্যবহারের অধিকার দেয়া এবং মালিক বা দখলদারের নির্দিষ্ট কিছু অধিকার রহিত করাই হচ্ছে ব্যবহারস্বত্ব গ্রহণ।

ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, গ্যাস, পেট্রল, বিদু্যৎ, পানি, অপটিক্যাল ফাইবার ইত্যাদির শক্তি সঞ্চালন ও বিতরণ এবং অন্যান্য ইউটিলিটি সার্ভিসের জন্য ব্যবহৃত ভূগর্ভস্থ পাইপলাইন স্থাপন, সঞ্চালন বা মাটির নিচে অন্য কোনো অবকাঠামো

নির্মাণের উদ্দেশে ভূমি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ভূমির ব্যবহারস্বত্ব গ্রহণ এবং আনুষঙ্গিক অন্যান্য বিষয় নিয়ে কোনো আইন নেই।

খসড়া আইনটি পাস হলে পাইপলাইন স্থাপন ও মাটির নিচে সেবা সংস্থার অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের ক্ষেত্রে ভূমি ব্যবহারের বিষয়টি একটি আইনি কাঠামোর মধ্যে আসবে। এ ক্ষেত্রে আরও শৃঙ্খলা আসবে বলেও জানিয়েছেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. মাহমুদ হাসান বলেন, 'ভূমির ব্যবহারস্বত্ব গ্রহণ আইনের একটি খসড়া আমরা করেছি। এখন এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার মতামত নিচ্ছি। সবার মতামত নিয়ে আমরা আইনটি চূড়ান্ত করব।'

খসড়া আইনে বলা হয়েছে, যদি পাইপলাইন স্থাপন, সঞ্চালন বা মাটির নিচে অন্য কোনো অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ভূমির ব্যবহারস্বত্ব গ্রহণ করা জনস্বার্থে আবশ্যক বলে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতীয়মান হয়। তবে তিনি সম্পত্তির ব্যবহারস্বত্ব গ্রহণের প্রস্তাব করা হয়েছে উলেস্নখ করে ওই সম্পত্তির ওপর বা সম্পত্তির কাছাকাছি সুবিধাজনক স্থানে নির্ধারিত ফরম ও পদ্ধতিতে নোটিশ জারি করবেন।

এতে বলা হয়, সাধারণভাবে ভূমি ব্যবহারস্বত্ব গ্রহণের বিষয়টি 'নাল' শ্রেণির কৃষি ভূমির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। তবে মালিকের সম্মতি সাপেক্ষে অন্য কোনো শ্রেণির স্থাবর সম্পত্তি বা স্থায়ী স্থাপনা বিদ্যমান ভূমির ব্যবহারস্বত্ব গ্রহণ করা যাবে। মালিক বা তার পরিবারের প্রকৃত আবাসস্থল, ধর্মীয় উপাসনালয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, এতিমখানা, হাসপাতাল, গণগ্রন্থাগার, কবরস্থান বা শ্মশানের জন্য ব্যবহৃত ভূমি কিংবা শহর অথবা পৌর এলাকার কোনো ভূমি ব্যবহারস্বত্ব গ্রহণ করা যাবে না।

বেসরকারি ব্যক্তি বা সংস্থার জন্য স্থাবর সম্পত্তির ব্যবহারস্বত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ যা-ই হোক না কেন, ব্যবহারস্বত্ব গ্রহণ প্রক্রিয়া শুরুর আগে সরকারের অনুমোদন নিতে হবে বলে খসড়া আইনে উলেস্নখ করা হয়েছে।

আইনে বলা হয়েছে, জেলা প্রশাসক নোটিশ জারির আগে, নির্ধারিত সময় ও পদ্ধতিতে ব্যবহারস্বত্ব গ্রহণের জন্য প্রস্তাবিত স্থাবর সম্পত্তির প্রকৃত অবস্থা ও প্রকৃতি, ভূ-উপরিস্থিত অবকাঠামো, ফসল ও বৃক্ষরাজিসহ সবকিছুর ভিডিও, স্থিরচিত্র বা অন্য কোনো প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিবরণী প্রস্তুত করবেন। অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার জন্য ব্যবহারস্বত্ব গ্রহণাধীন বা গ্রহণ হতে পারে এমন ভূমির ওপর জনস্বার্থবিরোধী উদ্দেশে কোনো ঘরবাড়ি বা অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে কি না বা নির্মাণাধীন কি না তা জেলা প্রশাসক নির্ধারিত পদ্ধতিতে যৌথ তালিকায় উলেস্নখ করবেন।

জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য স্থান নির্বাচনের পর সংশ্লিষ্ট এলাকার জমি কেনাবেচা ও জমিতে অবকাঠামো তৈরির বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে পারবেন জেলা প্রশাসক। কোনো ব্যক্তি তার জমির ব্যবহারস্বত্ব গ্রহণের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে আপত্তি দাখিল করতে পারবেন। জেলা প্রশাসক এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন। জেলা প্রশাসক সম্পত্তির বাজার মূল্য, ব্যক্তির ক্ষতিসহ সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করবেন বলে প্রস্তাবিত আইনে উলেস্নখ করা হয়েছে।

এছাড়া খসড়া আইনে বর্গাদারকে ক্ষতিপূরণ, ব্যবহারস্বত্ব গ্রহণের আদেশ, প্রত্যাশী সংস্থান অধিকার, স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অধিকার, বেসরকারি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে স্থাবর সম্পত্তির ব্যবহারস্বত্ব গ্রহণ, কতিপয় ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের অর্থ পুনরুদ্ধার, ভূমির ব্যবহারস্বত্ব গ্রহণের আদেশ প্রত্যাহার, আরবিট্রেশন, ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ, আরবিট্রেটরের কর্মপদ্ধতি ইত্যাদি বিষয়ে উলেস্নখ করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<86448 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1