শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিদ্রোহীতে অসুবিধা দেখছেন না ওবায়দুল কাদের

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০
আপডেট  : ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ০০:১৩
ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে সুর নরম করলেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, ‘বিদ্রোহীদের জন্য আওয়ামী লীগ শেষ ও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছেÑ এমন তো না। এটা হয়েই আসছে।’
শনিবার দুপুরে রাজধানীর ধানম-িতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা ১১ বছর ধরে ক্ষমতায় আছি, এত বড় দলে বিদ্রোহী প্রার্থীর মতো বিষয়গুলো থাকে। আমরা নির্বাচন করছি, এসব ছোটখাট সমস্যাকে নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা নির্বাচনেও বিজয়ী হচ্ছি এবং বিরোধী দলের চ্যালেঞ্জও মোকাবেলা করছি।
‘এটা অ্যাবসুলেটলি ইন্টারন্যাল ম্যাটার অব আওয়ার পার্টি, এটা আমাদের ওপর ছেড়ে দিন নাÑ আমরা আমাদের সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারি বা না পারি, এতে আপনাদের অসুবিধা কী? আমি একটু জানতে চাই, এখানে বিদ্রোহী থাকলে আপনাদের অসুবিধা কী? বিদ্রোহীদের জন্য আওয়ামী লীগ শেষ ও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এমন তো না। এটা হয়েই আসছে।’
বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে কাজ করা হচ্ছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কাউন্সিলরদের মধ্যে কিছু কিছু প্রার্থী আছেন, যারা দলীয় মনোনয়ন
উপেক্ষা করে নিজেরা প্রার্থী হয়েছেন। তাদের বসানোর ব্যাপারে আমাদের সিটিতে যে শৃঙ্খলা কমিটি রয়েছে, তারা সক্রিয় রয়েছেন। ব্যবস্থা নিচ্ছেন। কেউ কেউ এর মধ্যে সাড়াও দিয়েছেন। এ বিষয়টি নিয়ে আমরা আলাদাভাবে কাজ করছি।’
ভোটে দিন পরিবর্তনে সমস্যা নেই
সরস্বতী পূজার জন্য ঢাকা সিটি ভোটের দিন পরিবর্তনে নিজেদের অনাপত্তির কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
পূজার জন্য ভোটের দিন বদলের দাবি জোরাল হয়ে ওঠায় নির্বাচন কমিশন জরুরি বৈঠকে বসার আগে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে এই অবস্থান জানালেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে কাদের বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশন। এটা তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়। তারা আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টির সমাধানে পৌঁছাতে পারেন।
‘আমরা বলেছি, এখানে তারিখ পরিবর্তনও যদি হয়, আগে বা পরে, আমাদের সরকার বা দলের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি করব না। আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছি, তারিখ পরিবর্তন করলে আমাদের কোনো অসুবিধা নেই।’
ভোটের তারিখ নিয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, ইসি তার বাস্তবসম্মত সমাধান দেবে বলে আশা করেন মন্ত্রী কাদের।
৩০ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের দিন রেখে নির্বাচন কমিশন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরপরই তার বিরোধিতা করেছিল পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদও ভোটের দিন পরিবর্তনের দাবি জানায়।
কিন্তু এসব আবেদনে ইসি সাড়া না দেওয়ায় এক আইনজীবী রিট আবেদন করেন হাইকোর্ট। তবে আদালত তা খারিজ করে দেওয়ায় ৩০ জানুয়ারিই ভোট করার সিদ্ধান্তে অটল থাকে ইসি।
এদিকে ভোটের তারিখ বদলানোর দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী বসেন অনশনে; হিন্দু মহাজোট নামে একটি সংগঠন সিটি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণাও দেয়।
হিন্দু মহাজোটের ঘোষণার বিষয়ে কাদের বলেন, হিন্দু মহাজোট কারা আপনারা ভালো করেই জানেন। এ রকম অনেক সংগঠন আমাদের দেশে আছে। হিন্দু মহাজোট হিন্দু সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে না। এরা একটি ক্ষুদ্র অংশ।
তাহলে গয়েশ্বর রায়ও তো বিএনপি করে। এখন গয়েশ্বর রায়ের কথায় কি হিন্দু সমাজ ভোট দেবে?
বিএনপির গণজোয়ার ‘দিবাস্বপ্ন’
ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে- দলটির নেতাদের এমন দাবিকে ‘দিবাস্বপ্ন’ বলে মন্তব্য করলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘সাত আসন পাওয়ার আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তো শুনেছিলাম তাদের গণজোয়ার এসেছে। ফলাফলে তো তারা তার কোনো প্রমাণ রাখতে পারেননি।
বিএনপি সব সময়ই দিবাস্বপ্ন দেখে। গণজোয়ারও তাদের একটা দিবাস্বপ্ন, যা দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে।
পরাজয় নিশ্চিত জেনে বিএনপি ইভিএমের নিয়ে বিষোদগার করছে বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
‘আমাদের মনে হয়েছে, নির্বাচন হওয়ার আগেই নির্বাচনকে বিতর্কিত করার জন্য বিএনপি নানা ধরনের টালবাহানা করছে। আসলে ইভিএমটা টার্গেট নয়। এটার ছুতো ধরেই তারা নির্বাচনকে বিতর্কিত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে।’
ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার পক্ষে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত ঢল নেমেছে দাবি করে কাদের বলেন, আমরা ক্লিন ইমেজের দু’জন প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছি। আজকে জনমতের যে দৃশ্যপট, তাতে জনগণ স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থীকেই ভোট দিতে চায়।
ধানম-িতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, সাখাওয়াত হোসেন শফিক, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সবুর, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান উপস্থিত ছিলেন।
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে