শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংকটে মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজার

মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি খারাপ হলে শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং শ্রমবাজার দুটোই হুমকির মুখে পড়বে
যাযাদি রিপোর্ট
  ১১ জানুয়ারি ২০২০, ০০:০০

ইরাকে মার্কিন হামলায় ইরানের কুদস ফোর্সের প্রধান সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইরান প্রতিশোধ নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রও বলেছে, প্রতিশোধমূলক কিছু করা হলে পালটা হামলা চালানো হবে।

এরই মধ্যে প্রতিশোধের অংশ হিসেবে ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। দেশটি দাবি করেছে, এ হামলায় ৮০ জন মার্কিন সেনা নিহত হয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র হামলার কথা স্বীকার করেছে। তবে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা জানায়নি।

এ অবস্থায় প্রবাসী শ্রমিকদের স্বজনরা যেমন উদ্বিগ্ন তেমনি মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজার নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে শ্রমিক পাঠানো বন্ধ করতে বলেছে ইরাক।

তবে মধ্যপ্রাচ্যের বাজার নিয়ে নতুন করে সংকট সৃষ্টির তেমন কোনো কারণ নেই বলে মনে করছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ।

তিনি বলেন, 'সম্প্রতি আমাদের দুই-তিনটা বাজারে নতুন করে সংকট তৈরি হচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছেন। তবে আমি বলব মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজার নিয়ে এখনই চিন্তার কোনো কারণ নেই।'

ইরাকে সংকট দেখা দেওয়ায় সেখানে বাজার আটকে আছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'আশা করছি এতে আমাদের তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না।'

আর সেখানে থাকা শ্রমিকদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, 'তারা প্রবাসী কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতন আছেন। আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। তারা এ মুহূর্তে কর্মী না পাঠাতে বলেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবার কর্মী যাবে।'

এই পরিস্থিতি দীর্ঘ সময়ের জন্য হলে শ্রমবাজারে প্রভাব পড়বে কি না সে প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, 'ভবিষ্যতে কী হবে সেটা পরে নির্ধারণ করা হবে। তবে আমরা সব রকমের প্রস্তুতি নিচ্ছি।'

শ্রমবাজার এবং প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে যারা কথা বলেন, কাজ করেন, তারা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি খারাপ হলে আমাদের শ্রমিকদের নিরাপত্তা এবং শ্রমবাজার দুটোই হুমকির মুখে পড়বে। তবে এই মুহূর্তে তারাও বড় কোনো সংকট দেখছেন না।

সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সিনিয়র ফেলো মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'ইরাকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে যে উত্তেজনা চলছে, তার ব্যাপ্তি বা বিস্তৃতি কতটা হবে তার ওপর নির্ভর করবে শ্রমবাজারের অবস্থা। এটা যদি মারাত্মক আকার ধারণ করে তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়বে। তখন আমাদের কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি চলে আসবে। একইসঙ্গে আমাদের শ্রমবাজার বিরাট বিপর্যয়ের দিকে যাবে।'

তবে সেটা বলার এখনো সময় আসেনি বলে মনে করেন মুস্তাফিজুর রহমান।

অভিবাসন নিয়ে কাজ করা বেসরকারি গবেষণা সংস্থা রামরুর কর্ণধার ড. তাসনিম সিদ্দিকি বলেন, 'মধ্যপ্রাচ্যে যে পরিস্থিতি চলছে, তা যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে হতে পারে। সেজন্য সরকারের বিকল্প জরুরি পরিকল্পনা থাকলে তেমন প্রভাব পড়বে না। এখন যে পরিস্থিতি তাতে আমরা মনে করি না বড় কোনো চাপ পড়বে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে একটি প্রস্তুতি সব সময় থাকতে হবে, যাতে যেকোনো সময় শ্রমিকদের সরিয়ে আনা যায় এবং প্রয়োজন অনুযায়ী সহায়তা দেয়া যায়।'

তিনি সরকারকে উদ্বিগ্ন না হয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেন।

বিদেশে শ্রমিক পাঠানো প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন বায়রার সম্পাদক শামীম আহমেদ নোমান মনে করেন, 'পরিস্থিতি যদি পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ে, তাহলে আমাদের ভাবার দরকার আছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে চিন্তার কিছু নেই। কারণ ইরানে আমরা শ্রমিক পাঠাই না আর ইরাকে শ্রমিক পাঠানো স্থগিত আছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<83877 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1