যাযাদি রিপোর্ট
একটি ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি নুরুল হকের নুরের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন করেছে মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের একাংশ।
বুধবার দুপুরে ডাকসু ভবনের সামনে অধ্যাপক ড. আ ক ম জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে এ মানববন্ধন হয়।
মানববন্ধন শেষে ভিপি নুরের কক্ষে তালা দেয়া হয় এবং তার কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।
মাজহারুল রুবেল নামের এক ব্যক্তি লিখেছেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘুষ নিয়ে সাদ্দাম আর রাব্বানীর ফোনালাপ ফাঁসের এদের অবস্থান কী ছিল?
এর আগে মঙ্গলবার একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরের একটি অডিও ক্লিপ ফাঁস করা হয়।
অডিওতে ডাকসু ভিপিকে জনৈক এক ব্যক্তির সঙ্গে ব্যবসায়িক কথাবার্তা বলতে শোনা গেছে। এছাড়া প্রবাসে এক বাংলাদেশির সঙ্গে টেলিফোনে টাকা লেনদেনের বিষয়ে কথা বলতে শোনা গেছে তাকে।
অডিওতে আরও বলতে শোনা গেছে, ওই ব্যক্তি ভিপি নুরকে ইমেইল অ্যাড্রেসসহ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট নম্বর পাঠাতে বলেছেন।
এদিকে ফাঁস হওয়া ফোনালাপের একটি কণ্ঠ যে তারই তা ইতোমধ্যে স্বীকার করেছেন ভিপি নুর।
বিষয়টি পরিষ্কার করতে ভিপি নুর মঙ্গলবার রাতেই ফেসবুক লাইভে আসেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, তার ফোনালাপকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আংশিকভাবে প্রচার করা হয়েছে। এমন কাজ সাংবাদিকতার নীতিবিরোধী।
অডিও ক্লিপ প্রসঙ্গে নুর বলেন, 'আমার একটি ফোনালাপ ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমার পুরোপুরি কথা না শুনিয়ে কিছু অংশ কেটে প্রচার করেছে, যা সাংবাদিকদের নৈতিকতার সঙ্গে যায় না। আমি এর বিরুদ্ধে একটি প্রতিবাদলিপি ও উকিল নোটিশ পাঠাব।'
এর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে ভিপি নুরুল হক নুরের টেলিফোন কথোপকথনের একটি অডিও।
মঙ্গলবার একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রথম ভিপি নুরের ওই ফোনালাপটি ফাঁস করা হয়।
অডিওক্লিপটি হুবহু দেয়া হলো :
ভিপি নুর : 'ওই যে আমি একটা কাজ পাইছেলাম ১৩ কোটি টাকার। এখন ওই কাজটা আমার এক আন্টিরই। উনি জয়েনভেনচরে একজনেরে দিয়া দেওয়াছিল। এখন কালকে আপনি ওইটা শিওর করলে টাকা ওই আন্টিই দেবে আনে, আমার আন্টি সম্পর্ক হয়। কিন্তু অ্যাকাউন্টে যাদের লোন থাকে ওনাদের তো ইজিলি হয়, আপনি তো কাজবাজ করান। আপনি কি একটা পারফর্মেন্সের গ্যারান্টি ইয়ে করতে পারবেন?'
অপর ব্যক্তি : 'এখন কোন ফার্মের নামে করমু, কি করমু?' নুরু বলেন, 'তাহলে আমি ডিটেইলস্ লইয়া আপনার কাছে আমু আমি'।
এছাড়া ওই ব্যক্তি নুরুকে বলেন, 'আমি কিছু টাকা পয়সা উঠিয়ে পাঠাতে চাচ্ছি, আমি জানি তোমাদের টাকা পয়সা দরকার খুব। আমি হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করছি।'
আরেক অংশে ওই ব্যক্তি বলেন, 'আমাকে ম্যাসেজ করে যদি পাঠিয়ে দেও, তোমার পুরো নাম লাগবে, ইমেইল অ্যাড্রেস লাগবে। তাহলে আমরা এখান থেকে কিছু কিছু টাকা পয়সা কালেকশন করে তোমার কাছে পাঠায় দিবো।'
জবাবে নুর : ঠিক আছে, আপনি বলছেন খুব খুশি হইছি।
অপর ব্যক্তি : আমি ওই ইলিয়াস হোসেন আছে, ইলিয়াসের ইয়েতেও টাকা দেই। সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন। আমি জানি আন্দোলন করতে গেলে অনেক টাকা পয়সার প্রয়োজন হয়। ঠিক আছে নুর ভালো থেকো, সাবধানে থেকো। সবসময় খুব চোখ-কান খোলা রেখো, দোয়া করি।
এদিকে ফোনালাপটি ফাঁস হওয়ার পর কণ্ঠটি তার বলে স্বীকার করেছেন ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর।
তবে তার ফোনালাপকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে বিকৃতভাবে জাতির কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, ওই কথোপকথনের অডিওটি সম্পূর্ণ প্রচার না করে আংশিকভাবে প্রচার করা হয়েছে। এটা সাংবাদিকতার নীতিবিরোধী। তিনি ওই ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেবেন। প্রতিবাদলিপি ও উকিল নোটিশ পাঠাবেন।