শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
আদালতে প্রতিবেদন

মেয়াদোত্তীর্ণ ৩৪ কোটি টাকার ওষুধ ধ্বংস

ইতোমধ্যে যাদের জেল-জরিমানা হয়েছে, তারা পুনরায় যদি একই ধরনের অপরাধ করেন, তখন বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলার জন্য আদালত মৌখিকভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন
নতুনধারা
  ২০ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট

গত দুই মাসে ৩৪ কোটি সাত লাখ ৬৯ হাজার ১৪৩ কোটি টাকার মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ধ্বংস করা হয়েছে। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আদায় হয়েছে এক কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা।

গত ১ আগস্ট থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত 'মেয়াদোত্তীর্ণ ও নকল, ভেজাল ওষুধ বিক্রয়ে গৃহীত কার্যক্রম' শীর্ষক ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হয়। সেখানে এ তথ্য জানানো হয়। পরে ওষুধের বিষয়ে শুনানি ও আদেশের জন্য ১২ ডিসেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য করেন আদালত।

মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এবিএম আলতাফ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুলস্নাহ আল মাহমুদ বাশার। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুজ্জামান কচি। বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।

প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সময়ে ১৩ হাজার ৫৯৩ ফার্মেসি পরিদর্শন শেষে ৫৭২টি মামলা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এতে ১ কোটি ৭৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। একই সঙ্গে মেয়াদোত্তীর্ণ ও নকল, ভেজাল ওষুধ সংরক্ষণের দায়ে দুটি ফার্মেসি সিলগালা করা হয়েছে। এছাড়া একই সময়ে ৩৪ কোটি সাত লাখ ৬৯ হাজার ১৪৩ কোটি টাকার মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ধ্বংস করা হয়েছে।

আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, 'অভিযানের সঙ্গে আমরা একমত। নকল ওষুধ যেন বাজারে না থাকে সেটা আমরাও চাই। একটা

আবেদন ছিল ওষুধের গায়ে যেন বাংলায় লেখা থাকে। আমরা প্যাকেট খুলে দেখিয়েছি বাংলায় লেখা আছে। মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ইংরেজিতে লেখা। ওনারা স্ট্রিপে (পাতায়) চেয়েছেন বাংলায়। স্ট্রিপে ইংরেজিতে লেখা আছে। খুব একটা ভিজিবল হয় না, ফরমেটের কারণে। আমরা বলেছি ফ্যাক্টরি মালিকদের সঙ্গে বসব। বসে যতটুকু সম্ভব, অলরেডি অনেকগুলো বাংলায় হয়ে গেছে, তবে শতভাগ যেন হয়। আমাদের ওষুধ বিদেশেও যায়। তাই সবকিছু ঠিক করে একটি প্রতিবেদন দেব।'

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুলস্নাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, ইতোমধ্যে যাদের জেল-জরিমানা হয়েছে, তারা পুনরায় যদি একই ধরনের অপরাধ করেন, তখন বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলার জন্য আদালত মৌখিকভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন। যার সাজা যাবজ্জীবন এমনকি মৃতু্যদন্ডও হতে পারে। ফলে যারা এ কাজে জড়িত থাকবেন তাদের সাবধান করতে চান। যেন তারা এ ধরনের মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সংরক্ষণ ও বিক্রি না করেন। প্রয়োজনে সরকার আদালতের নির্দেশ মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

তিনি বলেন, আদালত বলেছেন অনেক সময় বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি তাদের রিপ্রেজেন্টেটিভ দিয়ে চিকিৎসকদের প্রভাবিত করতে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার যে প্রতিশ্রম্নতি দেন সেটা বন্ধে ওষুধ শিল্প মালিকদের আইনজীবীদের বলেছেন। এ ধরনের কোনো অনিয়ম বা অন্যায় যেন না হয়।

তিনি আরও বলেন, ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে ভোক্তা অধিকার ভেজাল ওষুধ প্রতিরোধের কার্যক্রম নিয়ে প্রতিবেদন দেবে। আদালত ওষুধ প্রশাসনসহ সবাইকে একযোগে কাজ করতে বলেছেন। যেন বাজারে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ভেজাল ওষুধ বিক্রির সুযোগ সৃষ্টি না হয়। ওষুধ শিল্প সমিতিকে বলেছেন ইংরেজির পাশাপাশি বাংলায় মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ও মূল্য লেখা থাকে সেটা বিবেচনা করতে।

রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে এক আদেশে হাইকোর্ট সারা দেশে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সংরক্ষণ ও বিক্রি বন্ধ এবং মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ প্রত্যাহার/ধ্বংস করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন। ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর আদালতে প্রতিবেদন দেন।

গত ১০ মে এক অনুষ্ঠানে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, ঢাকা শহরের ৯৩ শতাংশ ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ রাখা হয়।

এ বিষয়ে সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে ১৭ জুন জাস্টিস ওয়াচ ফাউন্ডেশনের পক্ষে নির্বাহী পরিচালক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মাহফুজুর রহমান মিলন এ রিট করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<76322 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1