মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাথমিক শিক্ষকদের নতুন গ্রেডের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান

নতুনধারা
  ১৪ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট

প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের ১১তম, সহকারী প্রধান শিক্ষকদের ১২তম এবং সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১৩তম গ্রেড নির্ধারণের বিষয়টি মানছেন না প্রাথমিক শিক্ষকরা। এটি এক ধরনের প্রহসন বলে মনে করেন তারা। একই সঙ্গে সরকারের এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা।

প্রাথমিকের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং প্রশিক্ষণবিহীন সহকারী শিক্ষকরা বেতন বৈষম্য নিরসনে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন। এ দাবিতে আসন্ন প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষাও বয়কটের হুমকি দিয়েছিলেন তারা। পরে বেতন বৈষম্য নিরসনে গত ২৮ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গত ৭ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায়। চিঠিতে এখন থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণবিহীন) জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ এর ১১তম গ্রেডে (১২৫০০-৩০২৩০ টাকা) এবং সহকারী শিক্ষক (প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং প্রশিক্ষণবিহীন) ১৩তম গ্রেডে (১১০০০-২৬৫৯০ টাকা) বেতন পাবেন বলে উলেস্নখ করা হয়। কিন্তু নতুন এ বেতন স্কেল প্রত্যাখ্যান করেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ শামছুদ্দিন। তিনি বলেন, 'এটি একধরনের প্রহসন। আমরা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের অপেক্ষায় আছি।' অন্যথায় নতুনভাবে আন্দোলনে নামারও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে অর্থ মন্ত্রণালয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের ১১তম, সহকারী প্রধানদের ১২তম এবং সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেড দেওয়ার সম্মতি জানায়। ইতোমধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। এছাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ সৃষ্টির জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মতিসহ প্রস্তাব পেলে এ পদেরও বেতন স্কেল নির্ধারণ করা হবে বলে জানায় অর্থ বিভাগ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আন্দোলনকারী বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ শামছুদ্দিন বুধবার বলেন, 'গ্রেড পরিবর্তনের নামে শিক্ষকদের সঙ্গে প্রহসনমূলক আচরণ করা হচ্ছে। যেখানে আমরা প্রধান শিক্ষকদের জন্য ১০তম ও সহকারী প্রধানদের জন্য ১২তম গ্রেড মেনে নেইনি, সেখানে প্রধানদের ১১তম আর সহকারীদের ১৩তম গ্রেড মেনে নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। এ প্রস্তাব সব শিক্ষক প্রত্যাখ্যান করেছেন।'

তিনি আরও বলেন, 'গ্রেড ও বেতন বৃিদ্ধর বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের অপেক্ষায় আছি। সমাপনী পরীক্ষার পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করব। তার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে এ সমস্যা আর থাকবে না। তবে তা না হলে আমরা আলোচনা করে নতুনভাবে আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।'

বাংলাদেশ সহকারী প্রাথমিক শিক্ষক সমাজের সভাপতি আনিছুর রহমান বলেন, 'সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডে বেতন দিলে শিক্ষকদের মধ্যে বৈষম্য আরও বেড়ে যাবে। অনেকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কারণ বর্তমানে শতকরা ৯০ ভাগ শিক্ষক একাধিক টাইম স্কেল পেয়ে ইতোমধ্যে ১১তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। তাদের যদি আবার ১৩তম গ্রেডে নামিয়ে বেতন স্কেল নির্ধারণ করা হয় তাহলে তো আমরা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হব।'

'আমরা নতুন সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করছি। সহকারী প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক একই গ্রেডে অর্থাৎ ১১তম গ্রেডে রাখা যেতে পারে' বলেও তিনি পরামর্শ দেন।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন বলেন, 'অর্থ বিভাগের সম্মতি পাওয়া গেছে। এর আগে প্রধান শিক্ষকদের ১০তম ও সহকারী শিক্ষকদের ১২তম গ্রেডের প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে নাকচ করে দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে আমরা আবারও তাদের সঙ্গে আলোচনা করি। নতুনভাবে আলোচনার মাধ্যমে প্রধানদের ১১তম ও সহকারী প্রধানদের ১২তম এবং সহকারী শিক্ষকদের ১৩তম গ্রেডের জন্য প্রস্তাব পাঠাতে বলা হয়। তার ভিত্তিতে আমরা প্রস্তাব পাঠাই। সেটি তারা লিখিতভাবে সম্মতি জানিয়েছে, এখন বাকি আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে প্রজ্ঞাপন জারি হবে।'

তিনি আরও বলেন, 'আন্দোলনকারী শিক্ষকদের সঙ্গে আমাদের দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে। তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। আমরা তাদের প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছি।' সমাপনী পরীক্ষার পর এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে বলেও জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে প্রশিক্ষণ পাওয়া প্রধান শিক্ষকরা ১১তম গ্রেডে এবং প্রশিক্ষণবিহীন প্রধান শিক্ষকরা ১২তম গ্রেডে বেতন পান। অন্যদিকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকরা ১৪তম গ্রেডে এবং প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকরা ১৫তম গ্রেডে বেতন পান। সহকারী প্রধান শিক্ষক নামে বর্তমানে কোনো পদ নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<75451 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1