বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

শহিদুল আলমের সরকারবিরোধী কমর্কাÐের তথ্য পাওয়ার দাবি

যাযাদি রিপোটর্
  ১১ আগস্ট ২০১৮, ০০:০০

রাজধানীর রমনা থানায় করা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের মামলায় সাত দিনের পুলিশি রিমান্ডে দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা ও আলোকচিত্রী ড. শহিদুল আলম তার সরকারবিরোধী কাযর্ক্রমের নানা তথ্য দিচ্ছেন বলে দাবি করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তার দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখছে তদন্ত সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

শহিদুলের বিরুদ্ধে ‘সরকারবিরোধী কমর্কাÐের’ চাঞ্চল্যকর অনেক তথ্য পাওয়া গেছে দাবি করে পুলিশ জানিয়েছে, শিক্ষাথীের্দর আন্দোলন চলাকালে সাংবাদিক নিযার্তনের ইস্যুতে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের একটি প্লাটফমের্ এনে সরকারবিরোধী তথ্য প্রচারের পরিকল্পনা করেছিলেন শহিদুল। এর মাধ্যমে সরকারকে বিপাকে ফেলতে চেয়েছিলেন তিনি। এ নিয়ে দেশি-বিদেশি কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে ই- মেইলে আলাপ-আলোচনাও চালিয়ে যান তিনি।

এর আগে, গত সোমবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শহিদুলকে ১০ দিন রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করা হয়। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, এ আসামি সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ ও অকাযর্কর হিসেবে আন্তজাির্তক পরিমÐলে উপস্থাপন করতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন কমর্কাÐ করে আসছে। তাই এ ঘটনার সঙ্গে আরও কারা কারা জড়িত আছে তাদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করতে আসামিকে রিমান্ডে নেয়া প্রয়োজন। শুনানি শেষে বিচারক সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে শহিদুলকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।

শহিদুলকে জিজ্ঞাসাবাদে যুক্ত একটি সূত্র জানায়, রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে সংবাদ সংগ্রহে আসা মিয়ানমারের দুই সাংবাদিককে গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের টেকনাফে আটক করে পুলিশ। তারা জামাির্নভিত্তিক জিইও ম্যাগাজিনের হয়ে কাজ করছিলেন। তাদের মুক্ত করতে বিশেষ তৎপরতা চালান শহিদুল। কিন্তু ট্যুরিস্ট ভিসায় এসে সাংবাদিকতা করায় এ নিয়ে সরকার কঠোর অবস্থানে ছিল। তারপরও তাদের মুক্তির বিষয়ে নিজের উদ্যোগ নিয়ে জিইও ম্যাগাজিনের ডেপুটি ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর ও হেড অব ফটোগ্রাফি লাসর্ লিন্ডম্যানসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে ই- মেইল বাতার্ আদান-প্রদান করেন শহিদুল।

এ সময় শহিদুলকে তারা বাংলাদেশে ‘একমাত্র বিশ্বাসযোগ্য’ এবং ‘বিশ্বস্ত’ মনে করেন বলে উল্লেখ করেন এক মেইল বাতার্য়। শহিদুল ওই দুই সাংবাদিককে ছাড়িয়ে নিতে অনৈতিকভাবে পুলিশকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চালান। এছাড়া সরকারের একজন গুরুত্বপূণর্ মন্ত্রীর সঙ্গে তার এ নিয়ে ইতিবাচক কথা হয় বলে শহিদুল উল্লেখ করেন। তার এসব যোগাযোগের তথ্য বিশ্লেষণ করছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা।

২০১৭ সালেও শহিদুল সরকারবিরোধী নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন বলে দাবি করেছে ওই সূত্র। তখন বিদেশি একটি ‘স্বাথাের্ন্বষী মহলের’ সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়। এ যোগযোগের জন্য ই-মেইল ছাড়াও অ্যাপসভিত্তিক কিছু যোগাযোগ চ্যানেল ব্যবহার করেন তিনি। আর চলমান ছাত্র আন্দোলনে সরকারকে আন্তজাির্তক পরিমÐলে ভিন্নভাবে উপস্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন তিনি। এক্ষেত্রে বিদেশি কয়েক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করে সাংবাদিক নিযার্তনের বিষয়টিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ায় সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে পারেননি তিনি।

শহিদুল তার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ অস্বীকার করেননি দাবি করে মামলার তদন্ত কতৃর্পক্ষ ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ডিসি (উত্তর) মশিউর রহমান বলেন, ‘তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্তের পর বিস্তারিত পরিষ্কারভাবে বলা যাবে।’

গত ৫ আগস্ট রাতে দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা শহিদুলকে বাসা থেকে উঠিয়ে নেয়া হয়। পরদিন ৬ আগস্ট (সোমবার) শিক্ষাথীের্দর আন্দোলন নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে উসকানি দেয়ার অভিযোগে মামলা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ।

মামলা সূত্রে জানা যায়, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষাথীের্দর আন্দোলনের মধ্যে গত শনি ও রোববার জিগাতলা এলাকায় সংঘষের্র বিষয়ে কথা বলে কয়েকবার ফেসবুক লাইভে আসেন শহিদুল। এছাড়া ওই আন্দোলনের বিষয়ে আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি সরকারের সমালোচনাও করেন। এ ঘটনায় রাজধানীর রমনা থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা করা হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, আসামি ‘কল্পনাপ্রসূত তথ্যের’ মাধ্যমে জনসাধারণের বিভিন্ন শ্রেণীর মধ্যে ‘মিথ্যা প্রচার’ চালানো, উসকানিমূলক তথ্য উপস্থাপন, সরকারকে ‘প্রশ্নবিদ্ধ ও অকাযর্কর’ হিসেবে আন্তজাির্তক পরিমÐলে উপস্থাপন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ‘অবনতি ঘটিয়ে’ জনমনে ‘ভীতি ও সন্ত্রাস ছড়িয়ে’ দেয়ার ষড়যন্ত্র এবং তা বাস্তবায়নে ইলেকট্রনিক বিন্যাসে ‘অপপ্রচারের’ চালিয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<7492 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1