শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকায় খোকার ৪ জানাজা শেষ শয্যা জুরাইনে

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৬ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ০৬ নভেম্বর ২০১৯, ০০:২৩
সাদেক হোসেন খোকা

ঢাকার সাবেক মেয়র ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকার মরদেহে নিউইয়র্ক থেকে বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকায় পৌঁছাবে। ওইদিন চার দফা জানাজা, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর জুরাইনে বাবা-মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন একাত্তরের এই গেরিলা যোদ্ধা। এদিকে সাদেক হোসেন খোকার মৃতু্যতে আজ সারাদেশে শোক কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। ক্যান্সারে আক্রান্ত খোকা সোমবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের মেমোরিয়াল স্স্নোয়ান ক্যাটারিং ক্যান্সার সেন্টারে মারা যান। রাতেই কুইন্সের জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে তার জানাজা হয়। খোকার জানাজা ও দাফনের কর্মসূচি ঠিক করতে মঙ্গলবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে বৈঠক হয়। পরে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তিনি জানান, সাদেক হোসেন খোকার মরদেহ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ১০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে এসে পৌঁছালে তার কফিন গ্রহণ করবেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। এরপর সকাল ১১টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ পস্নাজা, বাদ জোহর নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে, বিকাল ৩টায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর ভবন এবং বাদ আসর ধূপখোলা মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জানাজার পর প্রয়াত এই বীর মুক্তিযোদ্ধার মরদেহ দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। আর নগর ভবনের জানাজা শেষে দাফনের আগে গোপীবাগের বাসায় মরহুমের কফিন কিছুক্ষণ রাখা হবে। চতুর্থ জানাজার পর সাদেক হোসেন খোকাকে জুরাইন কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে বলে জানান রিজভী। তিনি বলেন, সাদেক হোসেন খোকার মৃতু্যতে বুধবার বিএনপির উদ্যোগে ঢাকাসহ সারাদেশে শোক দিবস পালন করা হবে। এ উপলক্ষে সারাদেশে দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারণ এবং সব কার্যালয়ে কোরআনখানি হবে। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী সোহেল, ফজলুল হক মিলন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের জুয়েল, মুনির হোসেন, কাজী আবুল বাশার, মুন্সি বজলুল বাসিত আনজু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। নিউইয়র্কে জানাজায় মানুষের ঢল এদিকে নিউইয়র্কে ঢাকার সাবেক মেয়র ও বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার জানাজায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের ঢল নেমেছিল। স্থানীয় সময় সোমবার রাতে এশার নামাজের পর নিউইয়র্কের কুইন্সের জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে তার এই জানাজায় ইমামতি করেন খতিব মাওলানা মির্জা আবু জাফর বেগ। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা-কর্মী ছাড়াও দলমত নির্বিশেষে প্রবাসীরা মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার জানাজায় অংশ নেন। মসজিদের প্রতিটি ফ্লোর কানায় কানায় ভরে যায়। মসজিদের আশপাশের সড়কেও দাঁড়ায় শত শত মানুষ। নিউইয়র্কের আশপাশের রাজ্য থেকেও এসেছিলেন প্রবাসীরা। খোকার রাজনৈতিক সহকর্মী বিএনপি নেতা এম এ সালাম বলেন, "খোকা ছিলেন সর্বস্তরের মানুষের প্রিয় একজন নেতা- এটা তারই প্রমাণ।" জানাজার আগে মুক্তিযোদ্ধা খোকার কফিনে স্যালুট জানান সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের যুক্তরাষ্ট্র শাখার নেতারা। এ সময় জাতীয় পতাকা দিয়ে তার কফিন ঢেকে দেওয়া হয়। স্যালুটে অংশগ্রহণকারীদের দলে ছিলেন সংগঠনের শাখার সভাপতি রাশেদ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল বারী বকুল, সহ-সভাপতি আবুল বাশার চুন্নু ও কার্যকরী সদস্য লাবলু আনসার। খোকার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে জানাজায় এসেছিলেন মুক্তিযোদ্ধা বাবরউদ্দিন, সুরুজ্জামান ও আব্দুল মুকিত চৌধুরী। এর আগে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনসু্যলেটের ফার্স্ট সেক্রেটারি শামীম হোসেন বক্তব্য দিতে গেলে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কর্মীরা খোকার পাসপোর্ট নবায়ন না করার প্রতিবাদ জানান। পরিস্থিতি হট্টগোলে রূপ নিলে বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক মনজুর আহমদ চৌধুরী এবং সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানান। খোকার ছোট ছেলে ইশফাক হোসেনও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। অন্যদের মধ্যে অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, কাজী নয়ন, ডা. ওয়াদুদ ভুইয়া, ডা. ওয়াজেদ এ খান, বেদারুল ইসলাম বাবলা, এমাদ চৌধুরী, আব্দুল লতিফ সম্রাট, গিয়াস আহমেদ, জিলস্নুর রহমান, মিল্টন ভুইয়া, গিয়াসউদ্দিন, আজহারুল হক মিলন, পারভেজ সাজ্জাদ, এম এ বাতিন, আবু তাহের, হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা, জাকির এইচ চৌধুরী, আবু সাঈদ আহমেদ, মোহাম্মদ আলী, সিদ্দিকুর রহমান, হাজী এনাম, সামাদ আজাদ, দরুদ রনেল, মহিউদ্দিন দেওয়ান ও জসীম ভুইয়া উপস্থিত ছিলেন জানাজায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে