আজকের যায়যায়দিন

মানসিকভাবে দুর্বল তরুণরাই জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকছে বলে মন্তব্য করেছেন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম। শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্যের পাশাপাশি বলেছেন, সারাবিশ্বই এখন সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তবে বাংলাদেশে ঝুঁকির মাত্রা 'অত্যন্ত কম'। কয়েক বছর আগে বাংলাদেশে আলোড়ন তোলা গুলশান হামলার পর অনেক তরুণের ঘর থেকে পালিয়ে জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ার বিষয়টি প্রকাশ পায়। এরপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টানা অভিযানে জঙ্গিদের 'মেরুদন্ড ভেঙে' দেওয়ার কথা কর্মকর্তারা বললেও সম্প্রতি পুলিশকে লক্ষ্য করে কয়েকটি হামলার ঘটনা ঘটেছে। জঙ্গিবাদ নির্মূলে কাজ চললেও ঝুঁকি এখনো রয়েছে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নেতৃত্বের কাতারে থাকা মনিরুল। 'হলি আর্টিজেন বেকারিতে হামলার পর থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূলে অনেকেই বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করেছেন। পরে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড কমে যাওয়ার কারণে অনেকেই মনে করছেন, এই বিপদ কেটে গেছে। কিন্তু এই বিপদ কেটে যায়নি।' তিনি বলেন, 'ইন্টারনেটে আকর্ষণীয় প্যাকেজ দেখে মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধহীন তরুণরাই জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ছে। এটা ১৫ থেকে ৩০ বছরের (বয়সসীমার) মধ্যে বেশি।' ইউএসএআইডির সহায়তায় 'ঢাকা পিস টক' নামের একটি কর্মসূচির বিস্তারিত জানাতে সেন্টার ফর সোশ্যাল অ্যাডভোকেসি এন্ড রিসার্চ ফাউন্ডেশন (সিসার্ফ) এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। মনিরুল বলেন, 'জঙ্গিবাদ নির্মূলে আগে বিচ্ছিন্নভাবে কাজ হয়েছে। এ ধরনের কাজ দীর্ঘদিন ধরে করতে হবে।' সিসার্ফের নির্বাহী পরিচালক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শবনম আজীম বলেন, ধর্মীয় জঙ্গিবাদ বিষয়টিকে সামনে রেখে সে বিষয়ে করণীয় ঠিক করাই তাদের কর্মসূচির লক্ষ্য। তিনি জানান, বিভিন্ন পেশার ৩৬ জনকে নিয়ে একটি প্যানেল তৈরি করে ১২টি আলোচনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আগামীর করণীয় নির্ধারণ করা হবে। শবনম বলেন, তরুণ সম্প্রদায়ের মধ্যে ধর্মীয় উগ্রবাদ প্রতিরোধে জাতীয় নীতি প্রণয়ন, শিক্ষাব্যবস্থায় বা পাঠ্যসূচি পুনর্মূল্যায়ন, গণমাধ্যমের ভূমিকা, পরিবার সেই সঙ্গে নারীর ভূমিকা, উগ্রবাদে জড়িতদের সামাজিক পুনর্বাসন বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবেন তারা। 'আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কেউ যেন উগ্র জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়তে না পারে, সে লক্ষ্যটাই থাকবে আমাদের,' বলেন তিনি।