শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
আন্দোলন স্থগিত

ভিসির পদত্যাগের পর গোপালগঞ্জে উলস্নাস

ভিসির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ এনে তার পদত্যাগের একদফা দাবিতে দীর্ঘ ১২ দিন লাগাতার কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা
নতুনধারা
  ০২ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০
গোপালগঞ্জ বশেমুরবিপ্রবি'র ভিসি প্রফেসর ড. নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগের পর শরীরে রং মেখে ক্যাম্পাসে উৎসবে মাতেন শিক্ষার্থীরা। ছবিটি মঙ্গলবার তোলা -স্টার মেইল

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত ফল লাভ করেছে বশেমুরবিপ্রবি-র আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ১২ দিনের সেই টানা ভিসির পদত্যাগের একদফা দাবিতে আন্দোলন করে আসছিল শিক্ষার্থীরা। গোপালগঞ্জ বশেমুরবিপ্রবি'র ভিসি প্রফেসর ড. নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগের খবরে ক্যাম্পাসে আনন্দ উলস্নাস প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা। সোমবার বিকাল থেকে ক্যাম্পাসে ভিসির পদত্যাগের গুঞ্জন ভাসতে থাকে। সন্ধ্যায় ভিসির পদত্যাগের খবর নিশ্চিত হওয়ার পর শিক্ষার্থীরা খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাসের জয়বাংলা চত্বরে সমবেত হন। বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো শিক্ষার্থীরা মিছিল সহকারে জয়বাংলা চত্বরে জমা হন। পরে সেখানে সবাই মিলে আনন্দ ও উলস্নাসে ফেটে পড়েন। মেতে ওঠেন রং খেলায়। যে যার মতো করে আনন্দ-উলস্নাস প্রকাশ করছেন। কেউ কেউ কাদায় গড়াগড়ি খেয়ে আনন্দ উলস্নাস করে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে দীর্ঘ ১২ দিন একটানা ভিসির পদত্যাগের একদফা দাবিতে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা। তারা ভিসির বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অভিযোগ এনে লাগাতার কর্মসূচি পালন করে। তারা অনশন, অবস্থান ধর্মঘট, ঝাড়ু মিছিল, মশাল মিছিল, মোমবাতি মিছিল, প্রেস ব্রিফিং, ভিসির দুর্নীতির পোস্টার প্রদর্শনী, ভিসির ব্যাঙ্গাত্মক চিত্র প্রদর্শনীসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা নিরসনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ইউজিসি থেকে ৫ সদস্যের তদারক টিম গঠন করা হয়। প্রফেসর ড. মো. আলমগীরের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের তদন্ত টিম ২৫ ও ২৬ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। তারা শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মচারীদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের বক্তব্য লিখিত আকারে গ্রহণ করেন। রোববার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনকে অপসারণের সুপারিশ করা হয়। এ ঘটনার পর গতকাল রোববার রাতেই ভিসি পুলিশ পাহারায় তার বাংলো ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তখন থেকেই গুঞ্জন ছিল সোমবার যে কোনো সময় তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিবেন। শেষ পর্যন্ত ভিসি পদত্যাগ করায় মঙ্গলবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের জয়বাংলা চত্বরে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিং-এ শিক্ষার্থী মো. আল গালিব ভিসির পদত্যাগের বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জা?রি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন স্থ?গিতের ঘোষণা দেন। নতুন ভিসির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসবে এমনটাই মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। গত ১১ সেপ্টেম্বর আইন বিভাগের ছাত্রী ও ক্যাম্পাস সাংবাদিক ফাতেমা-তুজ জিনিয়াকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। জিনিয়ার বহিষ্কার নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে ১৮ সেপ্টেম্বর প্রশাসন তার বহিষ্কারাদেশ তুলে নিতে বাধ্য হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষার্থীরা ভিসি'র বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি ও নারী কেলেঙ্কারীর অভিযোগ এনে তার পদত্যাগের একদফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। অবশেষে আজ সোমবার সন্ধ্যায় সেই শুভক্ষণটি আসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে। তাই আনন্দ-উলস্নাসে ফেটে পড়ে তারা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে