শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষায় সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি পাচ্ছেন ফজলে হাসান আবেদ

যাযাদি রিপোর্ট
  ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০
ফজলে হাসান আবেদ

শিক্ষাক্ষেত্রে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ইদান পুরস্কার পাচ্ছেন ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ার এমেরিটাস স্যার ফজলে হাসান আবেদ। গবেষণা করে শিক্ষার উন্নয়নে যুগান্তকারী অবদান রাখায় এ বছর সম্মাননাটির জন্য মনোনীত হয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার এ পুরস্কারের জন্য তার নাম ঘোষণা করে হংকংভিত্তিক ইদান প্রাইজ ফাউন্ডেশন

প্রতিষ্ঠানটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, স্যার ফজলে হাসান আবেদের উন্নয়ন দর্শনের একটি অন্যতম স্তম্ভ হলো শিক্ষা। তিনি সব সময় বিশ্বাস করেছেন যে, বড় ধরনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তনের জন্য শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। গত প্রায় পাঁচ দশকে ব্র্যাকের প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক স্কুলগুলোতে শিক্ষা গ্রহণ করেছে অন্তত এক কোটি ২০ লাখ সুবিধাবঞ্চিত শিশু। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একটি সমন্বিত পদ্ধতিতে আনন্দময় পরিবেশে খেলাধুলার মধ্য দিয়ে পাঠদান করা হয়। একে বলা হয়, পেস্ন-বেইজড এডুকেশন। ব্র্যাক পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল, কিশোর-কিশোরীদের জন্য বিশেষায়িত শিক্ষাকেন্দ্র এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়।

ইদান পুরস্কারের প্রতিষ্ঠাতা ড. চার্লস চেন ইদান বলেন, জাতি, ধর্ম, অর্থনীতি এবং রাষ্ট্রের সীমানা ছাড়িয়ে স্বাস্থ্য, পরিবেশসহ মানুষের সর্বাঙ্গীন কল্যাণের জন্য জ্ঞান অর্জন করতে হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে মানসম্পন্ন গবেষণা ও যুগোপযোগী উন্নয়ন ঘটিয়ে বিশ্বের প্রতিটি দেশ একটি সমৃদ্ধ পৃথিবী বিনির্মাণে অবদান রাখবে। এটাই আমার প্রত্যাশা।

বর্তমানে বাংলাদেশ, উগান্ডা ও তানজানিয়ায় ব্র্যাকের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে মোট ৬৫৬টি পেস্ন-ল্যাব, যেখানে প্রতিদিন নানা কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছে অন্তত ১১ হাজার ৫০০ শিশু। এছাড়া শরণার্থী শিশুরা যাতে আনন্দময় পরিবেশে খেলায় খেলায় শিক্ষালাভের মাধ্যমে মানসিক ক্ষত কাটিয়ে উঠতে পারে, সে উদ্দেশ্যে হিউম্যানিটারিয়ান পেস্ন-ল্যাব নামে একটি মডেল তৈরি করেছে ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্ট।

স্যার ফজলে হাসান আবেদ বলেন, শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশ নিশ্চিত করতে শৈশবেই অনুকূল পরিবেশে শেখার সুযোগ করে দেয়াটা জরুরি। তিন থেকে পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের জন্য খেলায় খেলায় শিক্ষালাভের বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করে থাকে ব্র্যাক। এর মধ্যে শরণার্থী শিবিরের শিশুরাও আছে, যারা নানা মানসিক সমস্যা নিয়ে বড় হচ্ছে। শৈশবেই খেলাধুলা এবং হাসিখুশি থাকার পর্যাপ্ত সুযোগ দিলে তারাও সুস্থ মানুষ হিসেবে বড় হয়ে উঠতে পারবে। আমি আশা করি, বিশ্বনেতারা এ বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে এর উন্নয়ন ও প্রসারে এগিয়ে আসবেন।

আসছে ডিসেম্বরে হংকংয়ে আয়োজন হবে ইদান প্রাইজের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। সেখানে স্যার ফজলে হাসানকে একটি স্বর্ণপদক এবং পুরস্কারের অর্থমূল্য বাবদ ৩০ মিলিয়ন হংকং ডলার (৩.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৩৩ কোটি টাকা) দেয়া হবে। পুরস্কারের অর্থ নগদ এবং প্রকল্প তহবিল- এই দুই ভাগে সমানভাবে দেয়া হবে।

স্যার ফজলে আরও বলেন, ইদান পুরস্কার থেকে পাওয়া অর্থ ব্র্যাকের শিক্ষা কার্যক্রম বিস্তারে বিশেষ সহায়ক হবে। এ তহবিল আমরা দুটি কাজে ব্যয় করব। প্রথমত, আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম জোরদার করতে। দ্বিতীয়ত, আরও নতুন নতুন পেস্ন-ল্যাব প্রতিষ্ঠা করতে।

ইদান প্রাইজ ফাউন্ডেশন দুটি ক্ষেত্রে অবদানের জন্য পুরস্কারটি দিয়ে থাকে। এর একটি হচ্ছে শিক্ষা গবেষণা; এ বছর যেটি পাচ্ছেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। অন্যটি শিক্ষা উন্নয়ন; এবার এ পুরস্কারটি পাচ্ছেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কগনিটিভ ডেভেলপমেন্টাল নিউরোসায়েন্সের অধ্যাপক ঊষা গোস্বামী।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<67570 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1