বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অতিরিক্ত ভর্তির দায় এড়াতে পুনঃতদন্ত চান ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির ঘটনায় দায়ীদের ধরতে জোরেশোরে নেমেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানে ভর্তিকালীন দায়িত্বে থাকা সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শোকজ করা হয়েছে। দায় এড়াতে পুনঃতদন্ত চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে লিখিত দেন তিনি। কিন্তু কোনো তদন্তের উদ্যোগ না নিয়ে পরদিনই দুই শিক্ষক প্রতিনিধিকে শোকজ করা হয়। এমন ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটিতে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, গত ৯ সেপ্টেম্বর কারণ দর্শানোর চিঠি পাওয়া দুই শিক্ষক প্রতিনিধি হলেন- পদার্থবিদ্যা বিভাগের ড. ফারহানা খানম এবং মাধ্যমিক শাখার শরীরচর্চা শিক্ষক মুস্তারি সুলতানা। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। নোটিশে তাদের বেতন-ভাতা কেন বন্ধ করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। আগামী ২৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদেরকে সুস্পষ্ট বক্তব্যসহ জবাব দিতে বলা হয়েছে। সাবেক অধ্যক্ষের চিঠিতে তিন শিক্ষক প্রতিনিধি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষদের দায়ী করা হলেও রহস্যজনক কারণে তাদের শোকজ করা হয়নি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শোকজ নোটিশ পাওয়া শিক্ষক ড. ফারহানা খানম বলেন, শোকজের বিষয়ে তিনি শুনেছেন, কিন্তু কোনো চিঠি পাননি।

তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করেছেন অধ্যক্ষ, তার কাছে ফরম থাকে। অবৈধ ভর্তিগুলো তিনি করেছেন। দুই কারণে এগুলো অবৈধ ভর্তি। একটি হচ্ছে, এ ভর্তির কিছুই গভর্নিং বডি জানে না আরেকটি হলো অনুমোদন নেই।

ড. ফারহানা দাবি করেন, তিনি কোনো ভর্তি করাননি। সাবেক অধ্যক্ষ ভর্তি ফরমে কৌশলে স্বাক্ষর না করে ভর্তি করিয়েছেন। কিন্তু ব্যাংকে ভর্তির টাকা জমার রসিদে অধ্যক্ষের স্বাক্ষর আছে।

এদিকে এ ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করতে আবারও তদন্ত দাবি করে ৮ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাসিনা বেগম শিক্ষামন্ত্রী, উপমন্ত্রী এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে লিখিত আবেদন করেন।

এতে হাসিনা বেগম উলেস্নখ করেন, 'অতিরিক্ত ভর্তির সঙ্গে আমি জড়িত নই। ভর্তি ফরমে আমার স্বাক্ষরও নেই বলে দাবি করেন। ভর্তি প্রক্রিয়ায় তার আগের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, তিনজন শিক্ষক প্রতিনিধি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আর পুরো ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা পর্ষদ। তদন্ত করে প্রমাণ হয়েছে ৪৪৩ জন অতিরিক্ত ছাত্রী ভর্তি হয়েছে। কিন্তু ওই তদন্তে আমার কোনো বক্তব্যই নেয়া হয়নি। অথচ শুধু আমাকেই কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। অন্যদের কোনোভাবেই দায়ী করা হয়নি।'

এ ব্যাপারে হাসিনা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, তিনি ছাড়া আরও দুজন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ, শিক্ষক প্রতিনিধি ও গভর্নিং বডির সদস্য ছিলেন। তাকে ভর্তি প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হয়েছে। অথচ তাকে ফাঁসানো হচ্ছে।

ভর্তিকালে গভর্নিং বডির সভাপতির দায়িত্বে থাকা সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদার বলেন, সাবেক অধ্যক্ষ হাসিনা বেগম দ্বিতীয় থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত যে ভর্তি করেছেন, তার কিছুই গভর্নিং বডির কেউই জানেন না। ভর্তির ফরম থাকে অধ্যক্ষের কাছে। তিনিই ভর্তি করেছেন। তিনি নতুন তদন্তের দাবিকে স্বাগত জানান। পাশাপাশি সরকারের কাছে অনুরোধ করেন, ব্যাংকে ভর্তির টাকা জমার রসিদ যাচাই করা হোক। এতে আসল সত্য বেরিয়ে আসবে।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আহমেদ বলেন, মন্ত্রণালয়ের প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তবে হাসিনা বেগমের আগের সাবেক অধ্যক্ষের কাছে অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়ে জানতে চাইলে কেকা রায় চৌধুরী বলেন, তিনি দায়িত্ব নেয়ার আগেই মূল ভর্তি শেষ হয়। তার সময়ে অতিরিক্ত ভর্তি হয়নি।

উলেস্নখ্য, ভিকারুননিসায় এবার যে অতিরিক্ত ৪৪৩ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছে, তা মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) এক তদন্তে বেরিয়ে আসে। তাতে এ ভর্তির জন্য অধ্যক্ষকে দায়ী করা হয়। পাশাপাশি তাকে গত ২২ আগস্ট শোকজ করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<66672 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1