গাজীপুরের ধীরাশ্রম এলাকায় মাইওয়ান ইলেক্ট্রনিকসের সহযোগী প্রতিষ্ঠান মিনিস্টার হাই-টেক পার্ক লিমিটেডের কারখানায় বড় ধরনের অগ্নিকান্ড ঘটেছে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী উপ-পরিচালক মো. মামুনুর রশীদ জানান, শুক্রবার সকাল সোয়া ৭টার দিকে ছয়তলা কারখানা ভবনের ষষ্ঠ তলার গুদামে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়, পরে তা পাশের আরেকটি ছয়তলা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৬টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করে। বেলা ১২টা ৫৪ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয় বলে ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক (সদর দপ্তর) দেবাশীষ বর্ধন জানান।
আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো তথ্য দিতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। কেউ হতাহত হওয়ারও খবর পাওয়া যায়নি।
ওই কারখানায় অগ্নিনির্বাপণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না জানিয়ে ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সালেহ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, "পাশের মার্কওয়্যার লিমিটেডের জলাশয় ও পানি ব্যবহার করে আমাদের কাজ চালাতে হয়েছে।"
ঘটনাস্থলে উপস্থিত কলকারখানা অধিদপ্তরের সহকারী মহা পরিদর্শক মো. মোতালিব মিয়া বলেন, "এই কারখানায় নিয়মিত অগ্নি নির্বাপণ মহড়ার আয়োজন করা হতো না। ছয় তলার ওপরে গুদাম রাখারও নিয়ম নেই।"
"কারখানায় ফায়ার অ্যালার্ম ও অগ্নি নির্বাপণের পর্যাপ্ত সরঞ্জাম ছিল না বলে ২০-২৫ দিন আগেও আমরা নোটিস দিয়েছিলাম, কিন্তু কারখানা কর্তৃপক্ষ কোনো জবাব দেয়নি। এ কারণে কলকারখানা অধিদপ্তর তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।"
অগ্নি নির্বাপণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না রাখার বিষয়ে প্রশ্ন করলে মাইওয়ান ইলেক্ট্রনিকস ও মিনিস্টার হাই-টেক পার্ক লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক খান বিষয়টি এড়িয়ে যান।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি শুধু বলেন, "ওই সময় কারখানায় কাজ বন্ধ ছিল। কীভাবে ছয় তলায় আগুন লাগল তা আমরা এখনও বুঝতে পারছি না।"
কোম্পানির হেড অব মিডিয়া কে এমজি কিবরিয়া জানান, কারখানায় তৈরি বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক হোম অ্যাপস্নান্স প্রডাক্ট ষষ্ঠ তলায় মজুদ করে রাখা ছিল। তবে সেখানে কত টাকার পণ্যসামগ্রী ছিল, সে বিষয়ে কোনো ধারণা দিতে পারেননি তিনি।
মিনিস্টার হাই-টেক পার্ক লিমিটেডের ডিজিএম (অ্যাকউন্টস অ্যান্ড ফিন্যান্স) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ওই কারখানায় টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর সংযোজনের পাশাপাশি রাইস কুকার, ইস্ত্রিসহ বিভন্ন ইলেকট্রনিক পণ্য তৈরি করা হয়।
প্রায় দুই হাজারের মতো কর্মী এ কারখানার বিভিন্ন বিভাগে কাজ করেন। তবে শুক্রবার কারখানা বন্ধ ছিল বলে রফিকুল ইসলাম জানান।
এদিকে অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, সংরক্ষিত আসনের এমপি শামসুন্নাহার ভূঁইয়া, জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম এবং পুলিশ কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন।
জেলা প্রশাসক জানান, মিনিস্টার কারখানায় আগুনের কারণ খতিয়ে দেখতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে ছয় সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটিকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।