শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ঘুমধুম সীমান্তে স্থলমাইন আতঙ্ক

'কুতুপালং লম্বাশিয়া ও মধুরছড়া ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে অনেকের বাড়ি সীমান্তের কাছাকাছি। তারা কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে যাতে মিয়ানমারে যোগাযোগ করতে না পারে সেজন্য সীমান্তে মাইন পুঁতেছে মিয়ানমার সেনা ও বিজিপির সদস্যরা'
যাযাদি ডেস্ক
  ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০
সীমান্তে পোঁতা স্থলমাইন -সংগৃহীত

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তে নো ম্যানস ল্যান্ডে অবস্থানরত রোহিঙ্গা ও সীমান্ত এলাকার লোকজনের মধ্যে স্থলমাইন আতঙ্ক বাড়ছে।

স্থলমাইন বিস্ফোরণে নিহত মো. শাহজাহান (৩২) নামে এক রোহিঙ্গা যুবকের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধারের পর এ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

রোহিঙ্গারা বলছেন, কোনারপাড়া নো ম্যানস ল্যান্ডে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সেখান থেকে তাড়ানোর জন্য দীর্ঘদিন ধরে নানাভাবে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করছে মিয়ানমার। এর ধারাবাহিকতায় এবার সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া ঘেঁষে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) মাইন পোঁতা শুরু করেছে।

ঘুমধুম নো ম্যানস ল্যান্ডের মাঝি দিল মোহাম্মদ বলেন, সম্প্রতি কাঁটাতারের বেড়ার কাছে বিজিপির সদস্যদের আনাগোনা বেড়েছে। সবাই ধারণা করছেন, সীমান্তে তারা স্থলমাইন পোঁতা শুরু করেছে।

তিনি আরও বলেন, কোনারপাড়া নো ম্যানস ল্যান্ডে রোহিঙ্গারা অবস্থান নেয়ার পর থেকে মিয়ানমার সেনারা রাতের বেলায় ঢিল ছোড়া, গুলিবর্ষণসহ রোহিঙ্গাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য নানা ধরনের অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। আমাদের ধারণা, এর ধারাবাহিকতায় এখন তারা স্থলমাইন বসানো শুরু করে।

গত ৩ সেপ্টেম্বর সীমান্তের তুমব্রু থোয়াইংগাঝিরি থেকে শাহাজাহান নামে এক রোহিঙ্গা যুবকের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পের জি বস্নকের বাসিন্দা রুস্তম আলীর ছেলে। সবার ধারণা, স্থলমাইন বিস্ফোরণে তার মৃতু্য হয়েছে। এরপর থেকে সীমান্ত এলাকায় আবার স্থলমাইন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

কুতুপালং লম্বাশিয়া এলাকার রোহিঙ্গা নেতা খলিল মাঝি জানান, কুতুপালং লম্বাশিয়া ও মধুরছড়া ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে অনেকের বাড়ি সীমান্তের কাছাকাছি। তারা মাঝে-মধ্যে নো ম্যানস ল্যান্ড অতিক্রম করে কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে মিয়ানমারে যান। এ ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করার জন্য সীমান্তে মাইন পুঁতেছে মিয়ানমার সেনা ও বিজিপির সদস্যরা।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ঘুমধুমসহ আশপাশের সীমান্তে মিয়ানমার সেনাদের পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ মাইন বিস্ফোরণে নিহতের পর এলাকায় আবার আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনার পর থেকে সীমান্তের ঘুমধুম, তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, রেজু, আমতলী সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ে।

ঘুমধুম পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইমন চৌধুরী জানান, নো ম্যানস ল্যান্ডে শাহাজাহান নামে এক রোহিঙ্গা যুবকের ক্ষত-বিক্ষত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে। মরদেহটির শরীর থেকে দুই পা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পাওয়া গেছে। সীমান্তে মিয়ানমার বাহিনীর পুঁতে রাখা মাইন বিস্ফোরণে তার মৃতু্য হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কক্সবাজার ৩৪ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ জানান, বিষয়টি নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বৈঠকের প্রক্রিয়া চলছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<66661 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1