বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা দুর্নীতির অভিযোগে বিচার বিভাগীয় তদন্তসহ তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতি ও পদযাত্রা করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষকরা।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে 'দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর' ব্যানারে নতুন কলা ভবন থেকে পদযাত্রা শুরু করেন শিক্ষকরা।
পদযাত্রা শেষে পুরানো প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন তারা। এ ছাড়া একই দাবিতে বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কর্মবিরতিও পালন করেন তারা।
এ সময় অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, মহাপরিকল্পনার দুর্নীতির সঙ্গে এখন যোগ হয়েছে সন্ত্রাস। সন্ত্রাসী এবং আধিপত্য যদি অব্যাহত থাকে তাহলে এ সমস্যার সমাধান হবে না। শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) চলমান আন্দোলনের এক সংগঠকের ওপর হামলা করা হয়েছে। এ হামলা করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তি আনা যাবে না। তারা বলতে চান, সমস্যার সমাধান যেভাবে আসে সেভাবে আনেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্রম্নত শান্তি ফিরিয়ে আনেন।
তিনি আরও বলেন, গত কয়েক দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘটনাগুলো ঘটছে, এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও চ্যান্সেলর কার্যালয়ের অবহিত থাকার কথা। এসব নিয়ে সারাদেশে এখন প্রচুর আলোচনা হচ্ছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় জনগণের টাকায় চলে সেক্ষেত্রে এখানে কী হচ্ছে, সেটা জানার অধিকার দেশের জনগণের আছে।
বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শামীমা সুলতানা বলেন, 'আমরা কোনো মহাপরিকল্পনা দেখছি না। আমরা এখানে টাকা খাওয়ার কু-পরিকল্পনা দেখতে পাচ্ছি। উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবারতন্ত্র কায়েম করছেন। প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ে যে পদগুলো ভারপ্রাপ্ত করে রেখেছেন এসব তার স্বৈরাচারী মনোভাবের প্রকাশ করে। আমরা দাবি জানাই, অতিদ্রম্নত এ ভারপ্রাপ্তদের ভারমুক্ত করতে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পরিবারতন্ত্র চালু হয়েছে তার লাগাম টেনে ধরতে হবে।'
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক খবির উদ্দিন বলেন, 'আমাদের তিনটা দাবি। এর মধ্যে অন্যতম দাবি হলো- উপাচার্যের বিরুদ্ধে উত্থাপিত দুর্নীতির অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। আমরা অবাক হই, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, টাকা এখনো এলো না, সেটা ভাগবাঁটোয়ারা কীভাবে করা হয়? আমরা জানি, প্রকল্পের টেন্ডার নিতে হলে ৪০ শতাংশ টাকা লিকুইড মানি হিসেবে রাখতে হয়। সে টাকা ভাগবাঁটোয়ারা করলে কি দুর্নীতি হয় না? আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে তোলা এ অভিযোগ থেকে মুক্ত হতে চাই। আর উপাচার্যকে বলতে চাই, যদি অভিযোগ মিথ্যা হয়ে থাকে, তবে যারা অভিযোগ তুলছে, তাদের বিরুদ্ধে মামলা করুন।'
বাংলা বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম তালুকদারের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন-দর্শন বিভাগের অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক আনোয়ারুলস্নাহ ভূঁইয়া, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সাদিয়া আহমদ, অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, অধ্যাপক রায়হান রাইন প্রমুখ।