শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে ঝুঁঁকিপূর্ণ পারাপার, বাড়ছে দুর্ঘটনা

যাযাদি ডেস্ক
  ২৪ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

বন্দরনগর চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছেন পথচারীরা। অনেক স্থানে ফুটওভার ব্রিজ থাকলেও সে পথে চলাচলে আগ্রহ নেই কারও। আবার অনেক স্থানে ফুটওভার ব্রিজ না থাকায় ব্যস্ত সড়কে ঝুঁকি নিয়েই পার হয় মানুষ।

নগরের ব্যস্ততম এলাকা জিইসি মোড়ে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষকে রাস্তা পার হতে হয় চতুর্মুখী সড়কের ওপর দিয়ে। জিইসি এলাকায় বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, ব্যাংক-বীমা কার্যালয় রয়েছে। পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতাল, ভেটেরিনারী বিশ্ববিদ্যালয়, ইউএসটিসি, বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্র, চট্টগ্রামে ঝুঁঁকিপূর্ণ পারাপার বাড়ছে দুর্ঘটনা

ফয়'স লেক ও অলংকার মোড় যেতে যানবাহনগুলো এই সড়ক ব্যবহার করে। কিন্তু এখানে সড়ক পারাপারে নেই ফুটওভার ব্রিজ কিংবা আন্ডারপাস। জেব্রা ক্রসিং থাকলেও তা দৃশ্যমান নয়।

সিডিএ এভিনিউ'র জিইসি মোড়ের মতো নগরের অনেক এলাকাতেই ঝুঁকি নিয়ে মানুষকে রাস্তা পারাপার হতে দেখা যায়। দুই নম্বর গেট থেকে জিইসি, লালখান বাজার, টাইগারপাস, দেওয়ানহাট, চৌমুহনী, আগ্রাবাদ-বাদামতল, বনানী এলাকায় ফুটওভার ব্রিজ না থাকায় ব্যস্ত সড়কে রাস্তা পার হচ্ছেন পথচারীরা। একই অবস্থা নগরের বহদ্দারহাট-চান্দগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকার। আর এভাবে রাস্তা পার হতে গিয়ে গত ছয় মাসে ছোট-বড় ১৯টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।

নগর পরিকল্পনাবিদদের বিভিন্ন সময়ের জরিপে দেয়া হয়েছে বহু প্রস্তাবনা। কিন্তু তার অধিকাংশই বাস্তবায়ন হয়নি।

আইইবি, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের উপ-নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লোকমানুল আলমের মতে, সারা চট্টগ্রাম জুড়ে ওয়াসা, সড়ক ও জনপথ এবং গ্যাস, বিদু্যৎ, টেলিযোগাযোগ প্রভৃতি বিভাগ কাজ করে থাকে। কিন্তু কাজ করা হয় নিজস্ব বিভাগীয় মর্জিমাফিক। ব্যস্ততম সড়কে ফুটওভার ব্রিজ থাকাটা জরুরি।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির জরিপ অনুযায়ী, ২০১৮ সালে দেশে সড়ক, রেল, নৌ ও আকাশপথে দুর্ঘটনায় মোট ৭ হাজার ৭৯৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন হয়েছেন ১৫ হাজার ৯৮০ জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৮ সালের সড়ক নিরাপত্তাবিষয়ক বৈশ্বিক প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশে বছরে ২৪ হাজারের বেশি মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে। এসব দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে মূল সড়কের ওপর দিয়ে পথচারীদের যাওয়া-আসাকে।

এছাড়া বাসগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং চালকের বেপরোয়া মনোভাব শহরে সড়ক দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ বলে চিহ্নিত করেছেন সড়ক পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা ও গতিশীলতা আনতে নগরীতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করলে দুর্ঘটনা অনেকটাই কমবে বলে মনে করেন তারা।

জিইসি মোড়ে দায়িত্বরত পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের টিআই (পাঁচলাইশ) অনিল চাকমা বলেন, অধিকাংশ সময় তাড়াহুড়ো করে রাস্তা পারাপারেই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা। নগরের গুরুত্বপূর্ণ জিইসি মোড়ে ফুটওভার ব্রিজ না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হতে হয় পথচারীদের।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) সূত্রে জানা গেছে, ফুট ওভারব্রিজের অভাবে জিইসি মোড়ের যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। তাই সেখানে চার কোটি টাকা ব্যয়ে মানুষের রাস্তা পারাপারের জন্য দুটি ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একটি ফুট ওভারব্রিজ জিইসি মোড়ের দক্ষিণ পাশে জিইসি কনভেনশন সেন্টারের সামনে থেকে ব্যাংক এশিয়া ভবনের কাছাকাছি গিয়ে নামবে। অপরটি জামান হোটেলের সামনে থেকে কামাল স্টোরের সামনে নামবে।

সিডিএ পরিচালিত সমীক্ষায় দেখা গেছে, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর এবং জিইসি এলাকা দিয়ে প্রতিদিন গড়ে দেড় লাখ গাড়ি চলাচল করে। স্টিল স্ট্রাকচারের দুটি ফুট ওভারব্রিজ হলে জিইসি মোড়ে মানুষের সৃষ্ট যানজট থাকবে না। বাওয়া স্কুলের সামনের ফুট ওভারব্রিজের মতো এই দুটি ব্রিজও ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে রাস্তা পার হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন সিডিএ'র সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক উত্তর বিভাগের টিআই (প্রশাসন) মো. মহিউদ্দিন খান বলেন, অনেক পথচারীর মধ্যেও সচেতনতার অভাব আছে। বিভিন্ন স্থানে ফুটওভার ব্রিজ থাকা সত্ত্বেও কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে কিংবা মুঠোফোনে কথা বলা অবস্থায় ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হতে দেখা যায় পথচারীদের। তিনি বলেন, পথচারীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে সিএমপির ট্রাফিক বিভাগ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<63702 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1