বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
ডিসিদের প্রতি মন্ত্রীর নিদের্শ

পশুর হাট যেন অস্থির না হয়, সতকর্ থাকুন

যাযাদি রিপোটর্
  ২৭ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ২৭ জুলাই ২০১৮, ০০:২৫

কোরবানির পশুর হাটে প্রভাব খাটিয়ে কেউ যাতে ‘অস্থিরতা’ সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে সতকর্ থাকতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নিদের্শ দিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ।

ডিসি সম্মেলনের তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ কক্ষে নৌপরিবহন এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাযর্-অধিবেশন মন্ত্রী এই নিদের্শ দেন।

পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কোরবানির হাটে পশুর স্বাস্থ্যের বিষয়ে ডিসিদের নজর দিতে নিদের্শ দেয়া হয়েছে। হাটে যে পশুগুলো আসবে সেগুলোর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে। নিরাপদ ও সুন্দর স্বাস্থ্যের পশুগুলো যাতে কোরবানির জন্য যেতে পারে।

তিনি বলেন, ‘কোথাও কেউ যাতে (কোরবানির) মাকেের্টর ওপর প্রভাবে ফেলতে না পারে, জেলা পযাের্য় জেলা প্রশাসকই মূলত এটা নিয়ন্ত্রণ করেন। আমাদের কমর্কতার্রাও থাকবেন, সহায়তা দিয়ে তাদের এটাকে নিয়ন্ত্রণে রাখার কথা বলা হয়েছে।’

প্রতি বছরই কোরবানির ঈদের আগে পশুবাহী ট্রাকে চঁাদাবাজি, প্রভাব খাটিয়ে যত্রতত্র হাট বসানো এবং হাটে ইজারাদারদের জোর খাটানোসহ নানা অনিয়ম নিয়ে খবর আসে সংবাদমাধ্যমে। এসব অনিয়মের কারণে পশুর দাম বেড়ে যায়, বাজারে তৈরি হয় অস্থিরতা।

চঁাদ দেখা সাপেক্ষে সরকার এবার কোরবানির ঈদের ছুটি রেখেছে ২১ থেকে ২৩ আগস্ট। অথার্ৎ, ১২ আগস্ট জিলহজ মাসের চাঁদ উঠলে ২২ আগস্ট বাংলাদেশের মুসলমানরা কোরবানির ঈদ উদযাপন করবেন।

প্রাথমিকভাবে এবার ঈদে ঢাকায় ২২টি গরুর হাট বাসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। জোর-জবরদস্তি ঠেকাতে এবার কোরবানির পশুবাহী ট্রাকে হাটের নাম লিখে রাখার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

কোরবানির জন্য দেশে পযার্প্ত সংখ্যক পশু রয়েছে জানিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, ‘এবার প্রয়োজন থেকেও বেশি পশু আছে, ফলে এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। ম্যানেজমেন্ট ঠিক রাখতে পারলেই কোরবানি সুন্দরভাবে পার হয়ে যাবে।’

ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার করে গরু মোটা-তাজাকরণের বিষয়ে এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আগে স্টেরয়েড ব্যবহার করে গরু মোটাতাজা করা হতো, ওই মাংস মানুষের জন্য ক্ষতিকর।

‘এ বিষয়ে আমরা শতভাগ নিশ্চয়তা দিতে না পারলেও আমরা নিশ্চয়তা দিচ্ছি- এই দিক থেকে সন্দেহমুক্ত থাকতে পারেন।

নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, ‘প্রতিটি গরুতে না হলেও আমাদের হিসেবের মধ্যে যারা রয়েছে সেখানে গরুর দৈনন্দিন খাবার কী- সেটাও আমাদের মাঠ পযাের্য়র কমর্কতার্রা তদারকি করছেন। গরুর খাদ্যের বিকল্প যে পথ দেখানো হয়েছে, সেই পথে গরু ভালো মোটাতাজা হচ্ছে, সেখানে ওই খাবারের দরকার নেই।’

বেশি লাভের আশায় জাতির ক্ষতি না করতে খামার মালিকদের বোঝানো হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘তোমরাও ব্যবসা কর, জাতিকে ভালো খাবার দাও। এভাবে মানুষ কিন্তু ফিরে আসছে। ফরমালিনযুক্ত মাছ এখন এক প্রকার নেই, এটাও কিন্তু মোটিভেশন।’

ডিসিদের সঙ্গে আলোচনা প্রসঙ্গে মৎস্যমন্ত্রী বলেন, ইলিশ মাছ হারিয়ে যাচ্ছিল, সেটা উদ্ধার করা গেছে। জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে আলোচনাতেও বিষয়টি উঠে এসেছে।

‘এটার প্রটেকশন দিতে গেলে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া মৎস্য বিভাগের কমর্কতার্রা কাজ করতে পারে না। তারা সহযোগিতা দিচ্ছেন এজন্য তাদের ধন্যবাদও দিয়েছি, সহযোগিতা অব্যাহত রাখার দাবিও জানিয়েছি। তারা এ বিষয়ে আমাদের নিশ্চয়তা দিয়েছেন।’

ইলিশ মাছ ধরা বন্ধের সময় মৎস্যজীবীদের জন্য বরাদ্দ মাসে ৪০ কেজি করে চাল ডিসিরা সব জেলেকে দেয়ার প্রস্তাব রেখেছেন বলে জানান নারায়ণ চন্দ্র।

‘আমরাও সেটা নীতিগতভাবে মেনে নিয়েছি, কিন্তু বরাদ্দটা যেহেতু ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আসে সেখানে আমরা দাবি করব। আশা করি তারা বিষয়টিকে গুরুত্বসহকারে দেখবে।’

সাতক্ষীরা ও বাগেরহাটের ডিসি মানসম্মত চিংড়ি পোনা সরবরাহের কথা বলেছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরাও সেটা নীতিগতভাবে স্বীকার করেছি এবং আমরা চেষ্টা চালাচ্ছি আমাদের হ্যাচারিগুলোর উন্নতি করে কোয়ালিটি পোনা সাপ্লাই দিতে পারি কি না।

‘পোনা সাপ্লাই দিতে না পারলে অনেক সময় ভারত থেকে ঢুকে যায়। এই পোনাগুলো আসার ফলে দেখা যায় ভাইরাস বেশি অ্যাটাক করে। এ বিষয়েও তাদের বলেছি যত দ্রæত পারি আমরা এটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসব।’

মৎস্য সপ্তাহে পোনা অবমুক্ত করার ব্যাপারে ডিসিদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, পোনা কেনার জন্য যে টাকা পাঠানো হয়, সেটা যায় ইউএনও বরাবরে। ওই ক্রয় কমিটির সভাপতি ইউএনও, আর জেলা কমিটির সভাপতি ডিসি। প্রধানমন্ত্রী চান, ওই টাকা যাতে শতভাগ ব্যবহার করা হয়। ডিসিদের সেটা বলা হয়েছে।

‘এই টাকা দিয়ে পোনা কিনে যাতে ছাড়া হয় তা ডিসিরা যাতে ইউএনওর মাধ্যমে নিশ্চিত করেন, সেই নিদের্শ দেয়া হয়েছে।’

সরকারের চেয়ে প্রভাবশালী

কেউ নয়: নৌমন্ত্রী

সরকারের চেয়ে প্রভাবশালী কেউ নেই। তাই নদী রক্ষা ও দখল-দূষণ রক্ষায় জেলা প্রশাসকদের কঠোর নিদের্শনা দিয়েছে সরকার।

জেলা প্রশাসক সম্মেলনে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার সকালে এই নিদের্শনা দিয়েছে বলে সচিবালয়ে জানিয়েছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।

তিনি বলেন, চারদলীয় জোট সরকার দেশের নৌপথ ধ্বংস করে দিয়েছিল। আমরা নদী খননের মাধ্যমে তা উদ্ধারের চেষ্টা করছি। এর মধ্যে প্রায় দেড় হাজার কিলোমিটার নৌপথ খননের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। তারপরও দেখা যাচ্ছে অবৈধ বালু উত্তোলনের মাধ্যমে নৌপথ ধ্বংস করা হচ্ছে। নদীর পাড় ভেঙে যাচ্ছে। নদী তার গতিপথ হারাচ্ছে, পাল্টাচ্ছে। এভাবে নদী ধ্বংস করা হচ্ছে। আমরা এসব রোধে জেলা প্রশাসকদের দায়িত্ব ও কঠোর হতে নিদের্শ দিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, নদীর দখল ও দূষণ রোধে ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্বও জেলা প্রশাসকদের দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে নদী রক্ষায় নদীপাড়ের মানুষকে সচেতন করতে নদীর পাড় সংরক্ষণ, সীমানা নিধার্রণ, নদী পাড়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন, মানববন্ধন আয়োজন ও সংশ্লিষ্ট জনগণকে সম্পৃক্ত করার নিদের্শনা দিয়েছি। তাদের বলেছি মানুষের মধ্যে মৌলিক সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে এটা বোঝানো যে, নদীই বাংলাদেশের প্রাণ, অথর্নীতির মূল শক্তি ও প্রবাহপথ। তাই যত প্রভাবশালীই হোক না কেন নদী রক্ষায় সবার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<5311 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1