শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
শপথ নিলেন গাজীপুরের মেয়র

ঘরে ঘরে উন্নয়নের সুফল পৌঁছে দিতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনপ্রতিনিধি হিসেবে মানুষের সেবা করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা নিজেদের জনগণের সেবক মনে করি’
যাযাদি রিপোটর্
  ২৭ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ২৭ জুলাই ২০১৮, ০৯:৪৬
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার তার কাযার্লয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নবনিবাির্চত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে শপথবাক্য পাঠ করান Ñফোকাস বাংলা

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নবনিবাির্চত মেয়র এবং কাউন্সিলরগণ শপথ গ্রহণ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর তজেগাঁওস্থ কাযার্লয়ে বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শপথ নেন তারা। খবর বাসসের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলমের এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন কাউন্সিলরগণের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব জাফর আহমেদ খান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং গাজীপুরের রাজনৈতিক নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। নবনিবাির্চত মেয়র এবং ৭০ জন কাউন্সিলর এদিন শপথ গ্রহণ করেন। হাইকোটের্র নিদেের্শ কাউন্সিলরদের ৬টি আসনের নিবার্চন স্থগিত রয়েছে। গত ২৬ জুন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নিবার্চন অনুষ্ঠিত হয়। শপথ গ্রহণ শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনপ্রতিনিধিদের নিজ নিজ এলাকায় কাজ করে মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অজর্ন করার আহবান জানান। তিনি বলেন, ‘জনপ্রতিনিধি হিসেবে মানুষের সেবা করা আমাদের দায়িত্ব। আমরা নিজেদের জনগণের সেবক মনে করি এবং সেভাবেই কাজ করি।’ তিনি বলেন, ‘জনগণ ভোট দিয়েছে। আপনারা নিবাির্চত জনপ্রতিনিধি। সবাইকে একটা অনুরোধ করব দেশের মানুষের সেবা করতে হবে।’ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নবনিবাির্চত জনপ্রতিনিধিদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার সব এলাকার সমউন্নয়নে বিশ্বাসী। কাজেই দলমত নিবিের্শষে যারাই নিবাির্চত হয়েছেন আপনারা এলাকার মানুষের জন্য কাজ করতে পারবেন। আমরা পরিকল্পিত উন্নয়নের মাধ্যমে সে সুযোগ সৃষ্টি করেছি। সরকারের বিভিন্ন সফলতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছে এবং জনগণের ঘরে ঘরে এই উন্নয়নের সুফলকে পৌঁছে দিতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশকে ক্ষুধা মুক্ত করেছি। এখনো দারিদ্র্য মুক্ত করতে পারিনি। এই দেশকে আমরা দারিদ্র্য মুক্ত করে গড়ে তুলব। ইনশাল্লাহ ২০২১ সালে বাংলাদেশকে দারিদ্র্য মুক্ত করে স্বাধীনতার সুবণর্জয়ন্তী উদযাপন করব।’ বাংলাদেশ চায় রোহিঙ্গারা ফেরত যাক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে আগত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে, কিন্তু এখন চাচ্ছে তারা ফেরত যাক। বাংলাদেশে মিসরের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ওয়াহিদ আহমেদ শামসেলদিন বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর তেজগঁাওস্থ কাযার্লয়ে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এলে শেখ হাসিনা একথা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং মিসরের রাষ্ট্রদূত দ্বিপাক্ষিক স্বাথর্-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন। রোহিঙ্গা প্রসঙ্গও তাদের আলোচনায় উঠে আসে। রোহিঙ্গাদের সম্পকের্ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘আমরা তাদের মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছি, এখন আমরা চাচ্ছি তারা ফেরত যাক।’ শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এ বিষয়ে মিয়ানমার এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেছে, কিন্তু মিয়ানমার চুক্তি অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে না। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণাথীর্ শিবিরের গাদাগাদি অবস্থার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার এসব রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের জন্য একটি জায়গা তৈরি করছে, যেখানে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা একটু ভালো পরিবেশে বঁাচার সুযোগ পাবে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মিসরের সঙ্গে তার সম্পকের্ক সবোর্চ্চ গুরুত্ব দেয়। কারণ, স্বাধীনতা লাভের পর আরব দেশগুলোর মধ্যে মিসরই সবর্প্রথম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী এ সময় ১৯৭৪ সালের নভেম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রথম ঐতিহাসিক মিসর সফরের প্রসঙ্গ স্মরণ করে বলেন, সেই সফরেই দুই দেশের সম্পকের্র ভিত রচনা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী এ সময় ২০০৯ সালে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন (ন্যাম) সম্মেলনে যোগ দিতে তার মিসর সফরের কথাও উল্লেখ করেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, তিনি দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পকর্ এবং সহযোগিতাকে আরও বৃদ্ধির জন্য কাজ করবেন। তিনি বলেন, মিসর বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী এবং বাংলাদেশের একটি বৈদ্যুতিক তার কারখানা প্রতিষ্ঠায় প্রস্তুত আছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সন্ত্রাস এবং মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধেরও প্রশংসা করেন। মিসরের রাষ্ট্রদূত দুই দেশের সাংস্কৃতিক বন্ধনকে জোরদার করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বাংলাদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রীর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন বলে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে মিসরের বিনিয়োগকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, সরকার এজন্য দেশের বিশেষ অথৈর্নতিক অঞ্চলে জমি বরাদ্দের জন্য প্রস্তুত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মিসরের রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশে তার দায়িত্ব পালনকালে সবরকমের সাহায্য এবং সহযোগিতার বিষয়ে আশ্বাস দেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে