শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
ঢাকা দক্ষিণ সিটি

সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা

হ বিনামূল্যে নগরবাসীর দাফন ও সৎকারের ব্যবস্থা হ পরিবারে অবহেলিত জ্যেষ্ঠদের জন্য বৃদ্ধাশ্রম নিমার্ণ হ গণপরিবহনের নৈরাজ্য ঠেকাতে বিশেষ উদ্যোগ
যাযাদি রিপোটর্
  ২৬ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ২৬ জুলাই ২০১৮, ০০:১৭
বুধবার নগর ভবনে বাজেট ঘোষণা করেন মেয়র সাঈদ খোকন Ñযাযাদি

২০১৮-১৯ অথর্বছরের জন্য সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। বুধবার নগর ভবনের সেমিনার কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বাজেট ঘোষণা করেন তিনি। এর আগে সংস্থাটির বোডর্ সভায় সবর্সম্মতিতে বাজেট পাস হয়। বাজেটে রাজস্ব আয়সহ সরকারি ও বিদেশি দাতা সংস্থার অনুদানকে আয়ের উৎস হিসেবে ধরা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনের প্রথমেই ২০১৭-২০১৮ অথর্বছরের জন্য দুই হাজার ১৪ দশমিক ৩১ কোটি টাকার সংশোধিত বাজেটসহ ২০১৮-২০১৯ অথর্বছরের জন্য তিন হাজার ৫৯৮ দশমিক ৭৫ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করা হয়। এবারের বাজেটে নগরবাসীর জন্য নতুন কয়েকটি উদ্যোগের কথা জানান মেয়র। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ধনী গরিব সব মৃত মানুষের জন্য বিনামূল্যে দাফন ও শেষকৃত্য এবং সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে বৃদ্ধাশ্রম নিমার্ণ। এ সময় লিখিত বক্তব্যে মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ২০১৮-২০১৯ অথর্বছরে নিজস্ব উৎস থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিধার্রণ করা হয়েছে ৯০৯.৪২ কোটি টাকা। এরমধ্যে রেটস এন্ড ট্যাক্স বাবদ ৩৩০.০০ কোটি, বাজার সালামি ৩০৫.০০ কোটি, বাজার ভাড়া বাবদ ৩০.০০ কোটি টাকা। এছাড়া ট্রেড লাইসেন্স ফি বাবদ ৮০.০০ কোটি, বিজ্ঞাপন কর বাবদ ৫.০০ কোটি, বাস-ট্রাক টামির্নাল থেকে ৩.৪৭ কোটি, অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা বাবদ ৮.৫০ কোটি, রাস্তা খনন ফি বাবদ ২০.০০ কোটি, যন্ত্রপাতি ভাড়া বাবদ ৫.০০ কোটি, শিশুপাকর্ থেকে ৫.০০ কোটি, কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া বাবদ ২.৫০ কোটি, সম্পত্তি হস্তান্তর কর খাতে ১০০.০০ কোটি, ক্ষতিপূরণ বাবদ ১.০০ কোটি এবং পেট্রোল পাম্প বাবদ ২.০০ কোটি টাকা আয় হবে বলে আশা করছি। এছাড়া সরকারি মঞ্জুরি (থোক) খাতে ৭০.০০ কোটি ও সরকারি বিশেষ মঞ্জুরি (থোক) বাবদ ৪৩৯.৮৬ কোটি, সরকারি ও বৈদেশিক সহায়তামূলক প্রকল্প খাতে ২০৪৮.৬২ কোটি টাকা সাহায্য হিসেবে পাওয়ার আশা করছি। ব্যয়ের খাতগুলো হচ্ছে : বেতন ভাতা বাবদ ৩৪০.০০ কোটি, সড়ক ও ট্রাফিক অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন খাতে ৭৪২.৮৩ কোটি, ভৌত অবকাঠামো নিমার্ণ/উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতে ৩৯৫.২৬ কোটি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানি ও গ্যাস বাবদ ১০৯.০০ কোটি, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ২৭.৭৫ কোটি, মশক নিয়ন্ত্রণ কাযর্ক্রম বাবদ ২৬.০০ কোটি, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম সরবরাহ বাবদ ৭৫৬.১৬ কোটি, বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প খাতে ১৫.০০ কোটি, অপ্রত্যাশিত উন্নয়ন খাতে ব্যয় বাবদ ৫.০০ কোটি, বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা বাবদ ৬.৫০ কোটি, ফিস বাবদ ১৪.৭০ কোটি, কবরস্থান/শ্মশানঘাট সংস্কার ও উন্নয়ন খাতে ৪২.৫০ কোটি, নাগরিক বিনোদনমূলক সুবিধাদি উন্নয়ন খাতে ১৪৩.৭৫ কোটি, পরিবেশ উন্নয়ন খাতে ১৩৮.৯৪ কোটি, প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন সংস্থার চঁাদা বাবদ ২.৬০ কোটি, ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন খাতে ১৭৪.২৮ কোটি, পাবলিক টয়লেট নিমার্ণ বাবদ ৫.৭৬ কোটি, ল্যান্ডফিল রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন বাবদ ১২১.৭ কোটি, বাস্তবায়িত প্রকল্পের বকেয়া ম্যাচিং ফান্ড বাবদ ৪৩৯.৮৬ কোটি, নতুন বাজার নিমার্ণ বাবদ ২০০.০০ কোটি, জবাইখানা নিমার্ণ বাবদ ৬৬.৫৬ কোটি, পরিচ্ছন্নতাকমীর্ নিবাস নিমার্ণ বাবদ ৬৪.৫০ কোটি, মাতৃসদন খাতে ৫.২০ কোটি, বজর্্য ব্যবস্থাপনার বিশেষ উদ্যোগ খাতে ১০.৭০ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ রাখা হয়েছে। যানজট নিরসনে বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, নগর পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা আনয়নের লক্ষ্যে বাসরুট র‌্যাশনালাইজেশন ও কোম্পানির মাধ্যমে বাস পরিচালনার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কপোের্রশনের মেয়রকে আহŸায়ক করে একটি কমিটি গঠন করে দেয়া হচ্ছে। আশা করা যায় এ কমিটির মাধ্যমে নগর পরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। যার ফলে যানজট আরও কমে আসবে বলে আশা করা যায়। তাছাড়া মেগা প্রকল্পের আওতায় নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূণর্ স্থানে ৩০টি বাস বে/বাস স্টপেজ কাযাের্দশ প্রদান করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩টির কাজ শুরু হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণের ৮টি এলাকায় ৫৬০টি স্থানে অনস্ট্রিট পাকির্ং চালু করা হয়েছে। এছাড়া ৪টি ইন্টারসেকশন উন্নয়নসহ ৭১টি স্বচ্ছ পুলিশ বক্স নিমার্ণ কাজ চলমান রয়েছে। ইতোমধ্যে ১৮টি পুলিশ বক্সের নিমার্ণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে এবং ৫টি উদ্বোধন করা হয়েছে। সিটি সেন্টারে পাকির্ংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। নাগরিকদের ভেতর অনেকেই শেষ বয়সে এসে পরিবার কতৃর্ক পরিত্যক্ত হয়ে অথবা পরিবার-পরিজনহীন নিঃস্ব অবস্থায় আশ্রয়স্থল হারিয়ে পথে-ঘাটে, রেলস্টেশনসহ নানাস্থানে মানবেতরভাবে জীবন-যাপন করতে বাধ্য হন। এটি খুবই হৃদয়বিদারক ও মমর্স্পশীর্। এ বিষয়টি উপলব্ধি করে করপোরেশনের পক্ষ থেকে শুধুমাত্র বৃদ্ধদের জন্য অস্থায়ীভাবে ১টি বৃদ্ধাশ্রম নিমাের্ণর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এ সময় এলইডি বাতি স্থাপন, জনতার মুখোমুখি জনপ্রতিনিধি অনুষ্ঠান, ডিজিটালাইজড এলইডি বিলবোডর্ স্থাপন, খেলার মাঠ ও পাকর্ উন্নয়নে জলসবুজে ঢাকা প্রকল্প, অনলাইন হোল্ডিং ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স চালুকরণ, আধুনিক জবাইখানা নিমার্ণ, কবরস্থান/শ্মশানঘাট উন্নয়ন, এসটিএস নিমার্ণ, পাবলিক টয়লেট নিমার্ণ, অবৈধ বিলবোডর্, ব্যানার, ফেস্টুন অপসারণ, রাস্তা, ফুটপাথ, নদর্মা নিমার্ণ ও উন্নয়ন, জলাবদ্ধতা দূরীকরণ, বাজার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন, হাসপাতাল উন্নয়ন/সংস্কার, খাল উদ্ধার, বজর্্য ব্যবস্থাপনা, কুরবানির বজর্্য অপসারণ, ৮ ইউনিয়নের উন্নয়ন, ফুটওভার ব্রিজ নিমার্ণ, মশক নিধন কাযর্ক্রম, ওষুধ ও ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা, স্বচ্ছ ঢাকা কমর্সূচি, সবুজ ঢাকা কমর্সূচি, আধুনিক যান ও যন্ত্রপাতি সংযোজন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন, ঢাকা আরবান আপগ্রেডিং প্রজেক্ট, পরিচ্ছন্নতাকমীর্ নিবাস নিমার্ণ, রাস্তা খনন, হকার পুনবার্সন, ওয়েস্ট বিন স্থাপন, ভেজালবিরোধী অভিযান, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কমর্সূচি, মাতুয়াইল ল্যান্ডফিল সম্প্রসারণ, নদীর নাব্য সচলসহ ঢাকার দুযোর্গ ব্যবস্থাপনা নিয়ে করপোরেশনের বিভিন্ন কাযর্ক্রম তুলে ধরে হয়। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে সংস্থাটির প্রধান নিবার্হী কমর্কতার্ খান মোহাম্মদ বিল্লালসহ করপোরেশনের ঊধ্বর্তন কমর্কতার্ এবং ওয়াডর্ কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে