শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
ঈদ কেনাকাটা

নয়া পোশাকের ভিড়েও থ্রি-পিসই বিক্রির শীর্ষে

এস এম মামুন হোসেন
  ২৬ মে ২০১৯, ০০:০০
ঈদের পোশাকে আধুনিকতার ভিড়েও থ্রি পিসের চাহিদা ক্রেতাদের কাছে এখনো বেশি। ছবিটি শনিবার পান্থপথ দেশীদশের দেশাল শোরুম থেকে তোলা -আমিনুল ইসলাম শাহীন

ঈদবাজারে দেশি-বিদেশি ঘারারা-সারারা, শর্ট-লং গাউন, স্কার্টসহ নানা বাহারি পোশাকের ভিড় থাকলেও প্রচলিত থ্রি-পিসই বিক্রির শীর্ষে রয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, মার্কেট ভরা পশ্চিমা ধাচের বাহারি পোশাক মূলত সমাজের উঁচুতলার নির্দিষ্ট ক্রেতাদের টার্গেট করেই বাজারে আনা হয়। তবে সমাজের বেশিরভাগ নারীই প্রচলিত থ্রি-পিস পরতে আগ্রহী। আর এ কারণেই বরাবরের মতো বিক্রেতাদের কাছে সাধারণ থ্রি-পিসই 'হট আইটেম' হিসেবে স্থান পেয়েছে।

তিনটি কাপড়ের একটি পোশাক। এরই নাম থ্রি-পিস। মূলত বাঙালি সমাজের মূল্যবোধের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নারীরা একটু বড় ও বেশি কাপড়ই পরে থাকেন। অতীতে শাড়ি বাঙালি নারীর প্রধান পোশাক হলেও কালক্রমে তার স্থান দখল করে নিয়েছে তিন টুকরা কাপড়ের এ পোশাকটিই। ফ্যাশন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পরায় স্বাচ্ছন্দ্য, পুরো শরীর ঢেকে রাখার সুবিধা এবং দেখায় সৌন্দর্যের কারণে পোশাকটি গত কয়েক দশকে এ দেশের নারীদের পছন্দের শীর্ষ তালিকায় উঠে এসেছে।

তবে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের নামিদামি বিপণিবিতানগুলোতে গেলে মনে হতে পারে এ দেশের নারীদের সবাই ঘারারা, সারারা, হাতা কাটা লং গাউন, স্কার্টইসহ পশ্চিমা পোশাকই পরে থাকেন। তবে দৃশ্যপট বদলে যায় এসব মার্কেটের বা অন্য মার্কেটের থ্রি-পিসের দোকানগুলোতে গেলে। পুরো মার্কেটের মধ্যে বাচ্চাদের কাপড়ের পর ক্রেতার ঢল সবচেয়ে বেশি থ্রি-পিসের দোকানগুলোতে। যেদিন মার্কেটে ক্রেতার সংখ্যা কম থাকে সেদিনও এসব থ্রি-পিসের দোকানগুলোতে ক্রেতার অভাব হয় না। থ্রি-পিসের দোকানদাররা জানালেন তাদের বিক্রিবাট্টা অন্যদের চেয়ে ভালো। ঈদের বাজার ছাড়াও সারা বছরের বিক্রির তালিকাতেও এগিয়ে থাকে থ্রি-পিস।

রাজধানীর নিউ মার্কেট ছাড়াও অধিকাংশ মার্কেটে বিক্রি হয় সাধারণ থেকে শুরু করে নামকরা সব থ্রি-পিস। অন্যদিকে বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্কের মতো মার্কেটগুলোতে বিক্রি হচ্ছে ঘারারা, সারার, শর্ট-লং গাউন, স্কার্টসহ নানা পশ্চিমা বাহারি পোশাক। তবে পাশাপাশি প্রতিটি মার্কেটে এর বিপরীত পোশাকও আছে। মার্কেটগুলোতে গিয়ে দেখা যায় সাধারণ থি-পিসের স্টলগুলোতেই ক্রেতার ভিড় সর্বাধিক। বিক্রিও হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। এসব

থ্রি-পিসের মধ্যে যেমন রয়েছে কম দামি কাপড় তেমনই আছে বেশি দামের কাপড়ও। ক্রেতারা তাদের চাহিদা ও সাধ্যমতো তা ক্রয় করছেন। এর বিপরীতে বাহারি পোশাকগুলো বিক্রি হয় অনেক চড়া দামে। ফলে সবার পক্ষে তা কেনা সম্ভব নয়। আবার সাধ্য থাকলেও সবার রুচির সঙ্গেও তা মানানসই নয়। তবে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল যেসব নারী বাহারি দেশি বিদেশি পোশাক পরে থাকেন তারা সাধারণ থ্রি-পিসও পরে থাকেন। তবে এসব বাহারি পোশাক পরেন সমাজের নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষ। এর বাইরে অধিকাংশ মানুষই এগুলো পরেন না।

বসুন্ধরা সিটির তিন তলায় মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের পোশাক রয়েছে। এর মধ্যে যেসব দোকান সাধারণ থেকে শুরু করে উন্নতমানের থ্রি-পিস এসেছেন তাদের দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা যায় বিপুল সংখ্যক ক্রেতা রয়েছে। আবার যেগুলো থ্রি-পিস না তুলে শুধু অন্য পোশাক তুলেছে তাদের স্টলে ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। তবে এর প্রতিটি পোশাকে বিপুল পরিমাণ লাভ হওয়ায় অনেক দোকানই শুধু দেশি বিদেশি এসব বাহারি পোশাকই তুলেছে।

নাভেরা নামের এক স্টলে গিয়ে দেখা যায় এখানে বিপুল সংখ্যক পোশাক তুলা হলেও ক্রেতার সংখ্যা কম। এর ম্যানেজার গৌতম ঘোষ জানালেন, 'আমাদের পোশাক সবার জন্য নয়। সমাজের নির্দিষ্ট সংখ্যক লোকই এসব আধুনিক পোশাক পরে থাকেন। এগুলো উচ্চ মূল্যে বিক্রি হয়। ফলে থ্রি-পিসের তুলনায় কম বিক্রি হলেও আমাদের খুব বেশি সমস্যা হয় না।'

ওই স্টলের উল্টো পাশে মনপুরা ফ্যাশনে গিয়ে দেখা যায় পুরো স্টলই সাধারণ থেকে আধুনিক সব থ্রি-পিসে ভরা। ক্রেতার সংখ্যাও উপছে পড়ছে। প্রায় বিশ জনের মতো বিক্রয়কর্মী ক্রেতাদের পোশাক দেখাতে আর বিক্রি করতে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। এর ম্যানেজার আবুল কালাম বলেন, 'আমাদের স্টলে বিক্রিবাট্টা ভালো। বিপুল সংখ্যক ক্রেতা। সামাল দিতে আমরা প্রায়ই হিমশিম খাচ্ছি। আমাদের দেশের বেশিরভাগ নারীইতো থ্রি-পিস পরে থাকেন। এ কারণে আমরা থ্রি-পিসই বিক্রিতে গুরুত্ব দেই। তবে যারা আধুনিক পশ্চিমা ধাচের পোশাক বিক্রি করেন তাদেরও নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্রেতা আছে। দেশের সাধারণ মানুষ থি-পিসই পরে থাকে। আর উচ্চবিত্ত ঘরের কিছু মানুষ পশ্চিমা স্টাইলের পোশাককেই গুরুত্ব দেন।'

বসুন্ধরা সিটিতে মার্কেট করতে আসা অনেক ক্রেতার সঙ্গে কথা বলেও জানা গেল বেশিরভাগেরই পছন্দে সবার আগে রয়েছে থ্রি-পিছ। তবে পশ্চিমা ধাচের বাহারি পোশাক পরার ক্রেতার সংখ্যাও প্রতি বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বৈচিত্র্যও বাড়ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<51176 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1