শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ

প্রতি জেলে পরিবার পাবে ৮৬ কেজি চাল

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৩ মে ২০১৯, ০০:০০

বঙ্গোপসাগরে প্রধান প্রজনন মৌসুমে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন মাছ ও চিংড়ি জাতীয় মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধের সময় চার লাখ ১৪ হাজার ৭৮৪ জেলে পরিবারকে ৮৬ কেজি করে চাল দেবে সরকার।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আরী খান খসরু বুধবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বর্তমানে ২৫৫টি বাণিজ্যিক মৎস্য ট্রলার, ৩২ হাজার ৮৫৯টি যান্ত্রিক এবং ৩৪ হাজার ৮১০টি অযান্ত্রিক ফিশিং বোট নির্বিচারে মৎস্য আহরণের ফলে আমাদের সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে।

যার পরিপ্রেক্ষিতে গবেষক, শিক্ষাবিদ ও সম্প্রসারণকর্মীদের মতামত অনুযায়ী, সামুদ্রিক মৎস্য অধ্যাদেশ-১৯৮৩ এর অধীন প্রণীত সংযোজিত বিধি ১৯ দ্বারা ২০১৫ সাল হতে প্রতি বছর প্রধান প্রজনন মৌসুমে ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন বাংলাদেশের সামুদ্রিক জলসীমায় বাণিজ্যিক ট্রলারসহ সব ধরনের নৌযান দ্বারা মাছ, চিংড়ি ও চিংড়ি জাতীয় মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করা হয়।

প্রতিমন্ত্রী খসরু বলেন, উপকূলীয় এলাকায় মাছ আহরণ ছাড়া জেলেদের আয়ের অন্য কোনো উৎস না থাকায় মাছ ধরা বন্ধের সময় জেলেদের জীবিকা নির্বাহ অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। ক্ষুধা নিবারণ ও দাদনদারদের ঋণের কিস্তি পরিশোধ করার জন্য জেলেদের আইন অমান্য করতে বাধ্য হয়।

'বিষয়টি বিবেচনায় রেখে প্রধানমন্ত্রীর একান্ত ও আন্তরিকতায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবারই প্রথমবার মাছ ধরা নিষিদ্ধের সময় উপকূলীয় জেলেদের ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় এনে খাদ্য সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।'

তিনি জানান, কর্মসূচির আওতায় উপকূলীয় ১২টি জেলাধীন ৪২ উপজেলার জেলে পরিবারগুলোকে মাসে ৪০ কেজি করে ৩৬ হাজার মেট্রিকটন চাল প্রদান করা হবে। ঈদের আগেই যাতে তারা খাদ্যশস্য পায় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভিজিএফ সহায়তা প্রদান করা হলে জেলে পরিবারের খাদ্যসংস্থান হওয়ায় তারা স্ব-উদ্যোগী হয়ে সামুদ্রিক ডিমওয়ালা মাছ ও চিংড়ি ধরা থেকে বিরত থাকবে এবং ডিমওয়ালা মাছ ও চিংড়ির নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি হবে। এতে সামুদ্রিক মাছ বৃদ্ধি পাবে।

মাছের তিনটি নিষিদ্ধ সময়ের জন্য আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ২২৫ কোটি টাকা বরাদ্দের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দেশে মোট ৪২ হাজার ৭৭ লাখ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়েছে। এর মধ্যে সামুদ্রিক মাছের উৎপাদন ৬ দশমিক ৫৬ লাখ মেট্রিক টন, যা দেশের মোট উৎপাদনের ১৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ফলশ্রম্নতিতে বাংলাদেশ এখন মাছ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ।

কোন দেশে কবে নিষিদ্ধ

প্রতিবেশী দেশসমূহে প্রজনন মৌসুমে সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু। তিনি জানান, ভারতের উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় ২০০০ সালের ২০ মে থেকে ১৫ এপ্রিল থেকে ৬০ দিন, মিয়ানমারে জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত, চীন বিগত ২০ বছর ধরে দক্ষিণ চীন সাগরে ১৭ মে থেকে ১ আগস্ট পর্যন্ত ৭৮ দিন, থাইল্যান্ডে আন্দামান সাগরে ১ এপ্রিল থেকে ২০ জুন তিন মাস, শ্রীলংকায় লবস্টার প্রজনন মৌসুমে ফেব্রম্নয়ারি, সেপ্টেম্বর-অক্টোবর এবং ওমানে কিংস ফিসের প্রজনন মৌসুম বিবেচনায় ১৫ আগস্ট থেকে ১৫ অক্টোবর মাছ ধরা নিষিদ্ধ।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার সমুদ্র অঞ্চলে মৎস্য নেই বললেই চলে। মৎস্য টিকিয়ে রাখার জন্য এই কর্মসূচি। ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ও জাটকা নিষিদ্ধ করায় ইলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সচিব রইছ উল আলম মন্ডল, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপিচালক আবু সাইদ মো. রাশেদুল হক, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়াসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<50718 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1