বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

কঠোর হতে বাধ্য করবেন না গ্রিন লাইনকে হাইকোর্ট

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৩ মে ২০১৯, ০০:০০

গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকারকে ক্ষতিপূরণের অর্থ পরিশোধ না করায় উষ্মা প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট।

বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ বুধবার বলেছে, গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষ আদালতের নমনীয়তাকে 'দুর্বলতা' মনে করে থাকলে তা হবে তাদের বড় ভুল।

গত বছরের ২৮ এপ্রিল যাত্রাবাড়ীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে গ্রিন লাইন পরিবহনের একটি বাস চাপা দেয় প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকারকে। তাকে বাঁচাতে একটি পা কেটে ফেলতে বাধ্য হন চিকিৎসকরা।

রাসেল সরকারের জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে সাবেক সাংসদ উম্মে কুলসুমের করা এক রিট আবেদনে চিকিৎসা খরচ বাদেও ৫০ লাখ টাকা দিতে গ্রিন লাইনকে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। পরে আপিল বিভাগেও ওই আদেশ বহাল থাকে।

এরপর গত ১০ এপ্রিল রাসেল সরকারকে ৫ লাখ টাকা পরিশোধ করে গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষ। বাকি ৪৫ লাখ টাকা পরিশোধের জন্য এক মাস সময় পায়।

ওই সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও আর কোনো অর্থ তারা পরিশোধ না করায় গত ১৫ মে আদালত আরও সাত দিন সময় দিয়ে ওই সময়ের মধ্যে পুরো অর্থ পরিশোধের বিষয়ে কড়া হুশিয়ারি দেয়।

সে অনুযায়ী বুধবার বিষয়টি আদালতে এলে বিচারক প্রথমেই গ্রিন লাইন পরিবহনের আইনজীবী অজি উলস্নাহর কাছে জানতে চান- আদেশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে কি না।

আইনজীবী অজি উলস্নাহ তখন বলেন, 'গত ২০ তারিখ থেকে গ্রিন লাইন পরিবহন আমার সাথে কোনো যোগাযোগ করেনি। তাই আমি নিজেকে এই মামলা থেকে প্রত্যাহার করে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি তাদের আচরণে খুবই অখুশি।'

এরপর রিট আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী খোন্দকার শামসুল হক রেজাকে সামনে ডেকে বিচারক জানতে চান, গ্রিন লাইন কর্তৃপক্ষ এ পর্যন্ত রসেলের চিকিৎসায় কী দিয়েছে।

আইনজীবী রেজা তখন আদালতকে বলেন, গ্রিন লাইন চিকিৎসা বাবদ ৩ লাখ টাকা দিয়েছে। এর আগে ৫ লাখ টাকার চেক দিয়েছে। ক্ষতিপূরণের বাকি টাকা দেয়ার যে নির্দেশনা ছিল- সে ব্যাপারে কোনো যোগাযোগ করেনি।'

আদালত এ সময় জানতে চায়, রাসেল এখন হাঁটাচলা করতে পারেন কি না।

আইনজীবী রেজা তখন বলেন, 'কৃত্রিম পা লাগানো হয়েছে, এখন ক্র্যাচে ভর করে হাঁটতে পারেন।'

আদালত কক্ষের পেছনের সারিতে বসা রাসেল তখন ক্র্যাচে ভর করে ডায়াসের কাছাকাছি আসেন।

এ পর্যায়ে রাসেলের আইনজীবী আদালতকে বলেন, 'আমার যা মনে হয় তারা (গ্রিন লাইন) অর্থ না দেয়ার প্রক্রিয়া খুঁজছে। গণমাধ্যমে সেরকমই খবর এসেছে।'

বিচারক তখন বলেন, 'যারা ব্যবসা করবে তাদের মানবীয় মূল্যবোধ থাকা উচিত। আমাদের সব উদ্বেগ সামগ্রিকভাবে আদেশে প্রতিফলিত হয় না। সবকিছু তো আর আদালতের আদেশ দিয়ে হয় না। আমরা শপথ নিয়েছি, আমাদের কারো প্রতি কোনো রাগ, অনুরাগ, বিরাগ নেই। কিন্তু আমাদের কাছে গ্রিনলাইনের আচরণ ভালো লাগেনি।'

এরপর আইনজীবী অজিউলস্নাহকে উদ্দেশ করে বিচারক বলেন, 'আপনি তো এখনো আইনজীবী আছেন। যোগাযোগ করেন। নমনীয়তাকে দুর্বলতা মনে করার কোনো কারণ নেই। আমাদের কঠোর হতে বাধ্য করবেন না।'

পরে এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ২৫ জুন দিন রেখে শুনানি স্থগিত করে আদালত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<50714 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1