শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

আড়তে হাজিরর্ যাব, ১২ হাজার কেজি আম নষ্ট

হ কার্বাইড দিয়ে পাকানো হয়েছে অপরিপক্ব আম হ ৩ ব্যবসায়ীকে ১২ লাখ টাকা জরিমানা হর্ যাব দেখে পালিয়ে যান অন্য ব্যবসায়ীরা
যাযাদি রিপোর্ট
  ২৩ মে ২০১৯, ০০:০০
ধ্বংস করা হচ্ছে কার্বাইডযুক্ত আম -বিডিনিউজ

রাজশাহীর বাগান থেকে হিমসাগর আম পাড়ার কথা আগামী ২৮ মে। এরপর তা ঢাকায় আনার কথা। এমনটাই নির্দেশনা ছিল রাজশাহীর জেলা প্রশাসনের। সাতক্ষীরার ল্যাংড়া ৬ জুনের পর বাজারে আসার কথা। কিন্তু এই হিমাসগর ও ল্যাংড়া আম এখনই মিলছে ঢাকায়।

বুধবার সকালের্ যাব সদস্যদের নিয়ে যাত্রাবাড়ীর ফলের আড়তে হাজির হনর্ যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। তিনি দেখতে পান ফলের আড়তে শুধু হিমসাগর আর ল্যাংড়ার পেটি।

অভিযানের্ যাবের সঙ্গে ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং বিএসটিআইয়ের প্রতিনিধিরা। তারা বললেন, ক্যালসিয়াম কার্বাইড ব্যবহার করে আমগুলো পাকানো হয়েছে।

তাদের মতামত পেয়েই মোট ১২ হাজার কেজি অর্থাৎ ৩২১ মণ আম জব্দ করা হয়। পরে একটি পিকআপ ভ্যানের চাকার নিচে পিষ্ট করা হয় আমগুলো। অভিযানে ৩ ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হয়েছে ১২ লাখ টাকা।

গতকাল সকালে যাত্রাবাড়ীর আড়তে অভিযান চালানোর শুরুতে সারওয়ার আলমকে ওর্ যাব সদস্যদের দেখে অনেকেই দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যান।

এরপর তিনটি দোকানে গিয়ে হিমসাগর আম দেখতে পানর্ যাব সদস্যরা। আমগুলোর অধিকাংশই নরম ও পাকা ছিল। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মতামত এবং ব্যবসায়ীদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আমে কেমিক্যাল মেশানোর কথা নিশ্চিত হন ম্যাজিস্ট্রেট।

দীর্ঘ কয়েক বছর ফলের আড়তে অভিযান করা ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, 'বাজারে এখন শুধু গুটি আম থাকার কথা। ব্যবসায়ীরা ক্যালসিয়াম কার্বাইড মিশিয়ে অপরিপক্ব হিমসাগর আমকে পরিপক্ব করে তুলছে, যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। আরও ১৫ দিন আগে থেকে বাজারে হিমসাগর আম দেখা যাচ্ছে। ল্যাংড়া আসতে আরও আট দিন বাকি। এগুলো সব কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো। এ বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্ট একটা আদেশও দিয়েছেন। তাই বাজার মনিটরিংয়ের অংশ হিসেবে এই অভিযান।'

আমে কেমিক্যাল মেশানোর কথা স্বীকার করে সাদ্দাম হোসেন নামে অভিযুক্ত এক আম ব্যবসায়ী বলেন, 'আমাদের সাতক্ষীরা থেকে ফোন দিয়ে বলেছে, এখানে আম পেকে গেছে, দ্রম্নত নিয়ে যাও। আমরা নিজেরাও জানি পাকে নাই, কিন্তু তাদের চাপাচাপিতে আমাদের আম কিনতে হয়েছে। আম এনে দেখি এগুলো পাকেনি। তাই কার্বাইড দিয়ে পাকানো হয়েছে।'

সরকারের কৃষি তথ্য সার্ভিসের (এআইএস) তথ্য অনুযায়ী, কেমিক্যালমিশ্রিত ফল খেলে মানুষ দীর্ঘমেয়াদি নানা রকম রোগে বিশেষ করে বদহজম, পেটেরপীড়া, পাতলা পায়খানা, জন্ডিস, গ্যাস্ট্রিক, শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, লিভার ও কিডনি নষ্ট হওয়াসহ ক্যান্সারের মতো জটিল রোগের সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া নারীরা এর প্রভাবে বিকলাঙ্গ শিশুর জন্ম দিতে পারে। শিশুরা বিষাক্ত পদার্থের বিষক্রিয়ার ফলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

অভিযান শেষে সংবাদ সম্মেলনে ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, যারা আমের ব্যবসা করে তারা কেউ চাষি না। তারা ব্যবসায়ী। তারা ইতোমধ্যে আমের বাগান কিনে ফেলেছে। তাদের মধ্যে আগে বাজারে আম নেয়ার একটি প্রতিযোগিতা কাজ করে। তাই তারা মনে করেছিল আম এখন বাজারে এনে ১৫০ টাকায় বিক্রি করবে। তাই এগুলো এনে বিক্রি করছিল।

বাজারের অন্যান্য ফলে কেমিক্যালের ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব মিলে বাজারে ফলের অবস্থা ভালো। বাজারে আগে ফরমালিন মেশানোর মতো ঘটনা ঘটতো, সেটা এখন নেই। এ বছর শুধু তারা মেয়াদোত্তীর্ণ খেঁজুর পেয়েছেন।

উলেস্নখ্য, রাজশাহী জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গুটি আম ১৫ মে, গোপালভোগ ২০ মে, রানীপছন্দ ও লক্ষ্ণা বা লক্ষ্ণণভোগ ২৫ মে, হিমসাগর বা ক্ষীরসাপাত ২৮ মে, ল্যাংড়া ৬ আগামী জুন, আম্রপালি, ফজলি ও সুরমা ফজলি ১৬ জুন এবং আশ্বিনা আম পাড়া যাবে আগামী ১ জুলাই থেকে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<50712 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1