শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এনবিআরের সার্ভারে ঢুকে পণ্য পাচার, অনুসন্ধানে দুদক

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৬ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে কর্মকর্তাদের সরকারি আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে পণ্য পাচারের ঘটনা অনুসন্ধানে এবার মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সোমবার এ বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফের নেতৃত্বে একটি অনুসন্ধান দল গঠন করেছে সংস্থাটি।

অনুসন্ধানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন আমলে নিয়ে কমিশন এ বিষয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়। ভুয়া আইডি ব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের সহায়তায় পণ্য খালাসের মাধ্যমে রাজস্ব ফাঁকি ও অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি অনুসন্ধান করবে দুদক।

২৭ মার্চ একটি দৈনিকে 'সংঘবদ্ধ জালিয়াতি: এনবিআরের সার্ভারে ঢুকে পণ্য পাচার' শিরোনামে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, সংঘবদ্ধ একটি চক্র তিন বছরের বেশি সময় ধরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সার্ভারে অনুপ্রবেশ করে ওই সার্ভারের অবৈধ ব্যবহার করেছে। এ সময়ে চক্রটি শত শত কোটি টাকার পণ্য চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছাড় করে নিয়ে গেছে।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের এক তদন্তের সূত্রে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সংঘবদ্ধ চক্রটি ২০১৬ সাল থেকে ৩ হাজার ৭৭৭ বার এনবিআরের সার্ভারে ঢুকেছে। এ ছাড়া চিঠিও জাল করা হয়েছে। আর এতে সহায়তা করেছেন চট্টগ্রাম কাস্টম, বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত বেসরকারি সংস্থার কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী।

যেভাবে জালিয়াতি: আমদানি করা পণ্যের শুল্কায়ন থেকে শুরু করে সবকিছুই হয় এনবিআরের 'অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেম' নামের একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে। এনবিআরের কার্যালয় থেকে নিয়ন্ত্রিত এই সফটওয়্যার দেশের সব বন্দরে ব্যবহার করা হয়। এর মাধ্যমে পণ্য খালাস যেমন করা যায় তেমনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধও করা যায়।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে বিপুল পরিমাণ পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরে আনা হয়েছে- এমন খবরে তারা আমদানি করা ২২টি কনটেইনার স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় ছাড় করানো বন্ধ (লক) করে দিয়েছিলেন শুল্ক কর্মকর্তারা। কিন্তু পরে দেখা যায়, সেই কনটেইনারগুলো নামমাত্র শুল্ক দিয়ে ছাড় করানো হয়েছে। দুজন কাস্টমস কর্মকর্তার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে রাজস্ব বোর্ডের সফটওয়্যার থেকেই এসব চালান ছাড় করে দেয়া হয়। অথচ এই দুই কর্মকর্তার কেউই বন্দরে কর্মরত নেই। যে দুই কর্মকর্তার নামে আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে পণ্য খালাস করা হয়েছে, তারা হলেন ডি এ এম মহিবুল ইসলাম ও ফজলুল হক। মহিবুল ইসলাম ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে চাকরি শেষে অবসরে যান। ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেড় বছর তিনি চট্টগ্রাম বন্দরে ছিলেন। আর ফজলুল হক ২০০৯ সাল থেকে মধ্যে এক বছর বাদে ২০১৫ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত প্রায় ছয় বছর চট্টগ্রাম বন্দরে কর্মরত ছিলেন। নিয়ম অনুসারে, একজন কর্মকর্তা বন্দরে নিয়োগের পর পদ ও দায়িত্ব বিবেচনা করে তার নামে আইডি ও পাসওয়ার্ড তৈরি করে দেয়া হয়। আর কর্মকর্তারা কর্মস্থল ত্যাগ করার সময় লিখিতভাবে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানালে সেই আইডি বন্ধ করে দেয়া হয়।

এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রমনা থানায় এ ঘটনায় একটি মামলাও হয়েছে। মামলার তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<45568 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1