শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা বিতাড়ন: আইসিসির রুলিং চায় বাংলাদেশ

যাযাদি ডেস্ক
  ১৯ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী

মিয়ানমারের রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের বিতাড়নের মাধ্যমে সীমান্তে যে সংকট তৈরি করা হয়েছে, সে বিষয়ে বাংলাদেশ হেগের আন্তজাির্তক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) ‘রুলিং’ প্রত্যাশা করে বলে জানিয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

রোম সংবিধি গ্রহণের বিংশতম বাষির্কী উপলক্ষে নেদারল্যান্ডসের হেগে সোমবার আন্তজাির্তক অপরাধ আদালত আয়োজিত একটি সিম্পোজিয়ামে বাংলাদেশের স্পিকার এ কথা বলেন।

মঙ্গলবার সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুতদের শান্তিপূণর্ ও স্থায়ী প্রত্যাবাসনে আন্তজাির্তক সম্প্রদায়ের অব্যাহত কাযর্কর ভ‚মিকা চেয়েছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

তিনি সিম্পোজিয়ামে বলেন, ‘সক্রিয় সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ আইসিসির কাছে রোহিঙ্গাদের বলপূবর্ক অনুপ্রবেশ করানোর বিষয়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রুলিং প্রত্যাশা করে।’

রোহিঙ্গা বিতাড়নের অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা প্রশ্নে বাংলাদেশের মতামত জানতে চেয়ে গত মে মাসে চিঠি দিয়েছিল হেগের আন্তজাির্তক আদালত।

জুনের শুরুতে বাংলাদেশ সরকার ওই চিঠির জবাব দিয়েছে বলে সে সময় জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। কিন্তু সেখানে মিয়ানমারের বিচারের পক্ষে মত দেয়া হয়েছে কিনা, তা তিনি স্পষ্ট করেননি তখন।

এখন হেগের আদালতে অনুষ্ঠিত সিম্পোজিয়ামে বাংলাদেশের স্পিকারের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তা অনেকটা স্পষ্ট হলো।

সিম্পোজিয়ামে স্পিকার বলেন, ‘সম্প্রতি বিশ্ববাসী মিয়ানমার কতৃর্ক একটি সমৃদ্ধ ও ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দেয়ার মত হৃদয়বিদারক ঘটনা প্রত্যক্ষ করল।

জাতিসংঘ ও জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন এ ঘটনাটিকে জাতিগত নিধন ও গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। এখন বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের শান্তিপূণর্ ও স্থায়ী প্রত্যাবাসনে প্রয়োজন আন্তজাির্তক সম্প্রদায়ের অব্যাহত ও কাযর্কর ভ‚মিকা।’

রাখাইনে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ওই দমন-পীড়নের মুখে গত আগস্ট থেকে এ পযর্ন্ত সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। মিয়ানমারের বাহিনীর ওই অভিযানকে ‘জাতিগত নিমূর্ল অভিযান’ হিসেবে বণর্না করে আসছে জাতিসংঘসহ আন্তজাির্তক বিভিন্ন সংস্থা।

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা রাখাইনে তাদের গ্রামে গ্রামে নিবির্চারে হত্যা, ধষর্ণ, জ্বালাও-পোড়াওয়ের ভয়াবহ বিবরণ দিলেও মিয়ানমার বরাবরই সেসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে।

মিয়ানমার আন্তজাির্তক অপরাধ আদালতের সদস্য না হওয়ায় সেখানে সংঘটিত অপরাধের বিচার করার সরাসরি কোনো এখতিয়ার এই আদালতের নেই। কিন্তু লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে বিতাড়িত করে যেভাবে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য করা হয়েছে, এর বিচার করার এখতিয়ার আন্তজাির্তক অপরাধ আদালতের আছে কিনা, তা জানতে রুল চেয়ে হেগের ওই আদালতের কেঁৗসুলি ফাতোও বেনসুদা গত এপ্রিলে একটি আবেদন করেন।

রোহিঙ্গাদের এভাবে বিতাড়নের বিষয়টি যেহেতু আন্তঃসীমান্ত অপরাধের পযাের্য় পড়ে এবং বাংলাদেশ যেহেতু আন্তজাির্তক অপরাধ আদালতের সদস্য, সেহেতু আইসিসি বিষয়টি বিচারের এখতিয়ার রাখে বলে রুল পাওয়া গেলে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করার পথ তৈরি হবে বলে আশা করছেন ফাতোও বেনসুদা।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের মতামত পাওয়ার পর মিয়ানমারের বক্তব্য জানতে চেয়ে সময় বেঁধে দিয়েছে হেগের আন্তজাির্তক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। আগামী ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে মিয়ানমারকে এর জবাব দিতে হবে।

হেগের সিম্পোজিয়ামে স্পিকার বলেন, মিয়ানমার আইসিসির সদস্য না হলেও বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এ-সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক তথা আইসিসির প্রি-ট্রায়াল চেম্বার -১ এ উপস্থাপন করেছে।

‘বাংলাদেশ সাবর্জনীন রোম সংবিধির গুরুত্বকে স্বীকার করে এবং আদালতের সব লক্ষ্য অজের্ন অব্যাহতভাবে সমথর্ন করে যাচ্ছে। অন্যায়, অবিচার ও বৈষম্যহীন বিশ্ব গড়তে বাংলাদেশ দৃঢ়প্রত্যয়ী। অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বিশ্ববাসীর সঙ্গে বাংলাদেশ সহযাত্রী হবে।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<4167 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1