শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গাদের দ্রুত ফেরাতে সহায়তার আশ্বাস আইওএমের

যাযাদি রিপোটর্
  ১৭ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ১৭ জুলাই ২০১৮, ০০:৪৯
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সোমবার জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার-বিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শ্রান বুগের্নার সাক্ষাত করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তাকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটি উপহার দেন Ñযাযাদি

নিজেদের সংস্থার অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দ্রæত করতে বাংলাদেশকে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে আন্তজাির্তক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক উইলিয়াম ল্যাসি সুইং। সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই আশ্বাস দেন। বাংলাদেশ সফররত সুইং সংস্থার ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে সৌজন্য সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রীর কাযার্লয় যান। রোহঙ্গা সংকট মোকাবেলায় এই সংস্থাটি শুরু থেকে কাজ করে আসছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যাকে বাংলাদেশের জন্য একটি বিষম চ্যালেঞ্জ হিসেবে বণর্না করেছেন আইওএম মহাপরিচালক। তিনি বলেছেন, তারা রোহিঙ্গা শরণাথীের্দর নিজ বাসভ‚মে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশকে পূণর্ সহযোগিতা করবে। এ ক্ষেত্রে তাদের অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে।’ আন্তজাির্তক পযাের্য় রোহিঙ্গা সংকটকে এশিয়ার এই অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় শরণাথীর্ সমস্যা হিসেবে দেখা হচ্ছে। মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে গত বছরের আগস্টে সেনা অভিযান শুরুর পর নিযার্তনের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে থাকে। আগে থেকে চার লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ছিল; এই দফায় আরও সাত লাখ আসার পর শরণাথীর্র সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়ে যায়। মুসলিম রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে মানতে নারাজ মিয়ানমার সরকার বিশ্বজুড়ে সমালোচনার মুখে শরণাথীের্দর ফেরত নিতে গত বছরের ডিসেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করে। তবে এরপর আর অগ্রগতি নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একদিন আগেই বলেছিলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করলেও বাস্তবে মিয়ানমার কোনো কাজ করছে না। রোহিঙ্গারা বতর্মানে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় শরণাথীর্ শিবিরে রয়েছে। সম্প্রতি ওই এলাকা ঘুরে সরেজমিন পরিস্থিতি দেখে এসেছেন আইওএম মহাপরিচালক। আইওএমসহ অন্যান্য সংস্থার কাজে সহযোগিতা করায় বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেন ল্যাসি সুইং। শেখ হাসিনা তাকে বলেন, রোহিঙ্গা শরণাথীের্দর জন্য বাংলাদেশের পক্ষে যা যা করা সম্ভব, তা করা হবে। শরণাথীের্দর অন্য স্থানে নিয়ে উন্নত আবাসন ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ চলছে বলেও জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, বিশেষ করে বন্যা ও ঘূণির্ঝড়ের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবেলা এবং শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। বৈঠকে আইওএমের মহাপরিচালকের সিনিয়র উপদেষ্টা ওয়েন লি, সংস্থাটির শরণাথীর্ সেল ইউনিটের প্রধান পেপপি সিদ্দিক উপস্থিত ছিলেন। আইওএম মহাপরিচালকের পর জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার-বিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শ্রান বুগের্নার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কাযার্লয়ে সাক্ষাৎ করেন। মিয়ানমার যাতে তার নাগরিকদের ফেরত নেয়, সে লক্ষ্যে জাতিসংঘকে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার আহŸান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, রোহিঙ্কা সংকট নিরসনে মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গেও বাংলাদেশ আলোচনা করেছে। জাতিসংঘ মহাসচিবের দূত রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান নেতৃত্বাধীন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে জাতিসংঘ কাজ করছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ঘর ছেড়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরত পাঠানোই তার প্রধান কাজ। রোহিঙ্গাদের বিষয়ে বাংলাদেশের নেয়া পদক্ষেপে নিজের সন্তুষ্টি প্রকাশ করে বুগের্নার আবাসন ও রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষার জন্য নেয়া পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। তবে তিনি একই সঙ্গে বলেছেন, নিযার্তনের মুখে পালিয়ে আসা এই রোহিঙ্গাদের মনে ভয় আছে। মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তির চিকিৎসার অবহেলায় শাস্তি এদিকে মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তির চিকিৎসা বা তার সম্পত্তির তালিকা প্রণয়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে অবহেলা করলে শাস্তির বিধান রেখে মানসিক স্বাস্থ্য আইন-২০১৮ এর খসড়ার চ‚ড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। খসড়া আইন অনুযায়ী, মানসিক অসুস্থতায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা বা তার সম্পত্তির তালিকা প্রণয়ন এবং ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে অবহেলা করলে অভিভাবক ও ব্যবস্থাপকদের অনধিক পঁাচ লাখ টাকা অথর্দÐ বা তিন বছর সশ্রম কারাদÐ বা উভয় দÐ দেয়া হবে। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কাযার্লয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই খসড়ার অনুমোদন দেয়া হয়। পরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) এনএম জিয়াউল আলম। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব বলেন, খসড়া আইন অনুযায়ী, মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত পেশাজীবী হিসেবে কোনো ব্যক্তির মানসিক অসুস্থতা সম্পকের্ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা সনদ দিলেও শাস্তি পেতে হবে। এ জন্য অনধিক তিন লাখ টাকা অথর্দÐ বা এক বছর সশ্রম কারাদÐ বা উভয় দÐে দÐিত হবেন। এ ছাড়া এই আইনের অন্য কোনো বিধান বা বিধি লঙ্ঘন করলে, লঙ্ঘনে সহযোগিতা করলে বা প্ররোচনা করলে অনধিক এক লাখ টাকা অথর্দÐ বা ছয় মাস কারাদÐ বা উভয় দÐ দেয়া হবে। এ ছাড়া আজকের সভায় জাতীয় ডিজিটাল কমাসর্ নীতিমালার ২০১৮-এর খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়। আজকের বৈঠকে টি-২০ বাছাইপবের্ চ্যাম্পিয়ন হওয়া নারী ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন জানিয়েছে মন্ত্রিসভা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে