শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মা-বাবার পাশেই চিরশায়িত হলেন আল মাহমুদ

যাযাদি ডেস্ক
  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:১৫
Avj gvngy`

ভক্ত, শুভানুধ্যায়ী ও স্বজনদের শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় নিজের জন্মস্থানে চিরসমাহিত হলেন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম পুরোধা কবি আল মাহমুদ। তিতাসপাড়ের এ কবিকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে তার মা-বাবার কবরের পাশেই।

তৃতীয় ও শেষ নামাজে জানাজা শেষে রোববার বিকেল ৩টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের দক্ষিণ মোড়াইলের গোরস্তানে মা রওশন আরা ও বাবা মীর আবদুর রবের কবরের পাশেই কবির দাফন সম্পন্ন হয়।

জানাজা ও দাফন কাজে স্বজন-নিকটাত্মীয়দের পাশাপাশি অংশ নেন এলাকার সর্বস্তরের মানুষ। কবিকে চিরশায়িত করতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছুটে আসেন তার অনেক ভক্তও।

গত ৮ ফেব্রম্নয়ারি আল মাহমুদ ডিমেনশিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে তাকে রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ৯ ফেব্রম্নয়ারি কবিকে সিসিইউতে নেয়া হয়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে ওইদিন রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার রাতে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

শনিবার দুপুর পৌনে ১২টায় কবির মরদেহ বাংলা একাডেমিতে নেয়া হয়। সেখানে একাডেমির মহাপরিচালক কবি হাবীবুলস্নাহ সিরাজীসহ সর্বস্তরের মানুষ তার প্রতি শেষশ্রদ্ধা জানান। এরপর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে। সেখানে কবির প্রথম নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়, শ্রদ্ধা জানান ভক্ত-শুভানুধ্যায়ীরা। সেখান থেকে কবির মরদেহ নেয়া হয় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে। জাতীয় মসজিদে দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে কবিকে দাফনের জন্য তার মরদেহ নিয়ে আসা হয় গ্রামের বাড়িতে।

আল মাহমুদের প্রকৃত নাম মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ। ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে আল মাহমুদ ছিলেন বড়। স্থানীয়দের কাছে তিনি পরিচিত ছিলেন 'পিয়ারু মিয়া' নামে।

আল মাহমুদ ঢাকায় যান ১৯৫৪ সালে। সে সময় সমকালীন বাংলা সাপ্তাহিকগুলোয় লিখতে শুরু করেন তিনি। পাশাপাশি দৈনিক মিলস্নাত পত্রিকায় প্রম্নফ-রিডার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৫৫ সালে সাপ্তাহিক কাফেলার সম্পাদক হন তিনি।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী আল মাহমুদ স্বাধীন বাংলাদেশে দৈনিক গণকণ্ঠ পত্রিকায় সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। সম্পাদক থাকাকালে এক বছরের জন্য কারাবরণ করেন তিনি। ১৯৭৫ সালে তৎকালীন সরকারপ্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে শিল্পকলা একাডেমির গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের সহ-পরিচালক হিসেবে চাকরি দেন। দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনের পর তিনি বিভাগটির পরিচালক হন। পরিচালক হিসেবে ১৯৯৩ সালে সেখান থেকে তিনি অবসরে যান।

আল মাহমুদ বাংলা সাহিত্যে খ্যাতি লাভ করেছেন তার 'সোনালী কাবিন' কাব্যের মাধ্যমে। তার উলেস্নখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে 'লোক লোকান্তর', 'কালের কলস', 'মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো', 'আরব্য রজনীর রাজহাঁস', 'অদৃশ্যবাদীদের রান্নাবান্না', 'দিনযাপন, দ্বিতীয় ভাঙন', 'নদীর ভেতরের নদী'।

সাহিত্যাঙ্গনে অনন্য অবদানের জন্য আল মাহমুদ বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, একুশে পদক, জয় বাংলা পুরস্কার, হুমায়ুন কবীর স্মৃতি পুরস্কার, জীবনানন্দ স্মৃতি পুরস্কার, কাজী মোতাহার হোসেন সাহিত্য পুরস্কার, ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার, নাসিরউদ্দীন স্বর্ণপদক, ভানুসিংহ সম্মাননা পদক ও লালন পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<37249 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1