শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ফসলের মাঠে শিলাবৃষ্টির তান্ডব

kwbevi w`bMZ ivZ †_‡K †iveevi mKvj ch©šÍ †_‡g †_‡g wewfbœ †Rjvq e„wó nq| †iveevi †fv‡i ivRkvnx I bv‡Uv‡i Ges mKv‡j wm‡jU I nweMÄmn K‡qKwU †Rjvq e¨vcK wkjve„wó nq
যাযাদি ডেস্ক
  ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:১৪
†iveevi †fv‡i †`‡ki K‡qKwU †Rjvq e¨vcK wkjve„wó‡Z †X‡K hvq dm‡ji gvVmn iv¯ÍvNvU| wkjv¯Í‚‡ci G QwewU bv‡Uvi †_‡K †Zvjv Ñhvhvw`

ফাগুনের প্রথম সপ্তাহে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ঝড়ো হাওয়া। সেই সঙ্গে ছিল ব্যাপক শিলাবৃষ্টি। এদিন শিলাবৃষ্টি যেন তান্ডব চালিয়েছে ফসলি ক্ষেতে।

শনিবার দিনগত রাত থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত থেমে থেমে বিভিন্ন জেলায় বৃষ্টি হয়। রোববার ভোরে রাজশাহী ও নাটোরে এবং সকালে সিলেট ও হবিগঞ্জসহ কয়েকটি জেলায় ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়। শিলার আঘাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ফসলের।

আমাদের প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো খবর:

নাটোর: নাটোরের নলডাঙ্গা ও সিংড়া উপজেলায় ব্যাপক ঝড়সহ শিলাবৃষ্টি হয়েছে। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে এ শিলাবৃষ্টি হয়। প্রায় ১০ মিনিট স্থায়ী এ শিলাবৃষ্টিতে ঘরবাড়ির টিনের চালাসহ ফসল ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

নলডাঙ্গা উপজেলার পিপরুল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জানান, তার ইউনিয়নের পিপরুল, পাটুল, হাপানিয়া, ভুষণগাছা, আচড়াখালি, কালিগঞ্জ, ঠাকুরলক্ষ্ণীকোলসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। শিলায় ঘরের চালা ফুটো হয়ে গেছে। ভুট্টা, পেয়াজ, রসুন, গম, ধানসহ রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষকরা কীভাবে এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠবেন সেটা এখন চিন্তার বিষয়।

খাজুরা ইউপি চেয়ারম্যান জানান, তার ইউনিয়ের করেরগ্রাম, গোয়ালঘাট, বামুনগ্রাম,হাটবিলা, পারবিশাসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গত ২০ বছরের মধ্যে এত শিলাবৃষ্টি হয়নি।

নাটোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. রফিকুল ইসলাম জানান, শিলাবৃষ্টিতে গম, ভুট্টা, পেয়াজ বেশ আক্রান্ত হয়েছে। তবে ধানের কোনো ক্ষতি হবে না। ফসলের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে খোঁজ খবর নিচ্ছেন। বিস্তারিত পরে জানানো সম্ভব হবে।

রাজশাহী: রাজশাহীতে ভোর ৪টা ৪০ মিনিট থেকে ৫টা ১৮ মিনিট পর্যন্ত শিলাবৃষ্টি হয়। এসময় বজ্রপাতও হয়।

শিলায় আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আর বৃষ্টি শুরুর পর থেকেই পুরো মহানগর এলাকার বিদু্যৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। যা স্বাভাবিক হতে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সময় লাগে।

ভোরে শিলাবৃষ্টির পর বিদু্যৎহীন মহানগরে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে বিদু্যৎ না থাকায় স্থানীয় পত্রিকাগুলো প্রকাশে সকাল হয়ে যায়।

শিলাবৃষ্টির আঘাতে রাজশাহীর গোদাগাড়ী, তানোর, পবা, পুঠিয়া, চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় আমের মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে মুকুল ঝরে পড়েছে। তবে আমের মুকুলের ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা না গেলেও এ ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা সম্ভব নয় বলে দাবি করেছেন স্থানীয় আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার ভায়ালক্ষ্ণীপুর ইউনিয়নের রায়পুর এলাকার আম ব্যবসায়ী শামসুল হক জানান, আজকের শিলাবৃষ্টির আঘাতে আমের মুকুল ঝরে পড়ায় চরম লোকসান গুণতে হবে তাদের। আম গাছে মুকুল যে পরিমাণ এসেছিল, তাতে অন্যান্য বছরের লোকসান অনেকটা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হতো। কিন্তু আজকের শিলাবৃষ্টিতে তাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে।

সিলেট: সকালে সিলেটের কোনো কোনো স্থানে বজ্রবৃষ্টির সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। শিলাবৃষ্টির কারণে গাছ গাছালি থেকে আমের মুকুল কিছুটা হলেও ঝরেছে।

আবহাওয়া অধিদফতর সিলেটের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাইদ আহমদ চৌধুরী বলেন, বলা চলে, এ বৃষ্টির মধ্য দিয়ে শীতকে বিদায় জানানো হলো। সকালে বজ্রবৃষ্টির সঙ্গে আধা ইঞ্চি আকারের শিলা পড়েছে।

তিনি বলেন, সিলেটের বিভিন্ন স্থানে সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এর আগে ভোর ৬টার পর শিলাবৃষ্টিও হয়। এতে অন্যান্য দিনের তুলনায় তাপমাত্রাও খানিকটা হ্রাস পেয়েছে।

সকাল পৌনে ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সিলেটে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হয়। যদিও আবহাওয়া অধিদফতর আগেই শনিবার (১৬ ফেব্‌রুয়ারি) ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলেছে, দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী লঘুচাপের কারণে সিলেটসহ সাতটি বিভাগে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা সদরে সকাল ৭টা থেকে টানা ২৫ মিনিট শিলাবৃষ্টি হয়েছে।

উপজেলার গরীব হোসেন মহলস্নার বাসিন্দা তৌহিদুর রহমান পলাশ জানান, ব্যাপক শিলাবৃষ্টিতে আমের মুকুল ঝরে যাওয়াসহ বিভিন্ন সবজির ক্ষতি হয়েছে। তবে বোরো ধানের তেমন ক্ষতি হয়নি।

জাতুকর্ণপাড়া এলাকার কৃষক তৌফিক মিয়া জানান, বোরো ফসল রোপণ মাত্র শেষ হয়েছে। এখন শিলাবৃষ্টিতে তেমন একটা ক্ষতি হবে না। তবে কিছুদিন পরে যদি আবার শিলাবৃষ্টি হয় তাহলে ক্ষতি হবে।

বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামুন খন্দকার বলেন, ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হলেও তেমন ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। কোথাও ক্ষতি হয়েছে কি না খোঁজ নেয়া হচ্ছে।

কুষ্টিয়া ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট জানান, কুষ্টিয়ার মিরপুরে শিলাবৃষ্টিতে বিভিন্ন ফসলসহ ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। মাঠের পর মাঠ তামাক নষ্ট হয়ে গেছে। এতে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার হাজারো কৃষক।

এছাড়া আবুরী-মাগুরা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষের টিনের চালা ভেঙে গেছে। সেইসঙ্গে ফুটো হয়ে গেছে ২০-২৫টি বাড়ির টিনের চালা।

রাঙামাটি: রাঙামাটির দুর্গম বাঘাইছড়ি উপজেলায় শিলাবৃষ্টি হয়েছে। রোববার (১৭ ফেব্রম্নয়ারি) দুপুর ২টার দিকে এ শিলাবৃষ্টি হয়। প্রায় ১০ মিনিটের এ শিলাবৃষ্টির কারণে রবি ফসল বিশেষ করে আম ও লিচুর মুকুলের ক্ষতি হতে হয়েছে।

রাঙামাটি শহরে দুপুরে কয়েক মিনিট গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়েছে। আকাশ মেঘাছন্ন রয়েছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কাপ্তাই উপজেলায় মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি।

বাঘাইছড়ি উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তোফায়েল আহম্মেদ জানান, উপজেলা শহরে বৃষ্টি হলেও শিলার আকার ছোট ছিল। তবে উপজেলার আমতলী ইউনিয়ন, লাইল্যাঘোনাসহ অন্যান্য এলাকাগুলোতে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ এখনও নির্ণয় করা যায়নি। ইউনিয়ন পর্যায়ের কৃষি সহকারী কর্র্মতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সোমবারের মধ্যে ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে বলা যাবে বলে জানান তিনি।

গৌরীপুর: ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সহনাটি ইউনিয়নে শনিবার দিনগত রাতে বয়ে যাওয়া ঝড়ে তিন গ্রামের প্রায় অর্ধশত ঘর-বাড়ির ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়ে ঘর-বাড়ির চালা-বেড়া উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজন বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছেন।

স্থানীয় নাগরিক সোহরাব হোসেন ও আল আমিন পিন্টু জানান, শনিবার দিনগত রাত সাড়ে ৩ টার দিকে উলেস্নখিত ইউনিয়নের সরিষাহাটি, ভাঙ্গুরহাটি ও গিধাঊষা গ্রামের ওপর দিয়ে শিলাবৃষ্টিসহ প্রচন্ড বেগে ঝড় বয়ে যায়। এতে সরিষাহাটি গ্রামের আব্দুল মান্নান, জয়নাল ফকির, শামীম, ভাঙ্গুরহাটি গ্রামের আব্দুল হামিদ, আবুল কাশেম, সাদ্দাম, আবু তাহের, শাহজাহান, রিপন মিয়া, পাভেল মিয়া, খোকন মিয়া, মঞ্জুরুলসহ আরো অনেকের ঘরের চালা-বেড়া উড়ে যায়। এছাড়া গিধাঊষা গ্রামের মসজিদের চালাও বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে গেছে।

সহনাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান জানান, ঝড়ে তিন গ্রামে প্রায় অর্ধশত ঘর-বাড়ির ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরেজমিনে ঘুরে ঘরে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার লুৎফুন্নাহার জানান, ঝড় ও শিলা বৃষ্টিতে ওই এলাকায় ফসলের তেমন কোনো ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<37248 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1