শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

নয় বছরে বিএনপির ৫০০ নেতা-কমীর্র খেঁাজ নেই, দাবি ফখরুলের

যাযাদি রিপোটর্
  ১৩ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

বিএনপির মহাসচিব মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, ২০০৯ সালের পর বিভিন্ন সময় বিএনপির নিখেঁাজ হওয়া ৫০০ নেতা-কমীর্র খেঁাজ পাওয়া যাচ্ছে না। এ ছাড়া ১০ হাজারের বেশি নেতা-কমীের্ক হত্যা করা হয়েছে।

রাজধানীর ঢাকার একটি পঁাচ তারকা হোটেলে বৃহস্পতিবার বিকালে একটি গোলটেবিল আলোচনায় মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ অভিযোগ করেন। তিনি বিদেশি ক‚টনীতিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘বাংলাদেশে কী হচ্ছে নোট করুন।’

‘রাইট অব লাইফ, আ ফার ক্রাই ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে বিএনপি। এতে ২০০৯ সালের জুন থেকে চলতি ২০১৮ সালের এখন পযর্ন্ত দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরতে এই গোলটেবিলের আয়োজন করা হয়।

দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরার জন্য অনুষ্ঠানে বিএনপি বিভিন্ন দেশের ক‚টনীতিকদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। গোলটেবিল আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মানবাধিকারবিষয়ক সেক্রেটারি মাইক ক্রেমার, ফ্রান্স দূতাবাসের উপপ্রধান জ্যঁ-পিয়েরে পঁশে, ভারতীয় ক‚টনীতিক শান্তনু মুখাজীর্সহ কানাডা, যুক্তরাজ্য, জামাির্ন, সুইডেন, পাকিস্তান ও ইরানের ক‚টনীতিকেরা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের প্রতিনিধিও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিভিন্ন দেশের ক‚টনীতিক ও সংস্থার প্রতিনিধিদের বলেন, ‘আমি আন্তজাির্তক সম্প্রদায়ের কাছে অনুরোধ জানাব, বাংলাদেশে এখন কী হচ্ছে তা নোট করুন। আমরা একটি গণতান্ত্রিক জাতি। বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী করি। আমি মনে করি বিএনপিকে ছাড়া কোনো নিবার্চন জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না।

বিরোধী দলের ওপর সরকারি ‘নিপীড়নের’ পরিসংখ্যান তুলে ধরে মিজার্ ফখরুল বলেন, ‘আজকে শুধু এনফোসর্ ডিজএপিয়ারেন্স (গুম) নয়, আমাদের হিসেবে পঁাচ শতাধিক নেতা হারিয়ে গেছেন, খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের হিসেবে ১০ হাজারের অধিক নেতা-কমীের্ক রাজনৈতিকভাবে হত্যা করা হয়েছে। কিছুদিন আগে পযর্ন্ত সারাদেশে আমাদের নেতাদের বিরুদ্ধে ৭৮ হাজার মামলা করা হয়েছে। ১৮ লাখ মানুষকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।’

বিএনপির মহাসচিবের বক্তব্যের আগে অনুষ্ঠানে একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়। যেখানে বিভিন্ন সময় বিএনপির গুম-খুন-হত্যা ও নিযার্তনের শিকার পরিবারের সদস্যদের আহাজারি ও বক্তব্য দেখানো হয়। এ ছাড়া ‘রাইট টু লাইফ’ নামের একটি পুস্তিকাও অনুষ্ঠানে বিতরণ করা হয়।

প্রামাণ্যচিত্র দেখানোর পর বিএনপির মহাসচিব ফখরুল বলেন, এই প্রামাণ্যচিত্র দেখানোর পর তো আর কিছু বলার থাকে না। এ ছাড়া প্রতিদিন সংবাদপত্র ও টেলিভিশনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র তো দেখা যাচ্ছে। দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের চিত্র নিত্য-নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দঁাড়িয়েছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, কিন্তু দুভাের্গ্যর ব্যাপার, এসব সরকারের কানে ঢুকছে না। এই সরকার ক্ষমতার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেছে। এ কারণে নিয়ম-কানুন কোনো কিছু খেয়াল করছে না। সংবিধান লঙ্ঘন করছে। গতকালও একটি সংবাদ সম্মেলন করে বলা হয়েছে, গত ১১ দিন থেকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার পরিবারের সদস্য ও দলের কাউকে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। এটি স্পষ্টত সংবিধানের লঙ্ঘন।

ঐক্যের কথা জানিয়ে অনুষ্ঠানের সভাপতি ফখরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনা বাস্তবায়ন করতে হলে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। এ জন্য জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা গেলে ‘দানবীয় শক্তি’ প্রতিহত করা সম্ভব হবে। এই সরকার ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নষ্ট করেছে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিবার্চন করে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বতর্মান সরকার ‘স্বৈরশাসকের’ মতো নিমর্ম হয়ে ওঠেছে। জনগণ এই ‘ স্বৈরাচার’ থেকে মুক্তি চায়। দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই। আইনের শাসন নেই। এই অবস্থায় জনগণ তাদের সরকার চায়। জনগণ একটি অংশগ্রহণমূলক নিবার্চন চায়। তিনি বলেন, ‘জনগণ তাদের সরকার চায়। এমন স্বৈরাচার সরকার জনগণ চায় না। এই দুঃশাসনের অবসান চায় জনগণ।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিষয়ে সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। জামিন পাওয়া একজন মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। অথচ খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন নাকচ করা হচ্ছে এবং বাতিল করা হচ্ছে। এভাবে দেশে দিনের পর দিন মানবাধিকারের ঘটনা ঘটে চলেছে।

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, মওদুদ আহমদ, মিজার্ আব্বাস, আবদুল মঈন খান, গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশে ব্যাংকের সাবেক গভনর্র সালেহউদ্দিন আহমেদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত সিরাজুল ইসলাম, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন, শওকত মাহমুদ প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<3294 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1