বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

অসুস্থ হয়ে পড়েছেন লতিফ সিদ্দিকী, মেডিকেল বাের্ড

স্টাফ রিপোটার্র টাঙ্গাইল
  ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:৫৬
নিবার্চনী প্রচারণায় হামলার প্রতিবাদে জেলা প্রশাসকের কাযার্লয়ের সামনে তৃতীয় দিনের মতো মঙ্গলবার অনশনরত টাঙ্গাইল-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রাথীর্ আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করছেন চিকিৎসক Ñযাযাদি

প্রতিক‚ল আবহাওয়া উপেক্ষা করে জেলা প্রশাসকের কাযার্লয়ের সামনে আমরণ অনশনের তৃতীয় দিন মঙ্গলবার টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনের স্বতন্ত্র প্রাথীর্ আবদুল লতিফ সিদ্দিকী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার চিকিৎসায় জেলা রিটানির্ং কমর্কতার্র নিদেের্শ মঙ্গলবার দুপুরে ৮ সদস্যের মেডিকেল বোডর্ গঠন করা হয়েছে। মেডিকেল বোডর্ সাবর্ক্ষণিক লতিফ সিদ্দিকীর শারীরিক অবস্থার খেঁাজ-খবর রাখছেন। জানা গেছে, মঙ্গলবার ভোরে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলে তঁাবুর ভেতর পানি পড়তে থাকায় আমরণ অনশনরত লতিফ সিদ্দিকীকে জেলা প্রশাসকের কাযার্লয়ের বারান্দায় নেয়া হয়। সেখানে তিনি অসুস্থ বোধ করেন। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটানির্ং কমর্কতার্ মো. শহীদুল ইসলাম সিভিল সাজর্নকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নিদের্শ দেন। সিভিল সাজর্ন ডা. মো. শরীফ হোসেন খান নিদের্শনা পেয়ে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের তত্ত¡াবধায়ক ডা. নারায়ণ চন্দ্র সাহাকে জানান। পরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের কাডির্ওলজি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মোফাজ্জল হোসেনকে প্রধান করে ৮ সদস্যবিশিষ্ট মেডিকেল বোডর্ গঠন করা হয়। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের কাডির্ওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. মোফাজ্জল হোসেন জানান, মেডিকেল বোডর্ গঠনের পর মঙ্গলবার দুপুর পৌনে দুইটায় লতিফ সিদ্দিকীকে পরীক্ষা করেছে। দুপুরে তাকে অক্সিজেন দেয়া হয়েছে। তারা লতিফ সিদ্দিকীকে সাবর্ক্ষণিক পযের্বক্ষণে রেখেছেন। ওষুধ দেয়া হলেও তিনি খাচ্ছেন না। ফলে শরীর ক্রমেই দুবর্ল হয়ে পড়ছে। এ সময় লতিফ সিদ্দিকী চিকিৎসকদের বলেন, ‘আমি শারীরিকভাবে দুবর্ল, মানসিকভাবে দুবর্ল নই। আমার দাবি মেনে নেয়া হোক, না হলে মরে গেলেও অনশন ভাঙবো না’। আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর সহধমির্ণী ও সাবেক সংসদ সদস্য লায়লা সিদ্দিকী বলেন, মঙ্গলবার ওনার (লতিফ সিদ্দিকীর) ৮২তম জন্মদিন। জন্মদিনেও তিনি অনশন করছেন। ওনার হাটের্ আগেই দুইটা রিং পড়ানো আছে। উচ্চ রক্তচাপসহ আরও অসুখ রয়েছে। ওনি তিন বেলা খাবারের আগে-পরে নিয়মিত ওষুধ খান। অনশন করার পর থেকে কিছুই খাচ্ছেন না। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর। তার গাড়ি বহরে হামলা করায় তিনি ওসির অপসারণ চেয়ে তিনদিন ধরে আমরণ অনশন করছেনÑ এটা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের প্রতিটি মানুষের জন্য অত্যন্ত লজ্জার! মঙ্গলবার বিকালে জেলা প্রশাসকের কাযার্লয়ের বারান্দা থেকে লতিফ সিদ্দিকীকে পাশের একটি খোলা টিনশেডে স্থানান্তর করা হয়। উল্লেখ্য, গত রোববার (১৬ ডিসেম্বর) দুপুরে টাঙ্গাইলের কালিহাতীর গোহালিয়াবাড়ি ইউনিয়নের সরাতৈল-বল্লভবাড়ি এলাকায় স্বতন্ত্র প্রাথীর্ আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর কমীর্-সমথর্কদের ওপর স্থানীয় সংসদ সদস্য হাছান ইমাম খানের কমীর্-সমথর্করা হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করে। এতে লতিফ সিদ্দিকীর ব্যক্তিগত গাড়িসহ চারটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রতিবাদে রোববার দুপুর পৌনে তিনটার দিকে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি নিয়ে এসে তিন দফা দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাযার্লয় ও রিটানির্ং কমর্কতার্র কাযার্লয়ের সামনে অবস্থান ধমর্ঘট শুরু করেন লতিফ সিদ্দিকী। দাবিগুলো হচ্ছেÑ কালিহাতী থানার ওসি মীর মোশারফ হোসেনকে প্রত্যাহার, অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও সরকারদলীয় প্রাথীর্র নিবার্চন পযর্ন্ত আর কোন সহিংসতামূলক কাযর্কলাপ করবে না মমের্ রিটানির্ং অফিসারের কাছে মুচলেকা প্রদান। অনশনের দ্বিতীয় দিন সোমবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে রিটানির্ং অফিসারের কাছে দেয়া লিখিত ঘোষণায় তিনি বলেন, ‘আমার অনশন ধমর্ঘটের ১৮ ঘণ্টা অতিক্রান্ত, কিন্তু কোনো প্রতিকার না পেয়ে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম একই সঙ্গে আমরণ অনশন চালিয়ে যাওয়ার’। ঘোষণায় তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমার যদি কোন ক্ষতি হয়, সে জন্য নিবার্চন কমিশন দায়ী থাকবে বলে ঘোষণা দিচ্ছি’।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে