শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শেষ পযর্ন্ত মাঠে থাকার চেষ্টা করব : ফখরুল

যাযাদি ডেস্ক
  ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:০০
আপডেট  : ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮, ০০:২২
মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বিএনপির মহাসচিব মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘খানাখন্দে ভরা অসমতল মাঠে নিবার্চন করতে হচ্ছে। আমাদের ওপর সংঘাত-হামলা-মামলা হচ্ছে। একদিকে সরকার রাষ্ট্রযন্ত্র নিয়ে আক্রমণ করছে, অন্যদিকে আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এখনো নিবার্চনের মাঠে রয়েছি।’ শনিবার সকালে বগুড়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ফখরুল বলেন, ‘শেষ পযর্ন্ত আমরা মাঠে থাকার চেষ্টা করব। কারণ, জনগণ আমাদের সঙ্গে রয়েছেন। ৩০ ডিসেম্বর ভোটবিপ্লবের মাধ্যমে জনগণই এ দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবেন।’ ২০-দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে বগুড়া শহরের এডওয়াডর্ পৌর পাকের্ উডবানর্ পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলেন হয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনে নিজ জেলা ঠাকুরগঁাওয়ের পাশাপাশি বগুড়া-৬ (সদর) আসনেও প্রাথীর্ হয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে মিজার্ ফখরুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রযন্ত্র আর প্রশাসনকে ব্যবহার করে সরকার আবারও একতরফা নিবার্চনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে চায়। সারা দেশে এখন ভয়াবহ যুদ্ধাবস্থা। নিবার্চনের কোনো সুষ্ঠু পরিবেশ নেই। কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নেই। সব দলের জন্য সমতল ও সমান্তরাল মাঠ নেই। রাজনীতির ইতিহাসে নজিরবিহীন অসম নিবার্চন হচ্ছে। মিজার্ ফখরুল বলেন, ‘দু-এক দিনের মধ্যে ইসিতে গিয়ে সারাদেশে মামলা-হামলার পরিস্থিতি তুলে ধরা হবে। নিবার্চন কমিশন (ইসি) একটা “ঠুঁটো জগন্নাথে” পরিণত হয়েছে। আমার ওপর হামলা হয়েছে। ড. কামাল হোসেন, আ স ম আবদুর রবের মতো নেতার ওপর হামলা হয়েছে। ইসিতে নানাভাবে অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি। নিবার্চন কমিশন অসহায়। তারা সরকারের নিদেের্শর বাইরে কোনো কাজ করতে পারছে না। সরকারি সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের নিদের্শ মানছে না। কমিশন নিজেদের অসহায়ত্বের কথা স্বীকার করেছে।’ মিজার্ ফখরুল বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সরকারের হয়ে কাজ করছে, সরকারের পক্ষে ভোট চাইছে। এত কিছুর পরও আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে আছি। শেষ পযর্ন্ত মাঠে থাকব। কারণ, ৩০ ডিসেম্বর ভোটকেন্দ্রে উত্তাল জনতা সব অপশক্তি রুখে দেবে। সেদিন ভোটবিপ্লব সূচিত হবে।’ নিবার্চনের অনুকূল পরিবেশ না থাকলে শেষ পযর্ন্ত ভোটের মাঠে থাকার কৌশল জানতে চান সাংবাদিকেরা। মিজার্ ফখরুল ইসলাম বলেন, সরকার ত্রাস সৃষ্টি করে, ভয় দেখিয়ে জনগণকে ভোটদানে বিরত রাখতে চায়। বিএনপির কমীের্দর কৌশল হবে জনগণের কাছে যাওয়া। ভীতি দূর করে সাহস জুগিয়ে জনগণকে ভোটকেন্দ্র পযর্ন্ত নিয়ে যাওয়া। জনগণ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে ভোটবিপ্লব হবে। স্বৈরতন্ত্রের পতন হবে, গণতন্ত্র ফিরে আসবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মিজার্ ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো গণতান্ত্রিক দেশে গণতন্ত্র বিপন্ন হলে, স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিলে বিশ্বের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর দায়িত্ব রয়েছে, বিপন্ন দেশটিতে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে ভূমিকা রাখা। বিশ্বের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর কাছেও আমরা সেই জোরালো ভূমিকা রাখার বিষয়টিই প্রত্যাশা করি।’ সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বগুড়ায় বিএনপিতে কোনো কোন্দল নেই। তিনি দলীয় প্রধানের অবতর্মানে সেখানে ধানের শীষের প্রাথীর্ নন, তার প্রতিনিধি হয়ে লড়ছেন। দলের প্রতিষ্ঠাতার জন্মভূমিতে নিবার্চনী প্রচারণায় নেমে ধানের শীষের প্রতি উত্তাল জনতার বঁাধভাঙা সমথর্ন পাচ্ছেন। কোনো অপশক্তিই জনতার এ বিপ্লব রুখতে পারবে না। ফখরুল বলেন, ‘নিবার্চন তদারকির জন্য আমরা বিচারিক ক্ষমতাসহ সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি করেছিলাম। কিন্তু নিবার্চনে স্ট্রাইকিং ফোসর্ হিসেবে সেনা মোতায়েন করা হচ্ছে। এটা খুব একটা “ইফেক্টিভ” হবে না।’ সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুর রহমান মান্না ছাড়া বগুড়ার অন্য ছয়টি আসনে ধানের শীষের প্রাথীর্রা ছিলেন। এ ছাড়া ছিলেন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও বগুড়া পৌরসভার মেয়র এ কে এম মাহবুবর রহমান, জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীনসহ স্থানীয় নেতারা। পরে মিজার্ ফখরুল ইসলাম আলমগীর শহরতলির সাবগ্রাম বাজার থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো ধানের শীষের প্রচারণা শুরু করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে