মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উন্নয়ন ও সমতাভিত্তিক বৈষম্যহীন, দুনীির্তমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের ইশতেহার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ওয়াকার্সর্ পাটির্।
এ ইশতেহারে রাষ্ট্র, প্রশাসন ও অথর্নীতির সবর্স্তরে দুনীির্ত রোধ, ব্যাংক জালিয়াতি, অথর্ পাচার ও ঋণ খেলাপি রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বেকার যুবকদের নিবন্ধিত করে কমর্সংস্থান সাপেক্ষে বেকার ভাতা প্রদান করাসহ ১৩ দফা লক্ষ্য তুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে ২১ দফা কমর্সূচি দেয়া হয়েছে।
রাজধানীর তোপখানা রোডে অবস্থিত ওয়াকার্সর্ পাটির্র কাযার্লয় চত্বরে বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলন করে একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের এ ইশতেহার উপস্থাপন করেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ওয়াকার্সর্ পাটির্র সভাপতি ও ঢাকা-৮ আসনে মহাজোট মনোনীত প্রাথীর্ রাশেদ খান মেনন, পাটির্র পলিট ব্যুরো সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, নুরুল হাসান, মাহমুদুল হাসান মানিক, ড. সুশান্ত দাস, হাজেরা সুলতানা, কামরূল আহসান, মুস্তফা লুৎফুল্লাহ প্রমুখ।
কালো কোটে সোনালী রঙের নৌকার ব্যাজ পরে সংবাদ সম্মেলন আসা মেনন বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনকে কেন্দ্র করে সারাদেশ উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। এ উৎসবমুখর পরিবেশে কিছু সহিংস ঘটনা ঘটেছে। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের দু’জন কমীর্ নিহত হয়েছেন বিএনপির আক্রমনে। বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি কমীর্রা হয় নিজেদের কারণে অথবা সাধারণভাবে আহত হয়েছে। এখনও পযর্ন্ত তারা সেই সন্ত্রাসী পথটাকে বজর্ন করেনি।
তিনি বলেন, দেশবাসীর জন্য এই নিবার্চন খুবই গুরুত্বপূণর্। ১৪ দলীয় জোটের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে অভ‚তপূবর্ উন্নয়ন করেছে তার ধারাবাহিকতা রক্ষা, না কি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলের সেই হত্যা, ধষর্ণ, খুন, হাওয়া ভবনের লুটপাটে ফিরে আসবে তা এই নিবার্চনের মাধ্যমে নিধাির্রত হবে।
বিএনপি নিবার্চনে শেষ পযর্ন্ত থাকবে- এমন আশা ব্যক্ত করে মেনন বলেন, এবারের নিবার্চনে সকল নিবন্ধিত দল এবং অনিবন্ধিত দল নিবার্চনে অংশগ্রহণ করছে। এটা অত্যন্ত ইতিবাচক। আমি বলবো এটা ১৪ দলীয় নেত্রীর বিজয়। কারণ- বিএনপি, জামায়াত এবং পরবতীর্কালে ড. কামালের নেতৃত্বে যে ঐক্যফ্রন্ট হয়েছে তাদের সাত দফা দাবির মধ্যে ছিল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিবার্চন করতে হবে। শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে, নিবার্চনে আমিের্ক ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দিতে হবে। একটি পযাের্য় তারা প্রধান নিবার্চন কমিশনের পদত্যাগ দাবি করেছিল। আজকে তারা পরিপূণর্ সরে না এলেও নিবার্চনী কাজে ঝঁাপিয়ে পড়েছে। আমরা আশা করব, তারা এই নিবার্চনে শেষ পযর্ন্ত থাকবেন।
এবারের নিবার্চনে সুষ্ঠ পরিবেশ আছে কিনা? সাংবাদিকদের এমন একটি প্রশ্নের উত্তরে ওয়াকার্সর্ পাটির্র সভাপতি বলেন, এই নিবার্চনকেন্দ্রিক এখনো যা ঘটেছে তা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে নিবার্চন কমিশন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছে। জনগণ যখন নেমে যায়, নিবার্চন যখন উৎসবে রূপ নেয়, তখন এ ধরনের সহিংসতা নিবার্চনের পরিবেশকে খুব বেশি ক্ষতি করতে পারে না। আমি আশা করব এই নিবার্চন নিবির্ঘœ ও শান্তিপূণর্ হবে।
ব্যাংক জালিয়াতি ও ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সংক্রান্ত আরেক প্রশ্নের উত্তরে মেনন বলেন, ঋণ নিয়ে ফেরত না দেয়া, মিথ্যা কাগজ দিয়ে ঋণ নেয়া ইত্যাদি ঘটনা আছে। আপনারা লক্ষ্য করেছেন ব্যাংক জালিয়াতির কারণে ইতোমধ্যে কতগুলো গ্রæপকে যেমন- বিসমিল্লা গ্রুপ, ক্রিসেন্ট গ্রুপ, ডেসটিনি, হলমাকর্ এদের বিরুদ্ধে দুনীির্তর মামলা হয়েছে এবং তারা সবাই জেলে আছেন। এ ছাড়া যেসব ব্যাংকে এসব বিষয় থাকছে তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আমরা জোর দিতে চাই ব্যাংক ব্যবস্থার আসু পরবতর্ন করা। অথর্মন্ত্রী একটি ব্যাংক কমিশন করার কথা বলেছিলেন, যেটা এখনো হয়নি। আমরা সেই ব্যাংক কমিশন গঠন করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।